চকরিয়া থানার ওসিসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা
Published: 18th, September 2025 GMT
কক্সবাজারের চকরিয়া থানাহাজতে যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি), চকরিয়া সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষকসহ ৯ জনের নামে মামলা হয়েছে। আদালতের নির্দেশের পর গতকাল বুধবার এ মামলা হয়। মামলার বাদী হয়েছেন নিহত যুবক দুর্জয় চৌধুরীর বাবা কমল চৌধুরী। এর আগে গত রোববার শুনানি শেষে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক (ভারপ্রাপ্ত) মো.
মামলার বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেন চকরিয়া থানার ওসি তৌহিদুল আনোয়ার। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, আদালতের নির্দেশের নথি থানায় পৌঁছার পর মামলা নেওয়া হয়েছে।
মামলার আসামিরা হলেন চকরিয়া থানার তৎকালীন ওসি মো. শফিকুল ইসলাম, থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) হানিফ মিয়া, কনস্টেবল মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ও ইশরাত হোসেন, চকরিয়া সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রাবেয়া খানম, সহকারী শিক্ষক জসিম উদ্দিন ও মোস্তফা কামাল, অফিস সহায়ক মো. পারভেজ ও প্রহরী নুর মোহাম্মদ। এ ছাড়া এ ঘটনায় পাঁচজনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বাদী কমল চৌধুরী উল্লেখ করেন, আসামিদের যোগসাজশে থানাহাজতে দুর্জয় চৌধুরীকে শারীরিক নির্যাতনের পর শ্বাস রোধ করে হত্যা করা হয়েছে। জানতে চাইলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘নানা চাপ ও আর্থিক প্রলোভনে নত না হয়ে আমি ছেলের হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে মামলা করেছি। আমি আসামিদের শাস্তি চাই।’
গত ২২ আগস্ট সকালে চকরিয়া থানাহাজত থেকে চকরিয়া সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর দুর্জয় চৌধুরীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। বিদ্যালয়ের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে আগের দিন রাত ১০টার দিকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রাবেয়া খানম দুর্জয় চৌধুরীকে থানায় সোপর্দ করেছিলেন।
লাশ উদ্ধারের এ ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর সনাতন সম্প্রদায়ের লোকজন ক্ষুব্ধ হন। তাঁরা চকরিয়া থানা ঘেরাও, মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল ও চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক অবরোধ করেন। পরে চকরিয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার অভিজিৎ দাস ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রূপায়ণ দেবের আশ্বাসে আন্দোলন স্থগিত করা হয়। এ ঘটনায় ওসি মো. শফিকুল ইসলামকে কক্সবাজার পুলিশ নিয়ন্ত্রণকক্ষের ইনচার্জ পদে বদলি করা হয়। এ ছাড়া চকরিয়া থানা থেকে প্রত্যাহার করা হয় এএসআই হানিফ মিয়া, কনস্টেবল মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ও ইশরাত হোসেনকে। এ ছাড়া চকরিয়া সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রাবেয়া খানমকে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: দ র জয় চ ধ র সহক র সরক র চকর য়
এছাড়াও পড়ুন:
চলন্ত অবস্থায় বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করতে সক্ষম সড়ক চালু ফ্রান্সে
জ্বালানিসাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব হওয়ায় বর্তমানে বিশ্বব্যাপী বৈদ্যুতিক গাড়ির উৎপাদন ও ব্যবহার বাড়ছে। তবে এসব গাড়ি বাসা বা নির্দিষ্ট স্থানেই শুধু চার্জ করা যায়। ফলে দূরে ভ্রমণের সময় গাড়ির চার্জ শেষ হয়ে গেলে বিপদে পড়েন অনেকেই। এ সমস্যা সমাধানে তারের সংযোগ ছাড়াই বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করতে সক্ষম ১ দশমিক ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ‘ওয়্যারলেস চার্জিং সড়ক’ চালু করেছে ফ্রান্স। প্যারিসের উপকণ্ঠে চালু হওয়া সড়কটিতে চলাচলের সময় বিভিন্ন ধরনের বৈদ্যুতিক গাড়ি, বাস ও ভারী ট্রাকের ব্যাটারি স্বয়ংক্রিয়ভাবে চার্জ হয়ে যাবে।
বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করার জন্য সড়কটিতে নিরবচ্ছিন্নভাবে ২০০ কিলোওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে। প্রয়োজনে সেটি ৩০০ কিলোওয়াট পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে, যা টেসলার ভি থ্রি সুপারচার্জারের মতো বিশ্বের দ্রুততম চার্জারগুলোর সমান শক্তি সরবরাহ করতে সক্ষম। এই সড়কের নিচে স্থাপন করা হয়েছে অসংখ্য তামার কুণ্ডলী। এসব কুণ্ডলী চৌম্বক ক্ষেত্র তৈরি করে, যা বিশেষ রিসিভারযুক্ত বৈদ্যুতিক গাড়িতে শক্তি স্থানান্তর করে। পদ্ধতিটি অনেকটা ওয়্যারলেস চার্জিং প্রযুক্তির মতো, যেখানে পাওয়ার ব্যাংক বা চার্জিং প্যাডে মোবাইল ফোন রেখে চার্জ নেওয়া হয়। চৌম্বক ক্ষেত্রের মাধ্যমে বিদ্যুৎ স্থানান্তর হওয়ায় ভারী বৃষ্টি, বরফ বা তুষারপাতেও চার্জিং প্রক্রিয়ায় কোনো ব্যাঘাত ঘটে না। দ্রুত চার্জিং সুবিধার ফলে গাড়ি ও ট্রাক এখন দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে পারবে, মাঝপথে চার্জ নিতে থামার প্রয়োজন হবে না। ফলে গাড়িতে বড় ও ভারী ব্যাটারি বহনের প্রয়োজনীয়তা অনেক কমে যাবে।
এরেনা ইভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই স্বয়ংক্রিয় চার্জিং সড়কে মাত্র কয়েক মিনিট চললেই বৈদ্যুতিক গাড়ির রেঞ্জ বা চলার সক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ে। ফলে বৈদ্যুতিক গাড়ির দীর্ঘ যাত্রায় চার্জ ফুরিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা সমাধানে প্রযুক্তিটি নতুন সম্ভাবনা দেখাচ্ছে। প্রযুক্তিটি যদি ব্যাপকভাবে চালু করা যায়, তবে তুলনামূলকভাবে হালকা, সাশ্রয়ী এবং কম ব্যাটারিসমৃদ্ধ বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরি করা সম্ভব হবে। এতে গাড়ির উৎপাদন খরচও কমবে বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ইলেকট্রিওনের তৈরি সড়কটির নকশাতেও রয়েছে বাড়তি সুবিধা। বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করার প্রযুক্তি রাস্তার ভেতরের অংশে থাকায় ক্ষয়ক্ষতির ঝুঁকি কম। ফ্রান্সের পরিবহন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০৩৫ সালের মধ্যে দেশজুড়ে প্রায় ৯ হাজার কিলোমিটার ওয়্যারলেস চার্জিং সড়ক নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে, যাতে বৈদ্যুতিক যানবাহন চলাচল আরও সহজ, কার্যকর ও পরিবেশবান্ধব হয়ে ওঠে।
সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস