রেল ভূমির ভাড়া ৩ গুণ: খুলনায় ব্যবসায়ীদের ক্ষোভ
Published: 10th, September 2025 GMT
রেল ভূমির ভাড়া হঠাৎ তিনগুণ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে খুলনার ব্যবসায়ীরা। তারা বলেছেন, রেলওয়ের এ সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক, অগ্রহণযোগ্য এবং বাস্তবতার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। ভাড়া বৃদ্ধি বহাল থাকলে হাজারো প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাবে, কর্মহীন হবে অন্তত ৩০ হাজার শ্রমিক-কর্মচারী, আর খুলনার অর্থনীতিতে নামবে মারাত্মক সংকটে।
বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান খুলনার রেলভূমি ব্যবহারকারী ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদের নেতারা। সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের আহ্বায়ক আলহাজ্ব শরীফ আতিয়ার রহমান ও সদস্য সচিব মো.
ব্যবসায়ী নেতারা জানান, কয়েক বছর আগেও রেল ভূমির ভাড়া ছিল প্রতি বর্গফুট ২৫ টাকা। পরে তা বাড়িয়ে ৫০ টাকা এবং ২০২১ সালে ৭০ টাকা করা হয়। সর্বশেষ চলতি বছরের ১৭ জুলাই আকস্মিকভাবে ভাড়া বাড়িয়ে ভ্যাটসহ ২৪০ টাকা করা হয়েছে। অর্থাৎ যেখানে আগে একটি দোকানের ভাড়া ছিল ৫০ হাজার টাকা, এখন তা দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৭০ হাজার টাকা। ছোট দোকানের ভাড়া ১০ হাজার টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৩৪ হাজার টাকা।
তারা প্রশ্ন রাখেন, যেখানে ভৈরব নদীর তীরে বিআইডব্লিউটিএ ব্যবসায়ীদের কাছে প্রতি বর্গফুট ৩ টাকা, আর জেলা প্রশাসক ডিসিআরের মাধ্যমে মাত্র ৩ টাকা ৮৮ পয়সা হারে ভাড়া নেন, সেখানে রেলের জমির ভাড়া ২৪০ টাকা নির্ধারণ কতটা যুক্তিসঙ্গত?
নেতারা বলেন, “একসময় এসব জমি ছিল পতিত- কোথাও ডোবা-নালা, কোথাও বনজঙ্গল, কোথাও আবর্জনার স্তূপ। ব্যবসায়ীরাই নিজ খরচে ভরাট করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন এবং নিয়মিত ভাড়া প্রদানের পাশাপাশি ট্রেড লাইসেন্স ফি, ভ্যাট, আয়কর ও হোল্ডিং ট্যাক্স দিয়ে আসছেন। এখন তিনগুণ ভাড়া চাপিয়ে দেওয়া হলে ব্যবসা চালানো অসম্ভব হয়ে পড়বে।”
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা সতর্ক করে বলেন, “খুলনা একসময় শিল্পনগরী ছিল। আজ অধিকাংশ কলকারখানা বন্ধ হয়ে হাজারো মানুষ বেকার। এই অবস্থায় বড়বাজার, স্টেশন রোড, কদমতলা, ডাকবাংলাসহ ব্যবসায়ীরাই অর্থনীতির চাকা সচল রেখেছেন। কিন্তু রেলের খামখেয়ালি ভাড়া নীতিতে সেই ব্যবসাও ধ্বংসের মুখে।”
ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদ জানায়, খুলনায় রেল ভূমির ওপর ভর করে প্রায় ৫ থেকে ৬ হাজার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। মালিক, শ্রমিক ও কর্মচারী মিলে প্রায় ৩০ হাজার মানুষ এখানে কর্মরত। এদের ওপর নির্ভরশীল পরিবারসহ প্রায় এক লাখ মানুষের জীবিকা হুমকির মুখে পড়বে। একই সঙ্গে ঋণখেলাপিতে পরিণত হবেন অনেক ব্যবসায়ী, ক্ষতিগ্রস্ত হবে ব্যাংক ও অর্থলগ্নী প্রতিষ্ঠান, আর বিপুল রাজস্ব হারাবে বাংলাদেশ রেলওয়ে।
রেলওয়ের ভাড়া বৃদ্ধি অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে ব্যবসায়ীরা ঘোষণা দেন- দাবি না মানলে প্রধান উপদেষ্টা ও রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান, মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন খুলনা রেলভূমি ব্যবহারকারী ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদের ১৮টি সংগঠনের প্রতিনিধিরা। এর মধ্যে রয়েছে স্টেশন রোড ব্যবসায়ী বহুমুখী কল্যাণ সমিতি, খুলনা ধান-চাল বণিক সমিতি, কাঁচা ও পাকা মাল আড়ৎদার সমিতি, খুলনা বিপণী কেন্দ্র, খুলনা জুট গুডস মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশন, মানিক মিয়া শপিং কমপ্লেক্স, ডাকবাংলা সুপার মার্কেট;
সোহরাওয়ার্দী মার্কেট, খুলনা বিপণী বিতান, শহীদ আ. জব্বার বিপণী বিতান, মশিউর রহমান বিপণী কেন্দ্র, চাঁদনী চক মার্কেট, দরবেশ চেম্বার মার্কেট, নান্নু সুপার মার্কেট, কবি কাজী নজরুল ইসলাম মার্কেট, বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন মার্কেট, হার্ডওয়্যার মার্কেট অ্যাসোসিয়েশন ও খুলনা সাইকেল সেন্টার মার্কেট।
ঢাকা/নুরুজ্জামান/এস
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব যবস য় র
এছাড়াও পড়ুন:
ভারত–পাকিস্তান লড়াই: একসময় আগুন জ্বলত, এখন শুধু ধোঁয়া
ভারত-পাকিস্তানের ক্রিকেটীয় সম্পর্ক সব সময়ই দুই দেশের রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক কৌশল অনুযায়ী এগিয়েছে।
অতীতেও দ্বিপক্ষীয় সিরিজে লম্বা বিরতি দেখা গেছে। ১৯৫৪ থেকে ১৯৭৮—টানা ২৪ বছর পাকিস্তান সফরে যায়নি ভারত। আবার ১৯৬০ সালের পর পাকিস্তানও প্রথমবারের মতো ভারতে খেলতে যায় ১৯৭৯ সালে।
এরপর ১৯৮২ থেকে ১৯৮৭ সাল পর্যন্ত ভারত-পাকিস্তান নিয়মিত মুখোমুখি হয়েছে। এই সময়ে ভারত তিনবার পাকিস্তান সফরে গিয়ে খেলে ১২ টেস্ট, পাকিস্তানও ভারতে গিয়ে খেলে ৮ টেস্ট।
দীর্ঘ বিরতির পর ১৯৯৯ সালে পাকিস্তান তিন টেস্ট খেলতে ভারতে যায়। এর মধ্যে একটি ছিল কলকাতার ইডেন গার্ডেনে প্রথম এশিয়ান টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ। ভারত ফিরতি টেস্ট সিরিজ খেলতে পাকিস্তানে যায় ২০০৪ সালে, যা ছিল ১৯৮৯ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে শচীন টেন্ডুলকারের অভিষেকের পর প্রথমবার।
২০০৪ সালের পাকিস্তান সফরে কড়া নিরাপত্তায় ব্যাটিংয়ে নামেন শচীন টেন্ডুলকার