ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের ফল নিয়ে নানা রকম বিশ্লেষণ চলছে। সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সহসাধারণ সম্পাদকের পদ পেয়েছেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্রার্থীরা। প্রধান তিনটি পদ ছাড়াও তাঁরা ১২টি সম্পাদক পদের ৯টি এবং সদস্যপদের ১৩টির মধ্যে ১১টিতে জয় পেয়েছেন। যেসব শিক্ষার্থী তাঁদের ভোট দিয়েছেন, তাঁরাই ভোট দেওয়ার কারণ ভালো বলতে পারবেন। কিন্তু ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীরা কেমন ছাত্ররাজনীতি দেখতে চান, সেটি বিচ্ছিন্ন কোনো প্রশ্ন নয়। নির্বাচনের ফলকে বিবেচনায় নিয়েই এ প্রশ্নের জবাব খোঁজা দরকার।

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে প্রায় ১৫ বছর ধরে ছাত্ররাজনীতির ধরন কী ছিল, শিক্ষার্থীরা এখনো ভুলতে পারেননি। নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর রীতিমতো নিপীড়ন চালিয়েছেন। আবাসিক হলগুলোয় নিজেদের নিয়ন্ত্রণ ও আধিপত্য বজায় রেখে তাঁরা ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিলেন। এই পরিপ্রেক্ষিতে লেজুড়বৃত্তির ছাত্ররাজনীতির বিপক্ষে অনেকেই কথা বলেছেন। এমনকি ছাত্রদের এই অপরাজনীতিকে প্রশ্রয় দেয় যে শিক্ষকরাজনীতি, তার বিপরীতেও কথা উঠেছে। 

এবারের ডাকসু নির্বাচনে কিছু ত্রুটিবিচ্যুতি ছিল, সেটি অস্বীকার করা যাবে না। সেই ত্রুটিবিচ্যুতি ব্যবস্থাপনার; ভোট গ্রহণ বা ভোট গণনার নয়। তা ছাড়া প্রায় ক্ষেত্রেই ভোটের ব্যবধান এত বেশি যে তা নিয়ে আর প্রশ্ন তোলার কিছু নেই। এখন সময় এসেছে নিজেদের মূল্যায়নের।

চব্বিশের জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর ক্যাম্পাসগুলোয় কিছু পরিবর্তন এসেছে। কিন্তু সেই পরিবর্তন সাধারণ শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত হওয়ার মতো যথেষ্ট নয়। কারণ, তাঁরা দেখেছেন ক্যাম্পাসের ছাত্রনেতারা এখনো গলার জোরে কথা বলেন আর গায়ের জোরে কাজ করেন। শিক্ষার্থীদের অধিকারের কথা বলে শিক্ষকদের সঙ্গে রূঢ় ও অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন।

এ সময়ে ছাত্রনেতাদের কারও কারও বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে। ডাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরও বিভিন্ন পক্ষ ও প্রার্থী অনলাইন-অফলাইনে পরস্পরকে আক্রমণ করে কথা বলে গেছেন। শিক্ষা ও শিক্ষাসহায়ক কার্যক্রম কেমন হবে, সেগুলো তাঁদের কাছে প্রধান হয়নি।

 এদিক থেকে ছাত্রশিবির বেশ কৌশলেই কাজ করে গেছে। এক বছর ধরে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাবৃত্তি দেওয়া, মেডিকেল ক্যাম্প পরিচালনা, পানির ফিল্টার বসানো থেকে শুরু করে নানা সেবামূলক কাজ নিয়ে শিক্ষার্থীদের সামনে হাজির হয়েছে।

নির্বাচনে এই সংগঠন অংশ নিয়েছে ‘ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট’ নামে। সেখানে বিভিন্ন মত ও পথের শিক্ষার্থীদের যুক্ত করেছে। অন্য ছাত্রসংগঠনগুলো এর বিপরীতে এমন কোনো কাজ দেখাতে পারেনি, যা সংখ্যাগরিষ্ঠ শিক্ষার্থীর ভোট পাওয়ার জন্য যথেষ্ট হতে পারে। শিবিরপন্থী প্রার্থীরা তাঁদের জয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী ছিলেন। অন্য জোট বা প্রার্থীদেরও জানা ছিল, ছাত্রশিবির ভালো করবে। সে জন্য নির্বাচনের আগে প্রতিটি পক্ষের অবস্থান ছিল শিবিরের বিপরীতে। এ কারণে পরাজিত পক্ষগুলোর ভোট ভাগ হয়ে গেছে।

আরও পড়ুনডাকসু নির্বাচন, ফলাফল ও তরুণ মনের চাওয়া১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

এবারের ডাকসু নির্বাচনের ফল যেমনই হোক, মানতে হবে, শিক্ষার্থীদের বিপুল অংশগ্রহণ ছিল। নির্বাচনে প্রায় ৭৫ শতাংশ ভোট পড়েছে। অর্থাৎ প্রতি চারজন ভোটারের তিনজনই ভোট দিতে এসেছেন। অভিজ্ঞরা বলছেন, এত বেশি ভোটারের উপস্থিতি অতীতে কখনো ছিল না। বোঝা যাচ্ছে, দীর্ঘদিন কোনো ধরনের ভোট দিতে না পারা এই প্রজন্ম তাই নির্বাচনের জন্য উদ্গ্রীব ছিলেন। ভোট দিয়ে তাঁরা এমন এক ক্যাম্পাসের আশা করেছেন, যেটি তাঁদের আগামী দিনগুলোর জন্য নিরাপদ রাখবে। 

ডাকসু নির্বাচন কোনো প্যানেল বা পক্ষ ধরে করা হয় না। কিন্তু বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ (বাগছাস), বামপন্থী সাতটি ছাত্রসংগঠনের ‘প্রতিরোধ পর্ষদ’ কিংবা ‘স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য’ দলীয়ভাবে নির্বাচনের প্রচারণা চালিয়েছে। এসব দলে বা পক্ষে এমন অনেক প্রার্থী ছিলেন, যাঁরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছে খুব পরিচিত নন। বিপরীতে ছাত্রশিবির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রকাশ্যে আসার পর তাঁদের নিয়ে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচুর আলোচনা হয়েছে। এটি তাঁদের বাড়তি সুবিধা দিয়েছে। যেসব প্রার্থী স্বতন্ত্র বা নির্দলীয়ভাবে অংশ নিয়েও বেশি ভোট পেয়েছেন, দেখা গেছে, তাঁদের ক্ষেত্রেও ব্যক্তিগত পরিচিতি তাঁদের এগিয়ে নিয়েছে।

আরও পড়ুনশিবিরের বিজয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচনে কি নতুন ধারার সূচনা হলো১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

নির্বাচনের এই ফল মেনে নিতে না পারা ছাত্রনেতাদের বুঝতে হবে, বর্তমান শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের ছাত্ররাজনীতির প্রচলিত ধরনকে আর দেখতে চান না। এই রায় যতটুকু না শিবিরের পক্ষে, তার চেয়ে বেশি আক্রমণাত্মক আচরণ ও বক্তব্যের বিপক্ষে। কোনো পক্ষ বা ছাত্রসংগঠন যদি মনে করে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের অনুপস্থিতিতে আগামী দিনগুলোয় তারাই ক্যাম্পাস নিয়ন্ত্রণ করবে, তবে সেটি ভুল হবে। বরং গঠনমূলক ও ইতিবাচক ছাত্ররাজনীতি দিয়েই সাধারণ শিক্ষার্থীদের ভোট টানতে হবে। শক্তি প্রয়োগ করে আধিপত্য কায়েম করা যেতে পারে, নিজেদের স্বার্থও হাসিল হতে পারে, কিন্তু এভাবে শিক্ষার্থীদের সমর্থন পাওয়া যাবে না।

এবারের ডাকসু নির্বাচনে কিছু ত্রুটিবিচ্যুতি ছিল, সেটি অস্বীকার করা যাবে না। সেই ত্রুটিবিচ্যুতি ব্যবস্থাপনার; ভোট গ্রহণ বা ভোট গণনার নয়। তা ছাড়া প্রায় ক্ষেত্রেই ভোটের ব্যবধান এত বেশি যে তা নিয়ে আর প্রশ্ন তোলার কিছু নেই। এখন সময় এসেছে নিজেদের মূল্যায়নের। ছাত্ররাজনীতি নিয়ে সংগঠনগুলোকে শিক্ষার্থীদের কাছে যেতে হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও শিক্ষাসহায়ক পরিবেশের উন্নতি নিয়ে কথা বলতে হবে, কাজ করতে হবে। এ জন্য ডাকসুকে কার্যকর করার উদ্যোগ নিতে হবে এবং একাডেমিক ক্যালেন্ডারে যুক্ত করে নিয়মিত নির্বাচন করার দাবিও জোরদার করতে হবে।

তারিক মনজুর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব পর ত ছ ত রস স গঠন

এছাড়াও পড়ুন:

রাকসু নির্বাচনে বামদের প্যানেলে নারী একজন, শক্তি ‘ধারাবাহিক লড়াই’

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনে বাম সংগঠনগুলোর একটা বড় অংশ এক ছাতার নিচে এসেছে। তারা যে প্যানেল দিয়েছে, তাতে জায়গা পেয়েছেন মূলত জোটে থাকা সংগঠনগুলোর শীর্ষ নেতারাই। নারী আছেন মাত্র একজন। তবে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর দুজনকে প্রার্থী করা হয়েছে। অধিকার আদায়ের লড়াইয়ের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের কাছে পরিচিতি তৈরি হওয়াকে এই প্যানেলের ‘বড় শক্তি’ বলে মনে করা হচ্ছে।

রাকসুর ২৩ পদের বিপরীতে ১৬টিতে প্রার্থী দিয়েছে বাম সংগঠনগুলোর মোর্চা গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট। তাদের প্যানেলের নাম ‘গণতান্ত্রিক শিক্ষার্থী পর্ষদ’। এই প্যানেলে আছেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, ছাত্র গণমঞ্চ, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী, ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্র যুব আন্দোলন, বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের নেতা-কর্মীরা। রাজনৈতিক–সংশ্লিষ্টতা নেই, এমন শিক্ষার্থী আছেন দুজন। তবে প্যানেলে থাকা দুজন সদস্য সরে দাঁড়িয়েছেন।

এই প্যানেল থেকে সহসভাপতি (ভিপি) পদে লড়বেন ছাত্র ফ্রন্টের আহ্বায়ক ফুয়াদ রাতুল। সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ছাত্র ইউনিয়নের (একাংশ) কোষাধ্যক্ষ কাউছার আহম্মেদ এবং সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে প্রার্থী করা হয়েছে ছাত্র গণমঞ্চের আহ্বায়ক নাসিম সরকারকে।

বাম জোটের নেতারা বলছেন, ক্যাম্পাসে ধারাবাহিকভাবে শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের জন্য লড়াই-সংগ্রাম করে আসছেন তাঁরা। এর মাধ্যমেই তাঁরা শিক্ষার্থীদের কাছে পরিচিত। শিক্ষার্থীদের ‘প্রধান কণ্ঠস্বর’ হিসেবে কাজ করেছেন, করছেন। তাঁদের দাবি, এটাই তাঁদের বড় শক্তি।

প্রার্থীদের প্রায় সবাই জোটের নেতা

বামদের এই প্যানেলে সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে লড়বেন বিপ্লবী ছাত্র যুব আন্দোলনের আহ্বায়ক তারেক আশরাফ। মহিলাবিষয়ক সহসম্পাদক পদে ছাত্র ফ্রন্টের শ্রেয়সী রায়, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক পদে বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর হাসান শাহরিয়ার খন্দকার আলিফ এবং তথ্য ও গবেষণা সহসম্পাদক পদে লড়বেন ছাত্র ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক মো. সজীব আলী।

এ ছাড়া সহবিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক পদে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক রিসার্চ চাকমা এবং সহপরিবেশ ও সমাজসেবা সম্পাদক পদে একই সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক শামীন ত্রিপুরাকে প্রার্থী করা হয়েছে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক পদে ছাত্র ফ্রন্টের সদস্য মুনতাসির তাসিন, পরিবেশ ও সমাজসেবা–বিষয়ক সম্পাদক পদে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের আজমাইন আতিক ও নির্বাহী সদস্য পদে লড়বেন ছাত্র ইউনিয়নের দপ্তর সম্পাদক আহমেদ ইমতিয়াজ।

এই প্যানেল থেকে জোটের বাইরে দুজনকে প্রার্থী করা হয়েছে। তাঁরা হলেন সহমিডিয়া ও প্রকাশনা সম্পাদক প্রার্থী ফাহিম মুনতাসির এবং নির্বাহী সদস্য পদে লড়বেন আসাদ সাদিক।

দাবি আদায়ের মাঠে থাকা ‘বড় শক্তি’

শিক্ষার্থীদের দাবিদাওয়ার আন্দোলনে বাম সংগঠনের নেতা-কর্মীদের সব সময় মাঠে দেখা গেছে। বিভিন্ন জাতীয় ইস্যুতেও তাঁরা তৎপর থেকেছেন। সংখ্যায় কম থাকলেও আন্দোলনের জায়গায় পিছিয়ে ছিলেন না। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ছাত্রলীগের বিভিন্ন অপকর্ম ও শিক্ষার্থী নির্যাতনের বিরুদ্ধেও বাম নেতারা ছিলেন সোচ্চার।

শিক্ষার্থীদের আবাসন, খাদ্য, পরিবহনসংকট, ফি কমানো, নারীদের নিরাপত্তাসহ নানা ইস্যুতে আন্দোলন করে আসছে বাম সংগঠনগুলো। জুলাই আন্দোলনেও সক্রিয় ছিল তারা। এই প্যানেলের ভিপি প্রার্থী ফুয়াদ রাতুল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়কদের একজন।

বাম নেতারা বলছেন, নব্বই–পরবর্তী বাম রাজনীতির ক্রান্তিকাল চলছে। এর পর থেকে আত্মকেন্দ্রিকতা বেড়ে গেছে। সেই ছায়া পড়েছে প্রগতিশীল রাজনীতিতে। অন্য সংগঠনগুলোতে ব্যক্তিগত স্বার্থ বা লাভবান হওয়ার সুযোগ রয়েছে। কিন্তু বাম রাজনীতি করলে সেই সুবিধা পাওয়া যায় না। কিন্তু শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে বাম সংগঠনগুলো যে সব সময় সক্রিয় থেকেছে, এটাকেই রাকসু নির্বাচনে একটা বড় শক্তি মনে করছেন তাঁরা।

বামদের প্যানেলের ভিপি প্রার্থী ও ছাত্র ফ্রন্টের আহ্বায়ক ফুয়াদ রাতুল প্রথম আলোকে বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের পক্ষে আন্দোলন করায় আমরা ক্যাম্পাসে পরিচিত। সে হিসেবে আমরা শিক্ষার্থীদের কাছে পরীক্ষিত। বিগত দিনে আমরা ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের প্রধান কণ্ঠ ছিলাম। আমাদের তারা মূল্যায়ন করবে। আমাদের এই লড়াই–ই বড় শক্তি।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শাকসু নির্বাচন সামনে রেখে একাধিক শর্তে ছাত্ররাজনীতি চালুর সুপারিশ
  • ভিন্ন পরিবেশে নির্বাচন, সবারই প্রথম অভিজ্ঞতা
  • রাকসু নির্বাচনে বামদের প্যানেলে নারী একজন, শক্তি ‘ধারাবাহিক লড়াই’