রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের ভোটাধিকারসহ বিভিন্ন দাবিতে প্রশাসন ভবন অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।

সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১২টায় রাবি প্রশাসন ভবনের প্রধান ফটক অবরোধ করে এ বিক্ষোভ করেন তারা।

আরো পড়ুন:

রাকসু নির্বাচন: পঞ্চমবারের মত মনোনয়ন বিতরণের সময় পরিবর্তন

রাকসু নির্বাচন: ডোপ টেস্টের জন্য ৫৭০ প্রার্থীর স্যাম্পল সংগ্রহ

এ সময় ‘চাঁদাবাজ আর রাজাকার, মিলেমিশে একাকার’, ‘জিয়ার সৈনিক, এক হও লড়াই করো’, ‘ছাত্রদলের অঙ্গিকার, প্রথম বর্ষের ভোটাধিকার’, ‘ছাত্রদলের অঙ্গিকার, নিরাপদ ক্যাম্পাস’, ‘ভোট আমার অধিকার, তুমি কে বাদ দেওয়ার’, ‘রাকসু ফি দিয়েছি, ভোটার হতে চেয়েছি’, ‘ক্যাম্পাসে হামলা কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘প্রথম বর্ষের ভয় নেই, রাজপথ ছাড়ি নাই’, ‘নকিব-ফকির কমিশন, মানি না মানবো না’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায় তাদের।

শাখা ছাত্রদলের প্রচার সম্পাদক মো.

আর-রাফি খান বলেন, “আমরা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল দৃঢ়ভাবে জানাতে চাই, ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের নবীন শিক্ষার্থীদের রাকসুতে ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে হবে। একইসঙ্গে নারী শিক্ষার্থীদের হেনস্তা ও পরিকল্পিতভাবে মব সৃষ্টি করে শিক্ষাঙ্গনের পরিবেশ নষ্টের যেকোনো অপচেষ্টা আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করব।”

ছাত্রদলের সহ-সভাপতি জান্নাতুন নাঈম তুহিনা বলেন, “আমরা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল নেত্রীরা বারবার সাইবার আক্রমণের শিকার হচ্ছি। গতকাল আমাদের যৌক্তিক আন্দোলনে হামলা চালিয়ে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনকে জাস্টিফাই করা হয়েছে। পরবর্তীতে সারারাত আমাদের সাইবার বুলিং করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আচরণে স্পষ্ট বোঝা যায়—তারা নারী নেতৃত্বকে সামনে আসতে দিতে চায় না। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই এবং এর বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান ঘোষণা করছি।”

শাখা ছাত্রদলের সভাপতি সুলতান আহমেদ রাহী বলেন, “গতকাল আমরা রাকসু কার্যালয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালনকালে যে ঘটনা ঘটেছে, তা ছিল সম্পূর্ণ পরিকল্পিত। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নাশকতা ও ছাত্রদলের ওপর হামলা করার উদ্দেশ্যে শিবির, বাকসাস ও সমন্বয়ক নামধারী একটি সংগঠনকে ১৫ লাখ টাকা প্রদান করেছে আমাদের ওপর হামলা করার জন্য। এ ঘটনায় আমাদের ১০ জন নেতা-কর্মী হাসপাতালে ভর্তি আছেন এবং নারী শিক্ষার্থীদের নানাভাবে হেনস্তা করা হয়েছে।”

তিনি বলেন, “২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের নবীন শিক্ষার্থীদের সবাইকে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। কেননা এটি তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার, আর এই অধিকার থেকে কাউকে বঞ্ছিত করার ক্ষমতা কারো নেই। আমরা শিবিরসহ সব রাজনৈতিক দলকে বলতে চাই—আমরা তো প্রশাসনের অন্যায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছিলাম, তাহলে কেন আপনারা শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিলেন? আমাদের সহজ দাবি আদায়ের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত করে আমরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব।”

এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল ইউনিটের শতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছ ত রদল ছ ত রদল র বর ষ র আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

যশোরে জিআই পণ্য খেজুর গুড় তৈরির রস সংগ্রহে গাছ প্রস্তুতির উদ্বোধন

যশোরের ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য খেজুর গুড় তৈরির রস সংগ্রহের জন্য খেজুরগাছ প্রস্তুতের (রস সংগ্রহের উপযোগী করা) আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়েছে। আজ রোববার দুপুরে চৌগাছা উপজেলার হায়াতপুর গ্রামে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহিনুর আক্তার।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর যশোরের উপপরিচালক মোশাররফ হোসেন বলেন, রস-গুড় সংগ্রহের জন্য গত বছরের তুলনায় এ বছর বেশি খেজুরগাছ প্রস্তুত করা হবে। এ বছর জেলায় অন্তত তিন লাখের বেশি গাছ প্রস্তুত করা হবে। যশোরে খেজুরের রস ও গুড়ের ১০০ কোটির বেশি টাকার বাজার রয়েছে। অন্তত ছয় হাজার কৃষক এই পেশায় যুক্ত।

যশোরের খেজুর গুড় জিআই পণ্য হলো যেভাবে

২০২২ সালে চৌগাছার তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (বর্তমানে যশোরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট) ইরুফা সুলতানা খেজুর গুড়ের ঐতিহ্য সংরক্ষণে খেজুর গুড়ের মেলা, গাছিদের প্রশিক্ষণ, গাছি সমাবেশ, গাছিদের সমবায় সমিতি গঠন, খেজুরগাছ রোপণ ও সংরক্ষণের উদ্যোগ নেন। একই বছর জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতির জন্য যশোরের খেজুর গুড়ের আবেদন করেন তিনি। তাঁর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৪ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি সেটি জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পায়।

শতকোটি টাকার বাজার ধরতে ব্যস্ত গাছিরা

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, যশোরের প্রায় ছয় হাজার গাছি খেজুরগাছের রস থেকে পাটালি গুড় উৎপাদনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ইতিমধ্যে খেজুরগাছ প্রস্তুতির কাজ শুরু হয়েছে। গাছ প্রস্তুতে ব্যস্ত সময় পার করছেন গাছিরা। খেজুরগাছ সংরক্ষণ, রোপণ, গাছিদের প্রশিক্ষণ, প্রণোদনাসহ নানাভাবে সহযোগিতার মাধ্যমে গুড় উৎপাদন বৃদ্ধি ও বাজার সম্প্রসারণে কাজ করছে কৃষি বিভাগ, জেলা ও উপজেলা প্রশাসন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর যশোর কার্যালয়ের তথ্যমতে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে যশোর জেলায় খেজুরগাছের সংখ্যা ২৩ লাখ ৩০ হাজার ৬৯৫টি। এর মধ্যে রস আহরণের উপযোগী গাছের সংখ্যা ৩ লাখ ৭ হাজার ১৩০টি। গাছ থেকে ৩ কোটি ৭১ লাখ ৩ হাজার লিটার রস ও ২ হাজার ৭৪২ মেট্রিক টন গুড় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। বাজারদর অনুযায়ী প্রতি লিটার রসের দাম ৩৫ টাকা ও গুড়ের কেজি ৩৪০ টাকা। সেই হিসাবে রস ও গুড়ের বাজার দর ৯৯ কোটি ৬৮ লাখ টাকা।

চৌগাছা উপজেলার চাকলা গ্রামের গাছি আবদুল কুদ্দুস বলেন, ‘আমার দাদা খেজুরগাছের রস থেকে পাটালি গুড় বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। দাদার সঙ্গে বাবাও যুক্ত ছিলেন। বাবার পেশায় আমিও যুক্ত হয়েছি। বাবা আর আমি এবার ৩০০টি খেজুরগাছ থেকে রস-গুড় তৈরির প্রস্তুতি নিচ্ছি। গতবছর ভালো দাম পেয়েছি। এবারও ভালো দাম পাব বলে আশা করি।’

গাছিরা জানান, কার্তিক মাস শুরুর সঙ্গে সঙ্গেই খেজুরগাছ ছেঁটে রস ও গুড় তৈরির প্রস্তুতি শুরু করেন তাঁরা। শীত মৌসুমে এ অঞ্চলের কৃষকদের অন্যতম আয়ের উৎস এটি। এখানকার কারিগরদের দানা পাটালি তৈরির সুনাম রয়েছে। পাটালি ও ঝোলা গুড় তৈরি ছাড়াও চাষিরা শীতের ভোরে ফেরি করে কাঁচা রস বিক্রি করেন। কাঁচা রস প্রতি মাটির ভাঁড় ১৫০-২০০ টাকা, দানা গুড় ৩৫০-৪০০ টাকা আর পাটালি প্রতি কেজি ৪৫০-৬০০ টাকায় বিক্রি হয়।

অনলাইন প্ল্যাটফর্ম কেনারহাটের উদ্যোক্তা তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘গত বছর আমাদের কাছে ভোক্তার চাহিদা ছিল সাড়ে ছয় হাজার কেজি পাটালি গুড়। সরবরাহ করতে পেরেছিলাম দুই হাজার কেজি। প্রাকৃতিক দুর্যোগ, অতিবৃষ্টি, শীত কম হওয়ায় চাহিদা অনুযায়ী পাটালি গুড় সরবরাহ করতে পারিনি। এ বছর ইতিমধ্যে অর্ডার আসতে শুরু করেছে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • লরা উলভার্ট: হিমালয়ের চূড়ায় এক নিঃসঙ্গ শেরপা
  • বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক অলিম্পিক চ্যাম্পিয়নের মৃত্যু
  • শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা
  • যশোরে জিআই পণ্য খেজুর গুড় তৈরির রস সংগ্রহে গাছ প্রস্তুতির উদ্বোধন