দক্ষিণ বারিধারায় জমে উঠেছে ‘প্রথম আলো আনন্দমেলা’
Published: 19th, September 2025 GMT
রাজধানী ঢাকার মেরুল বাড্ডার দক্ষিণ বারিধারা সোসাইটি মাঠে শিশু-কিশোরদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে ‘প্রথম আলো আনন্দমেলা’।
দক্ষিণ বারিধারা এলাকায় বসবাসকারীদের নিয়ে আজ শুক্রবার সকাল আটটায় এই আনন্দমেলা শুরু হয়। চলবে রাত আটটা পর্যন্ত।
আজ সকাল আটটার কিছু আগে মাঠে গিয়ে দেখা যায়, অভিভাবকেরা সন্তানদের নিয়ে আসছেন। সবার হাতে হাতে আঁকাআঁকির রং, পেনসিল, তুলি, খাতা, স্কেলসহ অন্যান্য সরঞ্জাম।
মাঠে আসার পর চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে ইচ্ছুক শিশু-কিশোরদের মঞ্চের সামনে বিছানো কার্পেটে সারিবদ্ধভাবে বসিয়ে দেওয়া হয়। অংশগ্রহণকারী বেশি থাকায় অনেককে বসানো হয় মঞ্চে।
সকাল সাড়ে আটটায় চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা শুরু হয়। সঞ্চালক এক থেকে দশ গুনে প্রতিযোগিতা শুরুর সংকেত দেন। শিশু-কিশোরেরা লেগে পড়ে রংতুলি দিয়ে আঁকার কাগজ রঙিন করে তুলতে।
আর সন্তানদের নিয়ে আসা অভিভাবকেরা পাশে দাঁড়িয়ে কিংবা বসে আঁকাআঁকি দেখতে থাকেন। এই প্রতিযোগিতায় কয়েক শ শিশু-কিশোরকে অংশগ্রহণ করতে দেখা যায়।
মঞ্চে পাশাপাশি বসে আঁকছিল দুই ভাই মেহরাব তালহা ও মাহির তাহমিদ। পাশে দাঁড়িয়ে থাকা তাদের বাবা মনিরুজ্জামান জানান, মেহরাব দ্বিতীয় শ্রেণিতে আর মাহির নার্সারিতে পড়ে।
মনিরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, বড় ছেলের স্কুল মাঠের পাশেই। স্কুলে ছেলেকে আনা-নেওয়ার সময় তাঁর চোখে পড়ে এই মাঠে আনন্দমেলা অনুষ্ঠান আছে। পরে দুই ছেলেকে আগেই বলে রেখেছিলেন তাদের এখানে অংশগ্রহণ করাবেন। চিত্রাঙ্কনে ছোট ছেলে মাহিরের ঝোঁক বেশি বলে জানান তিনি।
প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া মেহরাব জাতীয় স্মৃতিসৌধ আর মাহির শহীদ মিনারের ছবি আঁকছিল।
আনন্দমেলায় শিশু-কিশোরদের জন্য বিস্কুট দৌড়, মার্বেল দৌড়, চকলেট দৌড়সহ দিনব্যাপী বিভিন্ন প্রতিযোগিতা থাকছে।
এ ছাড়া মঞ্চে জাদু দেখানো, পুতুল নাচ, রোবট শো, মাসকট শোসহ আরও অনেক আয়োজন রয়েছে।
আয়োজকেরা জানান, দুপুরের পর বাবা-মায়েদের জন্য আকর্ষণীয় প্রতিযোগিতা রয়েছে। প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের জন্য থাকবে উড়োজাহাজের টিকিটসহ বিভিন্ন আকর্ষণীয় পুরস্কার।
‘প্রথম আলো আনন্দমেলা’র টাইটেল স্পনসর এসিআই পিওর। ব্যবস্থাপনায় সহযোগী হিসেবে আছে দক্ষিণ বারিধারা সোসাইটি ও দক্ষিণ বারিধারা ইয়ুথ ক্লাব।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প রথম আল
এছাড়াও পড়ুন:
রাজশাহীতে বইমেলায় বিক্রি কম, এখনো আশায় আছেন প্রকাশকেরা
রাজশাহী বিভাগীয় বইমেলার প্রথম তিন দিনে লোকজনের ভিড় থাকলেও বেচাকেনা তেমন হয়নি। এতে অনেক প্রকাশকের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। তবে আগামী কয়েক দিনে বেচাকেনা বাড়বে বলে আশা করছেন প্রকাশকেরা ও আয়োজক কর্তৃপক্ষ।
গত শুক্রবার রাজশাহী জেলা কালেক্টরেট মাঠে ৯ দিনব্যাপী এই বইমেলার উদ্বোধন করা হয়। সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায়, জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের উদ্যোগে এবং রাজশাহী বিভাগীয় প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় আয়োজিত এ মেলা চলবে ৮ নভেম্বর পর্যন্ত। মেলায় ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ৭০টি বেসরকারি প্রকাশনাসহ মোট ৮১টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। সাপ্তাহিক ছুটির দিন বাদে মেলা চলছে বেলা ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। আর ছুটির দিনে মেলা শুরু হয় বেলা ১১টায়।
উদ্বোধনের আগের দিন বৃষ্টিতে মেলার মাঠ কাদাপানিতে একাকার হয়ে যায়। সেই কর্দমাক্ত পরিবেশেই মেলার উদ্বোধন হয়। দর্শনার্থীদের ভোগান্তি কমাতে পরে প্রতিটি স্টলের সামনে ইট বিছিয়ে দেওয়া হয়। এতে কিছুটা স্বস্তি ফিরলেও বিক্রির খরা কাটেনি বলে জানালেন বিক্রেতারা।
গতকাল রোববার সন্ধ্যায় মেলা প্রাঙ্গণে গিয়ে দেখা যায়, মাঠের বিভিন্ন অংশে তখনো পানি জমে আছে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য নির্ধারিত মঞ্চের সামনের প্যান্ডেলেও কাদা। সেখানেই কাজী নজরুল ইসলামের জীবন ও সাহিত্য নিয়ে আলোচনা চলছিল, তবে দর্শক-শ্রোতার উপস্থিতি ছিল নগণ্য। স্টলের সামনে ইটের সলিংয়ের তৈরি রাস্তা দিয়ে হাঁটছেন অনেকে। অনেকে বই দেখছেন।
সূর্যোদয় প্রকাশনীর বিক্রেতা রিপন আলী বলেন, প্রথম দিন তো কাদাপানির মধ্যেই দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে। তখনো মানুষ ছিলেন। এখন ইট বিছানোর পর আরও বেশি মানুষ আসছেন, ভিড়ও করছেন, কিন্তু বই কিনছেন খুব কম।
ঐতিহ্য প্রকাশনীর স্টলে কাদার ওপর চেয়ার পেতে বসে থাকতে দেখা গেল বিক্রয়কর্মী ও চিত্রশিল্পী অর্ণব পাল সন্তুকে। তিনি বলেন, মানুষ আসছেন, ঘুরে দেখছেন, কিন্তু বিক্রি নেই বললেই চলে। মেলার ব্যবস্থাপনা আরও ভালো হতে পারত। আরেক বিক্রেতা আবদুল্লাহ হীল বাকি জানালেন, এমনও স্টল আছে, যেখানে সারা দিনে ২০০ থেকে ৩০০ টাকার বইও বিক্রি হচ্ছে না।
তবে হতাশার ভিড়ে আশার কথাও শোনালেন কেউ কেউ। চট্টগ্রাম থেকে আসা নন্দন বইঘর প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী সুব্রত কান্তি চৌধুরী বলেন, বেচাবিক্রি আজ না হোক কাল হবে। মানুষ যে মেলায় এসে বই হাতে নিয়ে দেখছেন, এটাই বড় পাওয়া। এতে তাঁদের মধ্যে বই কেনার আগ্রহ তৈরি হবে।
মেলায় আসা পাঠকদের মধ্যে অবশ্য ভিন্ন চিত্র। দুই সন্তানের জন্য শিশুতোষ বই কিনে এক অভিভাবক বলেন, বাচ্চাদের হাতে বই তুলে দেওয়ার আনন্দটাই অন্য রকম।
মেলা থেকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম ও তারাশঙ্কর বন্দ্যোপ্যাধ্যায়ের বই কিনেছেন মনির হোসেন। তিনি বলেন, মেলায় একসঙ্গে অনেক বই পাওয়া যায়, যা বই কেনার জন্য দারুণ সুযোগ।