গভীর রাতে সংবাদ সম্মেলন: ফলাফল যা-ই হোক, মেনে নেবে বাগছাস
Published: 12th, September 2025 GMT
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে ভোটের ফলাফল যা-ই হোক, তা মেনে নেবে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ (বাগছাস)।
গভীর রাতে সংবাদ সম্মেলনে এসে বাগছাসের সদস্য সচিব এবং ‘শিক্ষার্থী ঐক্য ফোরাম’ প্যানেলের জিএস পদপ্রার্থী আবু তৌহিদ মো. সিয়াম।
আরো পড়ুন:
জাকসু নির্বাচন: জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে জাবি বাগছাস
জাকসু নির্বাচন: ‘বয়কট বয়কট’ স্লোগানে ছাত্রদলের বিক্ষোভ
লিখিত বক্তব্য পাঠ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সিয়াম বলেন, “জাকসু যে শুরু হলো, এটাকে আমরা সাধুবাদ জানাই। বিশেষ করে সাত-আট হাজার শিক্ষার্থী এত প্রতিকূলতার পরে ভোট দিয়েছেন, এ বিষয়টিকে আমরা সাধুবাদ জানাই। এ জন্যই আমরা বলছি, এই নির্বাচনটা আমরা বর্জন করছি না। কিন্তু এই নির্বাচনটা যে ত্রুটিযুক্ত, সেটা আমরা অ্যাড্রেস করছি। তবে আমরা বলছি, ৩২ বছরের নো-জাকসু কাটিয়ে আমরা একটা ব্যাড ইলেকশনের মাধ্যমে হলেও যে জাকসু আমরা পেয়েছি, তা দিয়ে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ক্ষমতার ভারসাম্য আনার জন্য এই জাকসুটা আমাদের দরকার।”
“আমরা মনে করি, এই জাকসু যদি আমরা বর্জন করি, এটা যদি বানচালের দিকে যায়, তাহলে হয়তো এই প্রশাসন আমাদের সামনে আবারো একটা তেত্রিশ বছরের জটলা আনবে। সেটি হলে জাহাঙ্গীরনগরের গণতান্ত্রিক পরিবেশকে হুমকির মুখে ফেলবে,” বলেন সিয়াম।
এ সময় সাংবাদিকরা জানতে চাইলে বলা হয়, ফলাফল যা-ই হোক, তারা তা মেনে নেবেন।
দীর্ঘ ৩৩ বছর পর জাকসু নির্বাচন হলো। বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত বিরতিহীন ভোটগ্রহণ হয়। তবে প্রায় ৫ ঘণ্টার বেশি সময় পর রাত সোয়া ১০টার দিকে ভোট গণনা শুরু হয়।
এদিকে ভোটগ্রহণের মধ্যে মধ্যাহ্নের পর থেকে ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার আগে আগে বিএনপি-সমর্থিত প্যানেলসহ একে একে পাঁচটি প্যানেল নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেয়। জাকসু নির্বাচন কমিশন বাতিল করে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করে পুনর্নির্বাচনের দাবি তোলেন তারা। তবে এই দাবিরবিষয়ে নির্বাচন কমিশন কোনো প্রতিক্রিয়া দেখায়নি।
জাকসু নির্বাচনের ভোট গণনা চলছে। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, গণনা শেষে পূর্ণাঙ্গ ফলাফল দিতে দিতে শুক্রবার দুপুর হয়ে যেতে পারে।
২৩ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ প্যানেল নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেয় বাগছাস জাবি শাখা। ‘শিক্ষার্থী ঐক্য ফোরাম’ নামে এই প্যানেলে ভিপি পদে বাগছাসের জাবি শাখার আহ্বায়ক আরিফুজ্জামান উজ্জ্বল এবং জিএস পদে রয়েছেন সদস্য সচিব আবু তৌহিদ মো.
ছাত্রদলসহ পাঁচটি প্যানেল জাকসু নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর গভীর রাতে সংবাদ সম্মেলন ডাকেন আবু তৌহিদ মো. সিয়াম।
ঢাকা/আহসান/সাব্বির/রাসেল
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
আফ্রিদি-জয় শাহর ভাইরাল ভিডিওটি এশিয়া কাপের নয়
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও ভাসছে। স্টেডিয়ামে বিশেষ অতিথিদের গ্যালারিতে পাশাপাশি বসে বর্তমান আইসিসি চেয়ারম্যান জয় শাহ এবং পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক ও অলরাউন্ডার শহীদ আফ্রিদি। বেশ হাসিমুখে কথা বলছেন দুজন। জয় শাহর পাশেই বসে পিসিবি চেয়ারম্যান মহসিন নাকভি। মাঝে একটি আসন দূরে বসে বিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি ও ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) সংসদ সদস্য অনুরাগ ঠাকুর। তিনিও জয় শাহ ও আফ্রিদির সঙ্গে বেশ হাসিমুখে কথা বলছিলেন।
আরও পড়ুনবাংলাদেশ এশিয়া কাপে কয়েকবারের ‘চ্যাম্পিয়ন’, ভেবেছিলেন আফগানিস্তান কোচ১০ ঘণ্টা আগেদুবাইয়ে গত পরশু ভারত–পাকিস্তান ম্যাচ ঘিরে এ ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। অনেকেই দাবি করেন, এই ভিডিও চলমান এশিয়া কাপে ভারত–পাকিস্তান ম্যাচের। সমালোচনা করে অনেকেই বলেন, ভারতে যেখানে পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচটি বয়কটের দাবি উঠেছে, সেখানে তাঁদের মধ্যে এত হৃদ্যতা আসে কোত্থেকে? একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী ভিডিওটি শেয়ার করে ক্যাপশনে লেখেন, ‘পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার পর জনতার ক্ষোভের মধ্যেই এশিয়া কাপে ভারত–পাকিস্তান ম্যাচে জয় শাহ ও অনুরাগ ঠাকুরকে শহীদ আফ্রিদির সঙ্গে দেখা যাচ্ছে। গোটা দেশ যখন ম্যাচটি বয়কটের ডাক দিয়েছে, তখন বিজেপির নেতা অনুরাগ ঠাকুর ও জয় শাহ শহীদ আফ্রিদি ও মহসিন নাকভির সঙ্গে মজা করছেন ও সময়টা উপভোগ করছেন।’
ভিডিওটির সত্যতা পরীক্ষা করে ভারতের সংবাদমাধ্যম ‘ইন্ডিয়া টুডে’ জানিয়েছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এই ভিডিও গত পরশু ভারত–পাকিস্তান ম্যাচের নয়। এটি গত ২৩ ফেব্রুয়ারির ভিডিও। তখন দুবাইয়ে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ভারতের মুখোমুখি হয়েছিল পাকিস্তান। সেই ম্যাচের এই ভিডিও নতুন করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর অনেকেই এটাকে গত পরশুর ম্যাচের ভেবে ভুল করেছেন। ভারত–নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে গত ২২ এপ্রিল। অর্থাৎ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এই ভিডিও পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলা হওয়ার আগে।
আরও পড়ুনকেন পাকিস্তানের এমন হার—ব্যাখ্যা দিলেন আকরাম, আফ্রিদি ও গাভাস্কার১০ ঘণ্টা আগেভিডিওটি আরেকটু ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায় মাঠের হোর্ডিংয়ে ‘চ্যাম্পিয়নস ট্রফি ২০২৫’ লেখা। পাশাপাশি গত ২৪ ফেব্রুয়ারি এক ‘এক্স’ ব্যবহারকারী একই ভিডিও শেয়ার দিয়ে ক্যাপশনে লেখেন, ‘দুবাই স্টেডিয়ামে শহীদ আফ্রিদি ও জয় শাহ একসঙ্গে ভারত–পাকিস্তান ম্যাচ দেখছেন।’ ক্যাপশনের নিচে হ্যাশট্যাগ দিয়ে ভারত–পাকিস্তান ও চ্যাম্পিয়নস ট্রফি লেখা। গত ফেব্রুয়ারি–মার্চে অনুষ্ঠিত চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সূচিতেও দেখা যাচ্ছে, দুবাইয়ে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি গ্রুপ পর্বের ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল ভারত ও পাকিস্তান। ম্যাচে ৬ উইকেটে জেতে ভারত।
এশিয়া কাপে গত রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুবাইয়ে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৭ উইকেটের সহজ জয় পায় ভারত। পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার পর পাকিস্তানের বিপক্ষে এই ম্যাচ বয়কটের দাবি তুলেছিলেন ভারতের সাবেক ক্রিকেটাররাই। দেশটির সাবেক অফ স্পিনার হরভজন সিং ও সাবেক ক্রিকেটার কেদার যাদবরা এই ম্যাচ বয়কটের আহ্বান জানান। কিছুদিন আগে শেষ হওয়া ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ অব লেজেন্ডস (ডব্লুসিএল) টুর্নামেন্টে গ্রুপ পর্ব ও সেমিফাইনালে পাকিস্তানের মুখোমুখি হতে অস্বীকৃতি জানায় ভারত। এর পর থেকে এশিয়া কাপের ম্যাচটি বয়কটের ক্যাম্পেইন আরও বেশি করে শুরু হয় ভারতে। এমনকি ম্যাচটি বাতিলে পাবলিক ইন্টারেস্ট লিটিগেশন (পিআইএল) আবেদন করা হয়েছিল ভারতের সুপ্রিম কোর্টে। যদিও জরুরি ভিত্তিতে তা শুনানির জন্য রাজি হননি আদালত।