কচুরিপানা কাটা যন্ত্র আবিষ্কার করা প্রদীপ পেলেন সম্মাননা
Published: 9th, September 2025 GMT
শেওলা ও কচুরিপানা কাটার যন্ত্র আবিষ্কার করা যশোরের মনিরামপুর উপজেলার কুচলিয়া গ্রামের প্রদীপ বিশ্বাসকে ‘উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা সম্মাননা’ দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (৮ সেপ্টম্বর) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তার হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেওয়া হয়। ‘আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস-২০২৫’ উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
আরো পড়ুন: সাড়া ফেলেছে প্রদীপ বিশ্বাসের কচুরিপানা কাটার যন্ত্র
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা.
অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা ডা. বিধার রঞ্জন রায় পোদ্দার ‘উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা সম্মাননা’ তুলে দেন। ব্যক্তি ক্যাটাগরিতে প্রদীপ বিশ্বাস এবং প্রতিষ্ঠান ক্যাটাগরিতে আন্ডারপ্রিভিলেজড চিলড্রেন’স এডুকেশনাল প্রোগ্রামস (ইউসেফ) বাংলাদেশ সম্মাননা পেয়েছে।
প্রদীপ বিশ্বাস বলেন, “আমরা ভবদহ অঞ্চলের মানুষ। বছরের ৯ মাস আমাদের পানির নিচে থাকতে হয়। শেওলাতে ভর্তি থাকে আমাদের জলাশয়গুলো। এ কারণে শেওলা ও কচুরিপানা নিরসনে আমার এ আবিষ্কার। ভাবতে পারিনি, আমার এ আবিষ্কার দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়বে।”
প্রদীপ বিশ্বাসের ছেলে জনতা ব্যাংকে কর্মরত রনজিৎ বিশ্বাস বলেন, “বাবার সম্মানতা প্রাপ্তিতে আমরা গর্বিত।”
প্রদীপ বিশ্বাস যশোরের মনিরামপুর উপজেলার কুচলিয়া গ্রামের মৃত প্রভাত চন্দ্র বিশ্বাসের ছেলে। বাবা ছিলেন অভয়নগর উপজেলার জুটমিলের মেকানিক। বাবার হাত ধরে এ পথে আসা প্রদীপের। সুন্দলী বাজারে কুচলিয়া অংশে রয়েছে প্রদীপের ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপ।
শেওলা ও কচুরিপানা কাটার যন্ত্র আবিষ্কার করেছেন তিনি। যে যন্ত্র ১০০ জন শ্রমিকের এক মাসের কাজ করতে পারে মাত্র একদিনে। ইন্টারনেটে এ যন্ত্র দিয়ে কচুরিপানা কাটার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
ডিঙ্গি নৌকার ওপর বিশেষ কায়দায় ইঞ্জিনসহ অন্যান্য উপকরণ বসিয়ে কচুরিপানা কাটার মেশিন আবিষ্কার করা হয়েছে। মেশিন চলছে আর কচুরিপানা কেটে দুই পাশে পড়ছে। ফাঁকা হয়ে যাওয়া কচুরিপনাভর্তি জলাশয়ের মধ্যে দিয়ে ছুটে চলছে ডিঙ্গি নৌকা।
প্রদীপ জানান, দুই বছর আগে ২২ হর্স-পাওয়ারের ইঞ্জিন, এঙ্গেল, পাত, কাঠ, চেইন, পেনিয়াম, গিয়ারবক্স, প্লেনসিড ও ১৯টি বিচালি কাটা ছুরি দিয়ে যন্ত্র বানালেও ঘন কচুরিপানা কাটতে গেলে মেশিন বন্ধ হয়ে যেত। এরপর ডিঙ্গি নৌকা চালাতে ১১ হর্সপাওয়ার ও কচুরিপানা কাটতে ২২ হর্সপাওয়ারের দুটি ইঞ্জিন, ৯টি ছুরি পাতের মধ্যে বিশেষ কায়দায় সেট করে যন্ত্রটি বানানো হয়। প্রায় তিন লাখ টাকা ব্যয় করে মাসখানেক কাজ করে তৈরিকৃত যন্ত্র কচুরিপানা কাটার উপযোগী হয়। এই যন্ত্র দিয়ে কুচি কুচি করে কাটা কচুরিপানা দিয়ে জৈব সার তৈরি সম্ভব বলে মনে করেন তিনি।
ঢাকা/প্রিয়ব্রত/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপ ন ষ ঠ ন ক শ ক ষ অন ষ ঠ ন
এছাড়াও পড়ুন:
মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার
রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।
গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।
সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।
ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’