একটি পারিবারিক ভ্রমণের কথা ভাবুন, শহরের ব্যস্ত রাস্তা পেরিয়ে দেশের গ্রামের শান্ত পথ ধরে, যেখানে আরাম, নিরাপত্তা ও আনন্দ একসঙ্গে মিলে এক স্মরণীয় যাত্রার রূপ নেয়। এ ধরনের যাত্রাকে আরও আনন্দময় করে তুলেছে মিতসুবিশি এক্সপ্যান্ডার।

গাজীপুরের বড় ভবানীপুরে অবস্থিত র‍্যানকন অটো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড (আরএআইএল)-এর কারখানায় আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে তৈরি হয় মিতসুবিশি এক্সপ্যান্ডার। বিদেশি গাড়ির ওপর নির্ভরতা কমিয়ে এখন বাংলাদেশিরা নিজের মাটিতে তৈরি নিরাপদ ও আরামদায়ক গাড়ি ব্যবহার করতে পারছেন। স্থানীয়ভাবে তৈরি হওয়ায় দামও তুলনামূলকভাবে কম। পরবর্তী সময়ে সার্ভিস ও খুচরা যন্ত্রাংশ পাওয়ার নিশ্চয়তাও রয়েছে।

যাত্রা শুরু করলেই বোঝা যায়, এক্সপ্যান্ডার শুধু দেখতে বড় নয়, চালাতেও আরামদায়ক। শহরের ছোট রাস্তায় বা গ্রামের বাঁকা পথে ২২০ মিলিমিটার গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স এবং ৫.

২ মিটার টার্নিং রেডিয়াস যেকোনো রাস্তা পেরোতে সাহায্য করে। ১.৫ লিটার মাইভেক ইঞ্জিনের ১০৫ হর্সপাওয়ার এবং ১৪১ নিউটন মিটার টর্ক যাত্রাকে করে মসৃণ আর দীর্ঘ পথও আরামদায়ক হয় উন্নত সাস্পেনশন এবং শব্দ-কম্পন নিয়ন্ত্রণব্যবস্থার কারণে।

এক্সপ্যান্ডারের ভেতরের ডিজাইন পুরো পরিবারের সুবিধা নিয়ে পরিকল্পিত। তিন সারির সাতটি আসন, পর্যাপ্ত বুট স্পেস, ডুয়েল জোন ক্লাইমেট কন্ট্রোল, সেকেন্ড রো এসি ভেন্ট এবং চার্জিং–সুবিধা প্রতিটি যাত্রীকে আরামদায়ক রাখে। ১০.৩ ইঞ্চির টাচস্ক্রিন ডিসপ্লে পুরো যাত্রাকে আরও স্মার্ট করে। নিরাপত্তার দিক থেকেও এক্সপ্যান্ডার নির্ভরযোগ্য। ‘রাইজ’ বডি স্ট্রাকচার, ডুয়াল এয়ারব্যাগ, পথচারীবান্ধব বাম্পার এবং কি-লেস এন্ট্রি প্রযুক্তি পরিবারকে নিরাপদ রাখে।

বর্তমানে বাংলাদেশের বাজারে মিতসুবিশি এক্সপ্যান্ডার চারটি ভিন্ন মডেলে পাওয়া যাচ্ছে। বেস মডেল ‘এক্সপ্যান্ডার ক্ল্যাসিক’–এর দাম শুরু হচ্ছে ৩৪ লাখ টাকা থেকে। এর পরের মডেল ‘এক্সপ্যান্ডার প্রিমিয়াম’, যার মূল্য সাড় ৩৫ লাখ টাকা। এ মডেলে যুক্ত করা হয়েছে কিছু উন্নতমানের ফিচার, যেমন ৩৬০ ডিগ্রি ক্যামেরা, চামড়ায় মোড়া অন্দরসজ্জা, রুফ রেইল এবং ইনবিল্ট উইন্ডো শেড।

অন্যদিকে যাঁরা সাশ্রয়ী জ্বালানি ব্যয়ের দিকে নজর রাখেন, তাঁদের জন্য রয়েছে ‘এক্সপ্যান্ডার ইকো’, যার দাম মাত্র ৩৫ লাখ টাকা। এই মডেলের বিশেষত্ব হলো এটি অকটেন ও এলপিজির মাধ্যমে চালানো সম্ভব, ফলে এটি পরিবেশবান্ধব এবং দীর্ঘ মেয়াদে আরও অর্থনৈতিক সুবিধা এনে দেয়। স্পোর্টি ডিজাইন নিয়ে বাজারে এসেছে ‘এক্সপ্যান্ডার স্পোর্ট’, যার দাম শুরু সাড়ে ৩৬ লাখ টাকা থেকে। এই মডেল বিশেষভাবে তরুণ ক্রেতাদের জন্য।

গাড়িটি বর্তমানে তিনটি আকর্ষণীয় রঙে পাওয়া যাচ্ছে—জেট ব্ল্যাক মিকা, গ্রাফাইট গ্রে মেটালিক ও হোয়াইট পার্ল। তবে গ্রাহকদের রঙের বৈচিত্র্য দেওয়ার জন্য ভবিষ্যতে আরও নতুন রং আনার পরিকল্পনার কথাও জানিয়েছে মিতসুবিশি কর্তৃপক্ষ।

মিতসুবিশি ক্রেতাদের দিচ্ছে বাড়তি সুবিধা। গাড়ি কিনলে থাকছে পাঁচ বছরের ওয়ারেন্টি এবং দুই বছরে বিনা মূল্যে ছয়টি সার্ভিস–সুবিধা। ঢাকা ও চট্টগ্রামের র‍্যানকন আর্কেডে মিতসুবিশির রয়েছে আধুনিক বিক্রয়কেন্দ্র। এ ছাড়া খুলনার সোনাডাঙ্গায় রয়েছে অত্যাধুনিক ডিলারশিপ শোরুম। এসব শোরুমে প্রতিদিনই সরাসরি গাড়ি দেখে বুকিং, টেস্ট ড্রাইভ এবং পূর্ণ বিক্রয়োত্তর সেবা গ্রহণ করতে পারছেন গ্রাহকেরা।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

রাজশাহীতে বইমেলায় বিক্রি কম, এখনো আশায় আছেন প্রকাশকেরা

রাজশাহী বিভাগীয় বইমেলার প্রথম তিন দিনে লোকজনের ভিড় থাকলেও বেচাকেনা তেমন হয়নি। এতে অনেক প্রকাশকের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। তবে আগামী কয়েক দিনে বেচাকেনা বাড়বে বলে আশা করছেন প্রকাশকেরা ও আয়োজক কর্তৃপক্ষ।

গত শুক্রবার রাজশাহী জেলা কালেক্টরেট মাঠে ৯ দিনব্যাপী এই বইমেলার উদ্বোধন করা হয়। সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায়, জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের উদ্যোগে এবং রাজশাহী বিভাগীয় প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় আয়োজিত এ মেলা চলবে ৮ নভেম্বর পর্যন্ত। মেলায় ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ৭০টি বেসরকারি প্রকাশনাসহ মোট ৮১টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। সাপ্তাহিক ছুটির দিন বাদে মেলা চলছে বেলা ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। আর ছুটির দিনে মেলা শুরু হয় বেলা ১১টায়।

উদ্বোধনের আগের দিন বৃষ্টিতে মেলার মাঠ কাদাপানিতে একাকার হয়ে যায়। সেই কর্দমাক্ত পরিবেশেই মেলার উদ্বোধন হয়। দর্শনার্থীদের ভোগান্তি কমাতে পরে প্রতিটি স্টলের সামনে ইট বিছিয়ে দেওয়া হয়। এতে কিছুটা স্বস্তি ফিরলেও বিক্রির খরা কাটেনি বলে জানালেন বিক্রেতারা।

গতকাল রোববার সন্ধ্যায় মেলা প্রাঙ্গণে গিয়ে দেখা যায়, মাঠের বিভিন্ন অংশে তখনো পানি জমে আছে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য নির্ধারিত মঞ্চের সামনের প্যান্ডেলেও কাদা। সেখানেই কাজী নজরুল ইসলামের জীবন ও সাহিত্য নিয়ে আলোচনা চলছিল, তবে দর্শক-শ্রোতার উপস্থিতি ছিল নগণ্য। স্টলের সামনে ইটের সলিংয়ের তৈরি রাস্তা দিয়ে হাঁটছেন অনেকে। অনেকে বই দেখছেন।

সূর্যোদয় প্রকাশনীর বিক্রেতা রিপন আলী বলেন, প্রথম দিন তো কাদাপানির মধ্যেই দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে। তখনো মানুষ ছিলেন। এখন ইট বিছানোর পর আরও বেশি মানুষ আসছেন, ভিড়ও করছেন, কিন্তু বই কিনছেন খুব কম।

ঐতিহ্য প্রকাশনীর স্টলে কাদার ওপর চেয়ার পেতে বসে থাকতে দেখা গেল বিক্রয়কর্মী ও চিত্রশিল্পী অর্ণব পাল সন্তুকে। তিনি বলেন, মানুষ আসছেন, ঘুরে দেখছেন, কিন্তু বিক্রি নেই বললেই চলে। মেলার ব্যবস্থাপনা আরও ভালো হতে পারত। আরেক বিক্রেতা আবদুল্লাহ হীল বাকি জানালেন, এমনও স্টল আছে, যেখানে সারা দিনে ২০০ থেকে ৩০০ টাকার বইও বিক্রি হচ্ছে না।

তবে হতাশার ভিড়ে আশার কথাও শোনালেন কেউ কেউ। চট্টগ্রাম থেকে আসা নন্দন বইঘর প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী সুব্রত কান্তি চৌধুরী বলেন, বেচাবিক্রি আজ না হোক কাল হবে। মানুষ যে মেলায় এসে বই হাতে নিয়ে দেখছেন, এটাই বড় পাওয়া। এতে তাঁদের মধ্যে বই কেনার আগ্রহ তৈরি হবে।

মেলায় আসা পাঠকদের মধ্যে অবশ্য ভিন্ন চিত্র। দুই সন্তানের জন্য শিশুতোষ বই কিনে এক অভিভাবক বলেন, বাচ্চাদের হাতে বই তুলে দেওয়ার আনন্দটাই অন্য রকম।
মেলা থেকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম ও তারাশঙ্কর বন্দ্যোপ্যাধ্যায়ের বই কিনেছেন মনির হোসেন। তিনি বলেন, মেলায় একসঙ্গে অনেক বই পাওয়া যায়, যা বই কেনার জন্য দারুণ সুযোগ।

রাজশাহী কালেক্টরেট মাঠে বইমেলা উপলক্ষে আয়োজন করা হয়েছে আলোচনা সভা। গতকাল রোববার সন্ধ্যায়

সম্পর্কিত নিবন্ধ