কক্সবাজারে উচ্ছেদ অভিযানে হামলায় পুলিশ আহত, আটক ৩
Published: 2nd, September 2025 GMT
কক্সবাজার কস্তুরাঘাটে বাঁকখালী নদীর তীরে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযানে হামলা হয়েছে। এসময় দখলদারদের ছোঁড়া ইটের আঘাতে পুলিশের এক সদস্য আহত হয়েছেন। আটক করা হয়েছে তিনজনকে।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) সকালে অভিযানের শুরুতেই পুলিশের পর হামলা হয়। এর আগে, সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে শুরু হওয়া উচ্ছেদ অভিযানে দখলকৃত স্থাপনার মালামাল ও ভরাট মাটি প্রকাশ্যে নিলামে বিক্রি করা হয়।
আরো পড়ুন:
বাকৃবিতে ছাত্রদল-যুবদলের হামলার অভিযোগ, প্রতিবাদে রেললাইন অবরোধ
উচ্ছেদ অভিযানে ম্যাজিস্ট্রেটের গাড়িতে হামলা-ভাঙচুর, সড়ক অবরোধ
আজ মঙ্গলবার সকালে কস্তুরাঘাট-খুরুশকূল সংযোগ সেতু সংলগ্ন এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়। এতে দখলদাররা বাধা দেন। তাদের নিক্ষেপ করা ইটের আঘাতে পুলিশের কনস্টেবল করিম আহত হন। তাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
কক্সবাজার সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইলিয়াস খান জানান, ঘটনার সময় হামলাকারীদের ধাওয়া দিয়ে তিনজনকে আটক করা হয়। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কঠোর অবস্থান নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) সহকারী পরিচালক মো.
তিনি জানান, ৮১ কিলোমিটার দীর্ঘ বাঁকখালী নদীর সবচেয়ে বেশি দখল হয়েছে কস্তুরাঘাট-নুনিয়ারছড়া থেকে মাঝিরঘাট পর্যন্ত ছয় কিলোমিটার এলাকা। গত ১০-১২ বছরে এক হাজারের বেশি অবৈধ স্থাপনা গড়ে উঠেছে।
২০১০ সালের প্রজ্ঞাপনে বাঁকখালী নদীবন্দরের সংরক্ষক হিসেবে বিআইডব্লিউটিএকে দায়িত্ব দিলেও জমি বুঝিয়ে না দেওয়ায় দখল অব্যাহত থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি ও মার্চে যৌথ অভিযানে ৬ শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছিল। পরবর্তীতে আবারো নদীর তীর দখল হয়ে যায়। গত ২৪ আগস্ট হাইকোর্ট নির্দেশনা দেয়, চার মাসের মধ্যে সব অবৈধ দখল উচ্ছেদ এবং দূষণ নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ নিতে হবে। এরই প্রেক্ষিতেই গতকাল সোমবার থেকে উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক নিজাম উদ্দিন আহমেদ বলেন, “এই অভিযানে নদীর তীরে গড়ে ওঠা সব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে। এরপর নদীর সীমানা নির্ধারণ করে দেওয়া হবে।”
ঢাকা/তারেকুর/মাসুদ
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
দুই দিনে যেতে পারেননি কোনো পর্যটক, কক্সবাজার-সেন্ট মার্টিন জাহাজ চলাচল অনিশ্চিত
নভেম্বর থেকে সেন্ট মার্টিন দ্বীপ পর্যটকদের জন্য খুলে দিয়েছে সরকার। সরকারি ঘোষণায় বলা হয়েছিল, কক্সবাজার থেকে প্রতিদিন দুই হাজার পর্যটক যেতে পারবেন। কিন্তু দুই দিনে একজন পর্যটকও যেতে পারেননি। কারণ, পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ। কবে থেকে জাহাজ চলাচল শুরু হবে, তা নিয়েও কেউ নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারছেন না।
কক্সবাজার শহরের বাঁকখালী নদীর নুনিয়াছটা বিআইডব্লিউটিএ ঘাট থেকেই পর্যটকবাহী জাহাজ বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে সেন্ট মার্টিনে যাতায়াতের কথা। এ জন্য ১ হাজার ৭০০ জন ধারণক্ষমতার দুটি জাহাজ—এমভি কর্ণফুলী ও এমভি বার আউলিয়া চলাচলের অনুমতি পেয়েছে। কিন্তু গতকাল শনিবার ও আজ রোববার ওই রুটে কোনো জাহাজ চলেনি। আরও চারটি জাহাজ চলাচলের অনুমতির জন্য আবেদন করেছে।
সরকারি প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, নভেম্বর মাসে পর্যটকেরা শুধু দিনের বেলায় সেন্ট মার্টিন ভ্রমণ করতে পারবেন, রাত যাপন করা যাবে না, তবে ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে রাতযাপনের সুযোগ থাকবে। বিআইডব্লিউটিএ ও পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়া কোনো নৌযান সেন্ট মার্টিনে যেতে পারবে না। পর্যটকদের বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের স্বীকৃত ওয়েব পোর্টালের মাধ্যমে অনলাইনে টিকিট কিনতে হবে। প্রতিটি টিকিটে ট্রাভেল পাস ও কিউআর কোড থাকতে হবে। কিউআর কোডবিহীন টিকিট নকল বলে গণ্য হবে।
সেন্ট মার্টিনের পরিবেশ অক্ষুণ্ন রাখতে রাতের বেলায় সৈকতে আলো জ্বালানো, শব্দ সৃষ্টি, বারবিকিউ পার্টি, কেয়াবনে প্রবেশ, কেয়া ফল সংগ্রহ বা বিক্রি, সামুদ্রিক কাছিম, পাখি, প্রবাল, রাজকাঁকড়া, শামুক-ঝিনুকসহ জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সৈকতে মোটরসাইকেল বা সি-বাইকসহ মোটরচালিত যান চলাচলও বন্ধ। নিষিদ্ধ পলিথিন বহন এবং একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক (চিপসের প্যাকেট, প্লাস্টিক চামচ, স্ট্র, সাবান ও শ্যাম্পুর মিনিপ্যাক, পানির বোতল ইত্যাদি) ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।
পর্যটক নেই, ফাঁকা ঘাটআজ সকাল সাতটায় নুনিয়াছটা বিআইডব্লিউটিএ জেটিঘাটে গিয়ে দেখা যায়, কোনো যাত্রী নেই। বাঁকখালী নদীতেও পর্যটকবাহী কোনো জাহাজ দেখা যায়নি। ঘাটে অবস্থান করছিলেন পরিবেশ অধিদপ্তর ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। জানা যায়, গতকাল সকালে তিনজন পর্যটক টিকিট কেটে সেন্ট মার্টিন যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন, পরে জাহাজ না থাকায় ফিরে যান।
পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয়ের উপপরিচালক খন্দকার মাহবুব পাশা প্রথম আলোকে বলেন, ‘সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী ১ নভেম্বর থেকে তিন মাসের জন্য সেন্ট মার্টিন উন্মুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু জাহাজ চলাচল বন্ধ থাকায় গত দুই দিনে কোনো পর্যটক যেতে পারেননি। নভেম্বরে দিনে গিয়ে দিনে ফেরার নিয়ম থাকায় সময় ও সুযোগ কম, আবার দীর্ঘ জাহাজযাত্রার কারণে অনেকেই নিরুৎসাহিত হচ্ছেন। তারপরও আমরা সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়নে ঘাটে অবস্থান করছি।’
জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, টানা ৯ মাস বন্ধ থাকার পর ১ নভেম্বর থেকে তিন মাসের জন্য কক্সবাজার-সেন্ট মার্টিন রুটে জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়। তবে উখিয়ার ইনানী নৌবাহিনীর জেটিঘাট কিংবা টেকনাফের কোনো স্থান থেকে এখনো জাহাজ চলাচলের অনুমতি নেই।
জেলা প্রশাসক মো. আবদুল মান্নান বলেন, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে সংকট নিরসনের চেষ্টা চলছে।
গত ডিসেম্বরে সেন্ট মার্টিন দ্বীপ ছেড়ে কক্সবাজারের পথে পর্যটকবাহী একটি জাহাজ