আফগানিস্তানে ভূমিকম্প: আন্তর্জাতিক সাহায্যের আবেদন তালেবানের
Published: 2nd, September 2025 GMT
ভয়াবহ ভূমিকম্পে বিপর্যস্ত আফিগানিস্তান। দেশটিতে গত রবিবারের ভূমিকম্পে ৮০০ জনেরও বেশি মানুষের প্রাণহানি এবং প্রায় তিন হাজার মানুষ আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আন্তর্জাতিক সহায়তার আবেদন জানিয়েছে তালেবান সরকার।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান।
আরো পড়ুন:
আফগানিস্তানে ভূমিকম্পে ২ শতাধিক মানুষের মৃত্যু
আফগানিস্তানে ভূমিকম্পে ২০ জনের মৃত্যু, আরো প্রাণহানির শঙ্কা
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলে পাকিস্তান সীমান্তের কাছে স্থানীয় সময় রবিবার (৩১ আগস্ট) ৬ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। এরপর থেকে অন্তত আরো তিনটি কম্পন হয়েছে। সেগুলোর মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ৫ থেকে ৫ দশমিক ২-এর মধ্যে।
তালেবান সরকারের একাধিক সূত্র গার্ডিয়ানকে জানিয়েছে, ভূমিকম্পে শত শত বাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পাকিস্তান সীমান্তবর্তী কুনার প্রদেশের নোরগাল জেলা। খাড়া উপত্যকায় নির্মিত সাধারণ মাটি ও পাথরের ঘরবাড়ির ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও অনেকে আটকা পড়ে রয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় উদ্ধার অভিযানে সহায়তার জন্য ত্রাণ সংস্থাগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে তালেবান সরকার।
কাবুলের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র শরাফাত জামান জানান, ভূমিকম্পের ফলে সৃষ্ট ধ্বংসযজ্ঞ মোকাবিলায় সরকার আন্তর্জাতিক সাহায্যের আহ্বান জানিয়েছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে তিনি বলেন, “আমাদের এটি প্রয়োজন কারণ এখানে অনেক মানুষ প্রাণ হারিয়েছে এবং ঘরবাড়ি হারিয়েছে।
প্রশাসনের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদের তথ্যানুসারে, পূর্বাঞ্চলীয় কুনার এবং নাঙ্গারহার প্রদেশে ভূমিকম্পে ৮১২ জন নিহত হয়েছেন।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, মোবাইল ফোন সিগন্যাল সীমিত থাকায় হতাহতের পূর্ণ তথ্য পাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। উদ্ধারকর্মীরা এখনও কার্যক্রম চালাচ্ছে এবং হতাহতের সংখ্যা আরো বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক সমন্বয় অফিসের কর্মকর্তা কেট ক্যারি রয়টার্সকে বলেন, “পূর্বাঞ্চলীয় কুনার জেলা ভূমিকম্পের আগেই ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল, তাই ভূমিধস এবং পাথর ধসের ঝুঁকিও যথেষ্ট। সেখানে অনেক রাস্তা চলাচলের সম্পূর্ন অনুপযোগী।”
কেরি আরো জানান, উদ্ধারকারী দল এবং কর্তৃপক্ষ পশুর মরদেহ দ্রুত অপসারণের চেষ্টা করছে যাতে পানি দূষণের ঝুঁকি কমানো যায়।
নিরাপত্তা থেকে শুরু করে খাদ্য এবং স্বাস্থ্য পর্যন্ত বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রচেষ্টার কথা উল্লেখ করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আব্দুল মতিন কানি বলেন, “আমাদের সমস্ত দলকে সহায়তা ত্বরান্বিত করার জন্য মোতায়েন করা হয়েছে, যাতে ব্যাপক এবং পূর্ণ সহায়তা প্রদান করা যায়।”
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ভূমিকম্পে কুনারের তিনটি গ্রাম সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে, আরো অনেক গ্রামে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তালেবান সরকার আরো জানিয়েছে, কুনারে কমপক্ষে ৬১০ জন নিহত হয়েছেন।
ভূমিকম্পে বিপর্যস্ত আফিগানিস্তানকে চীন, ভারত, যুক্তরাজ্য এবং সুইজারল্যান্ড সহ বেশ কয়েকটি দেশ সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস জানিয়েছেন, জাতিসংঘের বিশ্বব্যাপী জরুরি প্রতিক্রিয়া তহবিল থেকে প্রাথমিকভাবে ৫ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ করা হয়েছে।
এর আগেও আফগানিস্তান ভূমিকম্পে বিপুল সংখ্যক মানুষ প্রাণ হারান। ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে পশ্চিম আফগানিস্তানে ৬.
ঢাকা/ফিরোজ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ভ ম কম প আফগ ন স ত ন ত ল ব ন সরক র আফগ ন স ত ন ভ ম কম প
এছাড়াও পড়ুন:
হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত
ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স।
গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’
পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।
হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।
আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।
সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’
তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।
রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ