অসুস্থতার কথা বলে ছুটি নিয়ে বিএনপির কর্মসূচিতে স্কুলশিক্ষিকা
Published: 3rd, September 2025 GMT
কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার অষ্টমীর ইউনিয়নের চর মুদাফৎ কালিকাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জিয়ারা খাতুন রোজি অসুস্থতার কথা বলে ছুটি নিয়ে বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) সকালে চিলমারী উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন বিএনপির উপজেলা কার্যালয়ে দলীয় ও জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। পরে একটি আনন্দ র্যালি বের হয়ে শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
আরো পড়ুন:
বাকৃবিতে একক ডিগ্রি চেয়ে ৫৬ শিক্ষকের নোট অব ডিসেন্ট
কুবিতে বানরের কামড়ে শিক্ষার্থীসহ আহত ১২
এ সময় শিক্ষক জিয়ারা খাতুন রোজি র্যালির সম্মুখ সারিতে অবস্থান করেন। অথচ তিনি এদিন সকাল ১০টায় অসুস্থতার কারণ জানিয়ে ফোনে সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা জাকির হোসেনের কাছ থেকে মৌখিক ছুটি নিয়েছিলেন।
সরকারি চাকরিতে দায়িত্ব পালনকালে ছুটি নিয়ে রাজনৈতিক বা জনসম্পৃক্ত কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করা সরকারি শৃঙ্খলা ভঙ্গের শামিল। এ ধরনের কাজ সরকারি চাকরিজীবীর নৈপুণ্য ও নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ করে। এ ঘটনায় সমালোচনা শুরু হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল বারী সরকার বলেন, ‘‘শিক্ষক জিয়ারা খাতুন রোজি জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক। তিনি আনন্দ র্যালিতে অংশ নিয়েছেন।’’
দলীয় পদে থাকা এবং বিএনপির অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার বিষয়টি স্বীকার করে শিক্ষক জিয়ারা খাতুন রোজি বলেন, ‘‘স্কুল থেকে ছুটি নিয়ে দলীয় অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলাম। তবে, এটি চাকরি বিধি অনুযায়ী ঠিক নয়।’’ এ সময় আগামী ছয় মাসের মধ্যে চাকরি অথবা রাজনীতি যে কোনো একটি বেছে নেবেন বলে জানান তিনি।
চিলমারী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কামরুজ্জামান বলেন, ‘‘ওই শিক্ষিকা জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক জানতে পেরে তার দলীয় পরিচয়ের তালিকা সংগ্রহ করে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে পাঠানো হয়েছে। জেলা অফিসের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
ঢাকা/সৈকত/রাজীব
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ র উপজ ল সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
রাজশাহীতে বইমেলায় বিক্রি কম, এখনো আশায় আছেন প্রকাশকেরা
রাজশাহী বিভাগীয় বইমেলার প্রথম তিন দিনে লোকজনের ভিড় থাকলেও বেচাকেনা তেমন হয়নি। এতে অনেক প্রকাশকের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। তবে আগামী কয়েক দিনে বেচাকেনা বাড়বে বলে আশা করছেন প্রকাশকেরা ও আয়োজক কর্তৃপক্ষ।
গত শুক্রবার রাজশাহী জেলা কালেক্টরেট মাঠে ৯ দিনব্যাপী এই বইমেলার উদ্বোধন করা হয়। সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায়, জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের উদ্যোগে এবং রাজশাহী বিভাগীয় প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় আয়োজিত এ মেলা চলবে ৮ নভেম্বর পর্যন্ত। মেলায় ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ৭০টি বেসরকারি প্রকাশনাসহ মোট ৮১টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। সাপ্তাহিক ছুটির দিন বাদে মেলা চলছে বেলা ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। আর ছুটির দিনে মেলা শুরু হয় বেলা ১১টায়।
উদ্বোধনের আগের দিন বৃষ্টিতে মেলার মাঠ কাদাপানিতে একাকার হয়ে যায়। সেই কর্দমাক্ত পরিবেশেই মেলার উদ্বোধন হয়। দর্শনার্থীদের ভোগান্তি কমাতে পরে প্রতিটি স্টলের সামনে ইট বিছিয়ে দেওয়া হয়। এতে কিছুটা স্বস্তি ফিরলেও বিক্রির খরা কাটেনি বলে জানালেন বিক্রেতারা।
গতকাল রোববার সন্ধ্যায় মেলা প্রাঙ্গণে গিয়ে দেখা যায়, মাঠের বিভিন্ন অংশে তখনো পানি জমে আছে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য নির্ধারিত মঞ্চের সামনের প্যান্ডেলেও কাদা। সেখানেই কাজী নজরুল ইসলামের জীবন ও সাহিত্য নিয়ে আলোচনা চলছিল, তবে দর্শক-শ্রোতার উপস্থিতি ছিল নগণ্য। স্টলের সামনে ইটের সলিংয়ের তৈরি রাস্তা দিয়ে হাঁটছেন অনেকে। অনেকে বই দেখছেন।
সূর্যোদয় প্রকাশনীর বিক্রেতা রিপন আলী বলেন, প্রথম দিন তো কাদাপানির মধ্যেই দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে। তখনো মানুষ ছিলেন। এখন ইট বিছানোর পর আরও বেশি মানুষ আসছেন, ভিড়ও করছেন, কিন্তু বই কিনছেন খুব কম।
ঐতিহ্য প্রকাশনীর স্টলে কাদার ওপর চেয়ার পেতে বসে থাকতে দেখা গেল বিক্রয়কর্মী ও চিত্রশিল্পী অর্ণব পাল সন্তুকে। তিনি বলেন, মানুষ আসছেন, ঘুরে দেখছেন, কিন্তু বিক্রি নেই বললেই চলে। মেলার ব্যবস্থাপনা আরও ভালো হতে পারত। আরেক বিক্রেতা আবদুল্লাহ হীল বাকি জানালেন, এমনও স্টল আছে, যেখানে সারা দিনে ২০০ থেকে ৩০০ টাকার বইও বিক্রি হচ্ছে না।
তবে হতাশার ভিড়ে আশার কথাও শোনালেন কেউ কেউ। চট্টগ্রাম থেকে আসা নন্দন বইঘর প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী সুব্রত কান্তি চৌধুরী বলেন, বেচাবিক্রি আজ না হোক কাল হবে। মানুষ যে মেলায় এসে বই হাতে নিয়ে দেখছেন, এটাই বড় পাওয়া। এতে তাঁদের মধ্যে বই কেনার আগ্রহ তৈরি হবে।
মেলায় আসা পাঠকদের মধ্যে অবশ্য ভিন্ন চিত্র। দুই সন্তানের জন্য শিশুতোষ বই কিনে এক অভিভাবক বলেন, বাচ্চাদের হাতে বই তুলে দেওয়ার আনন্দটাই অন্য রকম।
মেলা থেকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম ও তারাশঙ্কর বন্দ্যোপ্যাধ্যায়ের বই কিনেছেন মনির হোসেন। তিনি বলেন, মেলায় একসঙ্গে অনেক বই পাওয়া যায়, যা বই কেনার জন্য দারুণ সুযোগ।