প্রশাসন ভবন অবরোধ করে রাবিতে ছাত্রদলের বিক্ষোভ
Published: 1st, September 2025 GMT
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের ভোটাধিকারসহ বিভিন্ন দাবিতে প্রশাসন ভবন অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।
সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১২টায় রাবি প্রশাসন ভবনের প্রধান ফটক অবরোধ করে এ বিক্ষোভ করেন তারা।
আরো পড়ুন:
রাকসু নির্বাচন: পঞ্চমবারের মত মনোনয়ন বিতরণের সময় পরিবর্তন
রাকসু নির্বাচন: ডোপ টেস্টের জন্য ৫৭০ প্রার্থীর স্যাম্পল সংগ্রহ
এ সময় ‘চাঁদাবাজ আর রাজাকার, মিলেমিশে একাকার’, ‘জিয়ার সৈনিক, এক হও লড়াই করো’, ‘ছাত্রদলের অঙ্গিকার, প্রথম বর্ষের ভোটাধিকার’, ‘ছাত্রদলের অঙ্গিকার, নিরাপদ ক্যাম্পাস’, ‘ভোট আমার অধিকার, তুমি কে বাদ দেওয়ার’, ‘রাকসু ফি দিয়েছি, ভোটার হতে চেয়েছি’, ‘ক্যাম্পাসে হামলা কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘প্রথম বর্ষের ভয় নেই, রাজপথ ছাড়ি নাই’, ‘নকিব-ফকির কমিশন, মানি না মানবো না’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায় তাদের।
শাখা ছাত্রদলের প্রচার সম্পাদক মো.
ছাত্রদলের সহ-সভাপতি জান্নাতুন নাঈম তুহিনা বলেন, “আমরা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল নেত্রীরা বারবার সাইবার আক্রমণের শিকার হচ্ছি। গতকাল আমাদের যৌক্তিক আন্দোলনে হামলা চালিয়ে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনকে জাস্টিফাই করা হয়েছে। পরবর্তীতে সারারাত আমাদের সাইবার বুলিং করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আচরণে স্পষ্ট বোঝা যায়—তারা নারী নেতৃত্বকে সামনে আসতে দিতে চায় না। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই এবং এর বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান ঘোষণা করছি।”
শাখা ছাত্রদলের সভাপতি সুলতান আহমেদ রাহী বলেন, “গতকাল আমরা রাকসু কার্যালয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালনকালে যে ঘটনা ঘটেছে, তা ছিল সম্পূর্ণ পরিকল্পিত। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নাশকতা ও ছাত্রদলের ওপর হামলা করার উদ্দেশ্যে শিবির, বাকসাস ও সমন্বয়ক নামধারী একটি সংগঠনকে ১৫ লাখ টাকা প্রদান করেছে আমাদের ওপর হামলা করার জন্য। এ ঘটনায় আমাদের ১০ জন নেতা-কর্মী হাসপাতালে ভর্তি আছেন এবং নারী শিক্ষার্থীদের নানাভাবে হেনস্তা করা হয়েছে।”
তিনি বলেন, “২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের নবীন শিক্ষার্থীদের সবাইকে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। কেননা এটি তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার, আর এই অধিকার থেকে কাউকে বঞ্ছিত করার ক্ষমতা কারো নেই। আমরা শিবিরসহ সব রাজনৈতিক দলকে বলতে চাই—আমরা তো প্রশাসনের অন্যায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছিলাম, তাহলে কেন আপনারা শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিলেন? আমাদের সহজ দাবি আদায়ের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত করে আমরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব।”
এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল ইউনিটের শতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছ ত রদল ছ ত রদল র বর ষ র আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
১০০ কোটি টাকার পাচারের অভিযোগ, জাহাঙ্গীরের নামে মামলা
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দপ্তরের সাবেক পিয়ন জাহাঙ্গীর আলম ওরফে পানি জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে ১০০ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে মামলা করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) নোয়াখালীর চাটখিল থানায় মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে এই মামলা করেছে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট।
আরো পড়ুন:
নাফিসা কামালসহ ৮ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অর্থপাচারের মামলা
সাজিদ হত্যার তদন্তে সিআইডিকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমোদন
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান জানান, প্রাথমিক অনুসন্ধানে উল্লেখযোগ্য প্রমাণ পাওয়ায় নোয়াখালীর চাটখিল থানায় জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
তিনি আরো জানান, নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার এক নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান জাহাঙ্গীর আলম জাতীয় সংসদ সচিবালয়ে দৈনিক মজুরিভিত্তিক কর্মচারী হিসেবে কাজ করতেন। পরে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর তিনি অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে স্বল্প সময়ের জন্য ‘ব্যক্তিগত সহকারী’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এই দায়িত্বই তাকে আর্থিকভাবে লাভবান করেছে মর্মে প্রাথমিক অনুসন্ধানে উঠে এসেছে।
জসীম উদ্দিন খান জানান, ২০১০ সালে জাহাঙ্গীর ‘স্কাই রি অ্যারেঞ্জ লিমিটেড’ নামে একটি কোম্পানি গঠন করে বিকাশের ডিস্ট্রিবিউশন ব্যবসা নেন। কিন্তু এর আড়ালে তিনি অসংখ্য সন্দেহজনক ব্যাংকিং কার্যক্রম করেন। কোম্পানির নামে একাধিক ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অস্বাভাবিক অঙ্কের টাকা জমা হয়, যার বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি ও ব্যবসার সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ।
সিআইডির এই কর্মকর্তা জানান, প্রতিষ্ঠানটির অ্যাকাউন্টগুলোতে ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে বিভিন্ন ব্যাংকে মোট ৫৬৫ কোটিরও বেশি টাকা লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য অংশ নগদে জমা হয়েছে দেশের নানা স্থান থেকে। এসব অর্থের উৎস অজানা এবং হুন্ডি ও মানিলন্ডারিং কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত বলে প্রাথমিক প্রমাণ মেলে।
বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দীন জানান, জাহাঙ্গীর আলম তার স্ত্রী কামরুন নাহার ও ভাই মনির হোসেনের সহায়তায় দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ অর্থ লেনদেন করতেন। জাহাঙ্গীর আলম ও তার স্ত্রী ২০২৪ সালের জুন মাসে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান এবং বর্তমানে ভার্জিনিয়ায় অবস্থান করছেন। বিদেশে তাদের বিনিয়োগ বা সম্পদ ক্রয়ের কোনো সরকারি অনুমোদন না পাওয়া গেলেও তারা যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছেন বলে প্রাথমিক অনুসন্ধানে প্রমাণ মেলে।
অনুসন্ধানে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে, জাহাঙ্গীর আলম, তার স্ত্রী কামরুন নাহার, ভাই মনির হোসেন এবং প্রতিষ্ঠান স্কাই রি অ্যারেঞ্জ লিমিটেড যৌথভাবে ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে প্রায় ১০০ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন। অপরাধের পূর্ণাঙ্গ তথ্য উদঘাটন, অপরাপর সদস্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করার স্বার্থে সিআইডির তদন্ত ও অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
ঢাকা/মাকসুদ/সাইফ