র্যাবের পৃথক অভিযানে শ্যূটার মাসুদ ও নৌ-ডাকাত আক্তার গ্রেপ্তার
Published: 8th, September 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জ ও মুন্সিগঞ্জে পৃথক দুটি অভিযানে শীর্ষ সন্ত্রাসী ও নৌ-ডাকাতকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১১। এ সময় তাদের কাছ থেকে বিদেশি পিস্তল, গুলি, মাদক, ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত বিশেষ নৌকা ও বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।
সোমাবার (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে আদমজীস্থ র্যাব-১১'র সদর দপ্তরের অধিনায়ক লে. কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।
এর আগে রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) রাতে সোনারগাঁওয়ের পেরাব এলাকা থেকে শীর্ষ সন্ত্রাসী শুটার মাসুদকে (২৮) গ্রেপ্তার করা হয়। অন্যদিকে একই রাত সাড়ে ১১টার দিকে কুমিল্লার তিতাস এলাকা থেকে মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় পুলিশ ক্যাম্পে হামলার ঘটনায় জড়িত মেঘনার শীর্ষ নৌ-ডাকাত আক্তার সরকারকে আটক করা হয়।
র্যাব জানায়, নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার ও সোনারগাঁও এলাকায় শুটার মাসুদ নামে এক সন্ত্রাসী দীর্ঘদিন ধরে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে রেখেছিল। তিনি অস্ত্রের শোডাউন দেখিয়ে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করতেন এবং সাধারণ মানুষের কাছ থেকে চাঁদাবাজি, লুটপাট ও মাদক ব্যবসা পরিচালনা করতেন।
গত ২৭ জুলাই সোনারগাঁও থানার নোয়াদ্দা বাবুবাজার এলাকায় রাকিব (২৫) নামের এক কাপড় ব্যবসায়ীকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করা হয়। ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে এলাকায় ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। ফুটেজে দেখা যায়, শুটার মাসুদ গুলি করে রাকিবকে হত্যার পর ঘটনাস্থল থেকে অস্ত্র হাতে চলে যাচ্ছেন।
র্যাব-১১ এর সদর দপ্তরের অধিনায়ক লে.
শুটার মাসুদের বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন থানায় মোট সাতটি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে হত্যা, হত্যাচেষ্টা, নাশকতা, ডাকাতি ও মাদক মামলা। সম্প্রতি গত ৩ সেপ্টেম্বর একই গ্রুপের আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী শুটার রিয়াজকে সিলেটের গোয়াইনঘাট থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।
অন্যদিকে রোববার দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে কুমিল্লার তিতাস থানা এলাকা থেকে মেঘনার শীর্ষ নৌ-ডাকাত আক্তার সরকারকে (৫০) গ্রেপ্তার করে র্যাব।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২৫ আগস্ট বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া থানার পুলিশ ও গুয়াগাছিয়া অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্পের সদস্যরা মেঘনা নদীতে অভিযান চালাতে গেলে ৪০ থেকে ৫০ জনের একটি ডাকাতদল চার থেকে পাঁচটি হাইস্পিড ট্রলারে করে তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালায় এবং ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। আত্মরক্ষার্থে পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। একপর্যায়ে ডাকাতরা পালিয়ে যায়।
স্থানীয়দের বরাতে জানা যায়, নয়ন, পিয়াস ও আক্তার সরকারের নেতৃত্বে দীর্ঘদিন ধরে ওই এলাকায় নদীপথে চাঁদাবাজি, অবৈধ বালু উত্তোলন এবং ডাকাতি করে আসছিল। তাদের ভয়ে শতাধিক পরিবার এলাকা ছেড়ে পালিয়ে ছিল।
পরে আক্তার সরকারের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রাত আড়াইটার দিকে কুমিল্লার দাউদকান্দি থানার মোল্লাকান্দি এলাকায় অভিযান চালিয়ে পুলিশ ক্যাম্পে হামলায় ব্যবহৃত বিশেষ ইঞ্জিনচালিত নৌকা, পাঁচটি পিতলের নৌকার পাখা, দুটি চুম্বক, একটি বাইনোকুলার, একটি ছোরা এবং অন্যান্য সরঞ্জাম উদ্ধার করে র্যাব।
র্যাব জানায়, আক্তার সরকারের বিরুদ্ধে মোট ২৭টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে চারটি হত্যা, ১৪টি হত্যাচেষ্টা, দুটি ডাকাতি, একটি অপহরণ, একটি চাঁদাবাজি, চারটি বিস্ফোরক এবং একটি মাদক মামলা।
এর আগে গত ২৮ আগস্ট ও ৩ সেপ্টেম্বর পৃথক দুটি অভিযানে র্যাব-১১ এই হামলার সঙ্গে জড়িত আরও চারজনকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তার হওয়া দুই আসামিকে আইনানুগ প্রক্রিয়া শেষে আদালতে সোপর্দ করা হবে বলে জানিয়েছে র্যাব।
অভিযানে অংশ নেওয়া র্যাব কর্মকর্তারা জানান, শুটার মাসুদ ও আক্তার সরকারের গ্রেপ্তারের মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জ ও মুন্সিগঞ্জের সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরে আসবে। পাশাপাশি মেঘনায় ডাকাতি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড দমনেও এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: স ন রগ ও স দ ধ রগঞ জ ন র য়ণগঞ জ গ র প ত র কর ন র য়ণগঞ জ স প ট ম বর সন ত র স য ব ১১ এল ক য়
এছাড়াও পড়ুন:
ফতুল্লায় গভীর রাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মশাল মিছিল, আটক ৫
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের ঝটিকা মশাল মিছিল থেকে পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে।
শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) দিবাগত রাত দেড়টার দিকে ফতুল্লার রঘুনাথপুর এলাকার ঢাকা–নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের পাসপোর্ট অফিসের সামনে ছাত্রলীগ ৩০-৪০ জন নেতাকর্মী মশাল হাতে নিয়ে একটি ঝটিকা মিছিল বের করেন।
বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর দ্রুত জেলা যুবদল-ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছান এবং মিছিলটি প্রতিহত করেন।
পরে যুবদলের নেতাকর্মীরা ঘটনাস্থল থেকে ফাহিম আহম্মেদ (২৩), নিরব হোসেন (১৮), ফয়সাল (২০), অনিক আহমেদ অনিন (২১) এবং আবিরসহ (১৫) মোট পাঁচজন কর্মীকে আটক করে পুলিশের কাছে দেয়।
খবর পেয়ে ফতুল্লা থানা পুলিশের টহল দলের উপপরিদর্শক (এসআই) নন্দন চন্দ্র সরকার দ্রুত ঘটনাস্থলে যান এবং আটকদের হেফাজতে নেন।
পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি ব্যানার, কয়েকটি মশাল, লাঠি এবং একটি পিকআপভ্যানও জব্দ করে।
এ বিষয়ে ফতুল্লা থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক মেহেদী হাসান জানান, মিছিল করার সময় ছাত্রলীগের ৫ জনকে আটকের পর তাদের থানায় আনা হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে বর্তমানে মামলার প্রস্তুতি চলছে।