কাঙ্ক্ষিত আত্মহত্যা
কে তুমি বিষণ্ন পাহাড়
অবাধ লাভার উদ্গিরণে হয়ে ওঠো নিষ্কাম চিৎকার?
সার বেঁধে ডুবে যাওয়া বিমর্ষ কামিজের কিনার অথবা
ঐন্দ্রজালিক নিশ্বাসে পাড়ি জমানো পরিত্যক্ত আপেলবাগান—
ভ্রম? ম্লান নখের মায়া—আকাঙ্ক্ষার বাতাসে লালিত সফেদ অন্ধকার।
ভ্রম? নিহত জলের ঘ্রাণ—অপাপবিদ্ধ মীনবালিকার নির্জন হাহাকার।
একে একে চলে যায় সন্ধ্যার মালতী, অনিচ্ছুক চিবুক
ফেলে আসা পাঁজরের একান্ত উঠান;
তবু থাকে বিনীত অশ্বত্থ—অতৃপ্ত নিশ্বাস।
সন্ধ্যার ভাগীরথী জানে—
তেরো শ বকুল কেন ঝরে পড়ে জলভর্তি ময়ূরের নামে।
বেদনাহীন গ্রীবায় তুলে রাখা স্রোতের মৃত্যু হলে
মনে রেখো, সুদূর পরিযায়ী ডানার ফিরে আসার কথা
ছায়াহীন জামগাছে তখনো আর্তনাদের জলজ বিভ্রম।
সুযোগে বেরিয়ে পড়ে হারানো আত্মহত্যা—ব্লাউজের মোড়
ফিকে আলোয় ঝলসে ওঠে স্যাঁতসেঁতে নটী—দ্রুতশ্বাস গাড়ি
আর মন্থর আঙুলে ফোটে অশ্রান্ত বালিকাবিলাস।
হে কোঁচকানো ঊরুর ছায়ায় বেড়ে ওঠা উদোম আত্মকথা,
অলৌকিক ঝাড়বাতি, কামোদ্রেক নীরবতা
অথবা ভুল প্রেমে ভেসে যাওয়া লালিত কোমল, মনে রেখো—
অশ্রুত শীৎকারে দেখা মেলে জামদানি নখের কিনার।
প্রণয়ের আয়োজনে—গোপন করোটিসন্ধ্যায়
জেগে ওঠে যূথচারী বকুল—জেগে ওঠে নিশ্চিন্দিপুর—
পুরোনো খোলস—অগণন চোখ মেলে জেগে ওঠে বিবস্ত্র উনুন।
শ্বাশত নির্বাসনের নামে ভুলে যাও সময়ের জমাট উল্লাস
দিনব্যাপী পাড়ি দাও অন্ধ শালিকের গোপন চৌকাঠ
তবু উল্লাস! কেড়ে নেয় জোনাকির আড়াল—নিমগ্ন দেহের উঠান—
সিঁধ কেটে তুলে আনে একান্ত হননের ঘ্রাণ।
সময়ের মুখোশ ছেড়ে বেরিয়ে আসে যে চূড়ান্ত নাটাই
জমাট কামিজের রক্তে লিখো তার সামরিক দীর্ঘশ্বাস,
নয়নতারার বুক চিরে ডানা মেলা শালিকের দল জানে—
শীতার্ত বালিকার স্লেজে আসে কোন পরিযায়ী আয়না!
তবু সন্ধ্যা হলেই বুকের পাশে আয়না খেলা করে
মৃতের নামে ভুলে যায় মার্চের শেষ সূর্য
জেগে ওঠে হাজার নর্তকী—জেগে ওঠে নাভিশ্বাস—
ক্ষীণ কটির হাত ধরে চলে আসে পবিত্র ভাতার।
অথচ অন্ধকারের পাঠশালা ঘেঁটে মনে পড়ে বিগত জন্মের কথা—
আয়না খেলার দিন অথবা হুটহাট এঁকে ফেলা হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালা।
নত হয় সেমিজের দৈর্ঘ্য, সোমেশ্বরীর বুক— নত হয় অশোকের অনুজ;
দ্বিপ্রহরের ছায়াহীন নখ; স্থির দৃশ্য অথবা ম্রিয়মাণ কৈশোর
যেন পরিপুষ্ট নিমের আড়ালে জেগে থাকা মেলানকলি হোর!
কবে থেকে হয়ে আছি নদীর কিনার—পাহাড়ের ঢালে লুকিয়ে থাকা সহসা স্রোত,
পুরাতন তামাকখেতের নির্বাসিত ফুল; উপক্রমনিকার খোঁজে হারিয়ে যাওয়া ওমের বকুল।
এক স্বচ্ছ শীতকাল এসে ঠিকঠাক এঁকে নেয় দৃশ্যর কোণ—আকণ্ঠ নদীর কিনার।
আমাকে ধারণ করে গল্পের জ্বলজ্বলে মাছ; বিপরীতে হেঁটে চলা দুর্বোধ্য পাহাড়।
ই–মেইল: [email protected].
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সন ধ য
এছাড়াও পড়ুন:
গণভোট নিয়ে মতভেদে উপদেষ্টা পরিষদের উদ্বেগ
জুলাই জাতীয় সনদ বা সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে মতভেদ দেখা দিয়েছে, তাতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজ উদ্যোগে নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করে সম্ভাব্য দ্রুতত সময়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে ঐক্যবদ্ধ দিকনির্দেশনা দেওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে।
সোমবার (৩ নভেম্বর) দুপুরে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে এ তথ্য জানানো হয়। যদিও এর আগেই এক সংবাদ সম্মেলনে এমন কথায় জানান আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল।
প্রেস উইং জানায়, জাতীয় ঐক্যমত কমিশন থেকে প্রণীত জুলাই সনদ এবং এর বাস্তবায়ন সংক্রান্ত বিষয়ে উপদেষ্টা পরিষদের একটি জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সংস্কার বিষয়ে ঐকমত্য স্থাপনের প্রচেষ্টার জন্য এবং বহু বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার জন্য ঐকমত্য কমিশন ও রাজনৈতিক দলগুলির প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করা হয়।
এতে বলা হয়, উপদেষ্টা পরিষদের সভায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবিত জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) আদেশ চূড়ান্তকরণ এবং এতে উল্লেখিত গণভোট আয়োজন ও গণভোটের বিষয়বস্তু নিয়ে আলোচনা করা হয়। এতে লক্ষ্য করা হয় যে, ঐকমত্য কমিশনে দীর্ঘদিন আলোচনার পরও কয়েকটি সংস্কারের সুপারিশ বিষয়ে ভিন্ন মত রয়েছে। এছাড়া, গণভোট কবে অনুষ্ঠিত হবে ও এর বিষয়বস্তু কী হবে এসব প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে মতভেদ দেখা দিয়েছে সে জন্য সভায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। এই পরিপ্রেক্ষিতে গণভোটের সময় কখন হবে, গণভোটের বিষয়বস্তু কী হবে, জুলাই সনদে বর্ণিত ভিন্নমতগুলো প্রসঙ্গে কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে তা নিয়ে ঐক্যমত কমিশনের প্রস্তাবগুলোর আলোকে জরুরী ভিত্তিতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা প্রয়োজন বলে সভা অভিমত ব্যক্ত করে।
এসব ক্ষেত্রে ফ্যসিবাদবিরোধী আন্দোলনের দীর্ঘদিনের মিত্র রাজনৈতিক দলগুলোকে স্বীয় উদ্যোগে নিজেদের মধ্যে আলাপ আলোচনা করে দ্রুততম সময়ে ( সম্ভব হলে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে) সরকারকে ঐক্যবদ্ধ দিকনির্দেশনা প্রদান করার আহ্বান জানানো হয়। এমন নির্দেশনা পেলে সরকারের পক্ষে সিদ্ধান্ত গ্রহণ অনেক সহজ হবে। বলেও উল্লেখ করা হয়। পরিস্থিতিতে কালক্ষেপণের যেকোনো সুযোগ নাই সেটাও সবার বিবেচনায় রাখার জন্য বলা হয়।
সভায় ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্থে আগামী সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে সরকারের সংকল্প পুনর্ব্যক্ত করা হয়।
রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে ঐক্যবদ্ধ নির্দেশনা না পেলে কী হবে এমন প্রশ্নের জবাবে আইন উপদেষ্টা বলেন, “রাজনৈতিক দলগুলো নিজেরা আলাপ-আলোচনা করে এই বিষয়েও আমাদের একটি ঐক্যবদ্ধ নির্দেশনা দেবে—এ প্রত্যাশা করছি। ওনারা যদি আলাপ-আলোচনা করেন, আমাদের জন্য কাজটি অত্যন্ত সহজ হয়। ওনারা যদি ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত দিতে না পারে, অবশ্যই সরকার সরকারের মতো সিদ্ধান্ত নেবে।”
ঢাকা/ইভা