এমপিদের বিনামূল্যে গাড়ি দেওয়ার পরিকল্পনার প্রতিবাদে পূর্ব তিমুরে ব্যাপক বিক্ষোভ
Published: 17th, September 2025 GMT
আইনপ্রণেতাদের (এমপি) বিনামূল্যে গাড়ি দেওয়ার পরিকল্পনা প্রতিবাদে পূর্ব তিমুরে হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ করেছে। মঙ্গলবার বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনার পরে সরকার আইনপ্রণেতাদের বিনামূল্যে গাড়ি দেওয়ার পরিকল্পনা বাতিল করেছে বলে বুধবার জানিয়েছে বিবিসি।
মঙ্গলবার বিক্ষোভকারীরা সড়কে টায়ার পুড়িয়ে বিক্ষোভ করে এবং একটি সরকারি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়ে পাল্টা জবাব দেয়। এই সংঘাতের কয়েক ঘন্টা পরে সরকার জনসাধারণের চাপের কাছে মাথা নত করে এবং পরিকল্পনা বাতিল করে। তবে এরপরেও বুধবার অনেকেই রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করেছেন।
একজন বিক্ষোভকারী বিবিসিকে জানান, বুধবার রাজধানী দিলিতে প্রায় দুই হাজার বিক্ষোভকারীর সমাবেশ করেছে।
এর কারণ হিসেবে বিক্ষোভকারীরা জানিয়েছেন, তারা এখন অবসরপ্রাপ্ত আইনপ্রণেতাদের আজীবন পেনশন বাতিলের দাবি জানাচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ছাত্রী বিবিসিকে জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের সামনে থাকাকালে তিনি কাঁদানে গ্যাসের শিকার হন।
তিনি বলেন, “(তাদের) জনগণ যখন কষ্ট পাচ্ছে, তখন তারা কাজের জন্য বিলাসবহুল গাড়ি কিনতে চান।”
ইন্টার-পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে পূর্ব তিমুরের আইন প্রণেতাদের বার্ষিক মূল বেতন ছিল ৩৬ হাজার মার্কিন ডলার।
এটি দেশের গড় আয়ের ১০ গুণেরও বেশি। ২০২১ সালের একটি সরকারি প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশটির মানুষের গড় আয় তিন হাজার ডলার।
আইন প্রণেতাদের গাড়ি কেনার পরিকল্পনা নতুন কিছু নয়। ২০০০ সাল থেকে আইন প্রণেতাদের বিনামূল্যে গাড়ি প্রদানের বিরুদ্ধে নিয়মিত বিক্ষোভ হয়ে আসছে।
বিক্ষোভের নেতৃত্বদানকারী অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব সেজারিও সিজার বিবিসিকে জানান, ২০০৮ সালে এমপিদের জন্য নতুন গাড়ি কেনার জন্য ১০ লাখ ডলার খরচ করার পরিকল্পনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার জন্য পুলিশ বেশ কয়েকজন ছাত্রকে গ্রেপ্তার করেছিল।
নেপাল থেকে ইন্দোনেশিয়া পর্যন্ত এশিয়ার দেশগুলোতে আইনপ্রণেতাদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে তরুণরা বিক্ষোভ করছে। ইতিমধ্যে তরুণদের বিক্ষোভে শ্রীলংকা, বাংলাদেশ ও নেপালে সরকার পতন ঘটেছে।
ঢাকা/শাহেদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র জন য সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
রাজশাহীতে বইমেলায় বিক্রি কম, এখনো আশায় আছেন প্রকাশকেরা
রাজশাহী বিভাগীয় বইমেলার প্রথম তিন দিনে লোকজনের ভিড় থাকলেও বেচাকেনা তেমন হয়নি। এতে অনেক প্রকাশকের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। তবে আগামী কয়েক দিনে বেচাকেনা বাড়বে বলে আশা করছেন প্রকাশকেরা ও আয়োজক কর্তৃপক্ষ।
গত শুক্রবার রাজশাহী জেলা কালেক্টরেট মাঠে ৯ দিনব্যাপী এই বইমেলার উদ্বোধন করা হয়। সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায়, জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের উদ্যোগে এবং রাজশাহী বিভাগীয় প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় আয়োজিত এ মেলা চলবে ৮ নভেম্বর পর্যন্ত। মেলায় ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ৭০টি বেসরকারি প্রকাশনাসহ মোট ৮১টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। সাপ্তাহিক ছুটির দিন বাদে মেলা চলছে বেলা ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। আর ছুটির দিনে মেলা শুরু হয় বেলা ১১টায়।
উদ্বোধনের আগের দিন বৃষ্টিতে মেলার মাঠ কাদাপানিতে একাকার হয়ে যায়। সেই কর্দমাক্ত পরিবেশেই মেলার উদ্বোধন হয়। দর্শনার্থীদের ভোগান্তি কমাতে পরে প্রতিটি স্টলের সামনে ইট বিছিয়ে দেওয়া হয়। এতে কিছুটা স্বস্তি ফিরলেও বিক্রির খরা কাটেনি বলে জানালেন বিক্রেতারা।
গতকাল রোববার সন্ধ্যায় মেলা প্রাঙ্গণে গিয়ে দেখা যায়, মাঠের বিভিন্ন অংশে তখনো পানি জমে আছে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য নির্ধারিত মঞ্চের সামনের প্যান্ডেলেও কাদা। সেখানেই কাজী নজরুল ইসলামের জীবন ও সাহিত্য নিয়ে আলোচনা চলছিল, তবে দর্শক-শ্রোতার উপস্থিতি ছিল নগণ্য। স্টলের সামনে ইটের সলিংয়ের তৈরি রাস্তা দিয়ে হাঁটছেন অনেকে। অনেকে বই দেখছেন।
সূর্যোদয় প্রকাশনীর বিক্রেতা রিপন আলী বলেন, প্রথম দিন তো কাদাপানির মধ্যেই দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে। তখনো মানুষ ছিলেন। এখন ইট বিছানোর পর আরও বেশি মানুষ আসছেন, ভিড়ও করছেন, কিন্তু বই কিনছেন খুব কম।
ঐতিহ্য প্রকাশনীর স্টলে কাদার ওপর চেয়ার পেতে বসে থাকতে দেখা গেল বিক্রয়কর্মী ও চিত্রশিল্পী অর্ণব পাল সন্তুকে। তিনি বলেন, মানুষ আসছেন, ঘুরে দেখছেন, কিন্তু বিক্রি নেই বললেই চলে। মেলার ব্যবস্থাপনা আরও ভালো হতে পারত। আরেক বিক্রেতা আবদুল্লাহ হীল বাকি জানালেন, এমনও স্টল আছে, যেখানে সারা দিনে ২০০ থেকে ৩০০ টাকার বইও বিক্রি হচ্ছে না।
তবে হতাশার ভিড়ে আশার কথাও শোনালেন কেউ কেউ। চট্টগ্রাম থেকে আসা নন্দন বইঘর প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী সুব্রত কান্তি চৌধুরী বলেন, বেচাবিক্রি আজ না হোক কাল হবে। মানুষ যে মেলায় এসে বই হাতে নিয়ে দেখছেন, এটাই বড় পাওয়া। এতে তাঁদের মধ্যে বই কেনার আগ্রহ তৈরি হবে।
মেলায় আসা পাঠকদের মধ্যে অবশ্য ভিন্ন চিত্র। দুই সন্তানের জন্য শিশুতোষ বই কিনে এক অভিভাবক বলেন, বাচ্চাদের হাতে বই তুলে দেওয়ার আনন্দটাই অন্য রকম।
মেলা থেকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম ও তারাশঙ্কর বন্দ্যোপ্যাধ্যায়ের বই কিনেছেন মনির হোসেন। তিনি বলেন, মেলায় একসঙ্গে অনেক বই পাওয়া যায়, যা বই কেনার জন্য দারুণ সুযোগ।