ইয়াবাসহ এক নারীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তবে চালাকি করে পুলিশের কাছে নিজের পরিচয় গোপন করেন ওই নারী, দেন ভুল নাম-ঠিকানা। পুলিশও সেই নাম-ঠিকানা অনুযায়ী মামলা করে। মাদক মামলাটিতে কারাগারে যাওয়ার ২৭ দিনের মাথায় ওই নারী জামিনে মুক্তি পান। এরই মধ্যে মামলার তদন্তের অংশ হিসেবে পরিচয় যাচাইয়ের জন্য আসামির নাম-ঠিকানা সংশ্লিষ্ট থানায় পাঠান তদন্ত কর্মকর্তা। তবে সেখান থেকে জানানো হয়, ঠিকানাটিতে ওই নামের কোনো নারীই নেই।

গত ১৯ আগস্ট চট্টগ্রাম নগরের বাকলিয়া গোলচত্বর এলাকায় ঢাকাগামী একটি যাত্রীবাহী বাস থেকে ৩১০টি ইয়াবাসহ ওই নারী গ্রেপ্তার হন। মামলার এজাহারে তাঁর নাম লেখা হয়েছে রাবেয়া বেগম, বাবার নাম ফরিদুল আলম, বাড়ি কক্সবাজার জেলার রামু থানার হোয়াইগারকাটা গ্রামে। মামলার বাদী বাকলিয়া থানার উপপরিদর্শক কিশোর মজুমদার।

এদিকে পুলিশ খুঁজে না পেলেও কারাগারে নেওয়া আঙুলের ছাপে ওই নারীর আসল পরিচয় উঠে আসে। জাতীয় পরিচয়পত্রের ডেটাবেজ (তথ্যভান্ডার) অনুযায়ী, ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার ওই নারীর নাম বেগম মর্তুজা হোসাইন। তিনি কক্সবাজারের সদর উপজেলার দক্ষিণ মুহুরীপাড়ার নুর হোসেনের স্ত্রী। তাঁর বাবার নাম মাহবুবুল আলম।

প্রথমে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জামিনের আবেদন করেন ওই নারী। সেখানে নামঞ্জুর হলে গত ২৭ আগস্ট মহানগর দায়রা জজ আদালতে আবেদন করা হয়। সেখানেও জামিন আবেদন নামঞ্জুর হয়। পরে গত সোমবার একই আদালত তাঁকে জামিন দেন। সেদিনই কারাগার থেকে বেরিয়ে যান ওই নারী।

কারা কর্তৃপক্ষ ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, গ্রেপ্তারের পরদিন ২০ আগস্ট মাদক মামলার আসামি ওই নারীকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। এরপর প্রথমে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জামিনের আবেদন করেন ওই নারী। সেখানে নামঞ্জুর হলে ২৭ আগস্ট মহানগর দায়রা জজ আদালতে আবেদন করা হয়। সেখানেও জামিন আবেদন নামঞ্জুর হয়। পরে গত সোমবার একই আদালত তাঁকে জামিন দেন। সেদিনই কারাগার থেকে বেরিয়ে যান ওই নারী।

ভুল নাম-ঠিকানা দিয়ে ওই নারীকে আসামি করা প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হয় বাকলিয়া থানার উপপরিদর্শক কিশোর মজুমদারের কাছে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, আটকের পর আসামি যে নাম-ঠিকানা বলেছেন, সেই অনুযায়ী এজাহারে লেখা হয়েছে। আসামি সঠিকভাবে নাম-ঠিকানা দিয়েছেন কি না কীভাবে নিশ্চিত হয়েছেন, এমন প্রশ্নের উত্তরে কিশোর মজুমদার বলেন, আসামিকে আদালতে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পাঠানোর তাগিদ থাকায় দ্রুত এজাহার দিয়ে দেওয়া হয়।

মামলাটির তদন্ত করছেন বাকলিয়া থানার উপপরিদর্শক ফরহাদ মকিম। জানতে চাইলে ফরহাদ মকিম প্রথম আলোকে বলেন, ওই আসামির প্রকৃত নাম-ঠিকানা তিনি জানেন না। এজাহারে থাকা ঠিকানা সঠিক নয় বলে সংশ্লিষ্ট থানার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। তাই মুঠোফোন নম্বরের সূত্র ধরে ওই নারীর ঠিকানা বের করার চেষ্টায় রয়েছেন তিনি। কারাগারে আঙুলের ছাপে ওই নারীর প্রকৃত পরিচয় উঠে আসার বিষয়টিও জানা নেই বলে জানান ফরহাদ হাকিম।

আসামি স্বীকার করেছেন জামিনে বেরিয়ে যাতে আর ধরা না পড়েন, সে জন্য আসল পরিচয় গোপন রেখে ভুয়া নাম-ঠিকানা দিয়েছেন।—মো.

ইকবাল হোসেন, জ্যেষ্ঠ তত্ত্বাবধায়ক, চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার।

কারা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জাতীয় পরিচয়পত্রের ডেটাবেজে (তথ্যভান্ডার) ভোটারদের আঙুলের ছাপ সংরক্ষিত আছে। এ পদ্ধতিকে বলা হয় ফিঙ্গারপ্রিন্ট আইডেনটিফিকেশন অ্যান্ড ভেরিফিকেশন সিস্টেম। ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এ পদ্ধতি ব্যবহার শুরু করে চট্টগ্রাম কারা কর্তৃপক্ষ। এরই মধ্যে আঙুলের ছাপে ধরা পড়েছে অনেক বন্দীর আসল পরিচয়। এসব ঘটনায় মামলাও হয়েছে। ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত আত্মসমর্পণ করে জালিয়াতির মাধ্যমে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে আসা ১৭ জনকে আঙুলের ছাপের মাধ্যমে শনাক্ত করা হয়।

চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জ্যেষ্ঠ তত্ত্বাবধায়ক মো. ইকবাল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, কারাগারে আসা অন্য নতুন আসামির মতো বন্দী রাবেয়া বেগমেরও আঙুলের ছাপ নেওয়া হয়। কিন্তু সেখানে তাঁর জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী ভিন্ন নাম-ঠিকানা আসে। তাঁর প্রকৃত নাম পাওয়া যায় বেগম মর্তুজা হোসাইন। বিষয়টি চিঠি দিয়ে ২৮ আগস্ট আদালতকে জানানো হয়েছে। ইকবাল হোসেন আরও বলেন, আসামি স্বীকার করেছেন জামিনে বেরিয়ে যাতে আর ধরা না পড়েন, সে জন্য আসল পরিচয় গোপন রেখে ভুয়া নাম-ঠিকানা দিয়েছেন।

চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি আবদুস সাত্তার প্রথম আলোকে বলেন, গ্রেপ্তারের পর আসামি যে নাম-ঠিকানা দেন, তা তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি কিংবা চৌকিদারের সঙ্গে যোগাযোগ করে যাচাই-বাছাই করা উচিত। ভুয়া ঠিকানায় আসামির বিরুদ্ধে পরোয়ানা গেলে আর খুঁজে পাওয়া যায় না। এ ছাড়া আসামির স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করে জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর নিয়ে সঠিক নাম-ঠিকানা দেওয়া যায়। তিনি আরও বলেন, এজাহারে নাম-ঠিকানা লেখার আগে পুলিশকে আরও সতর্ক হওয়া উচিত। একই সঙ্গে গাফিলতিকারী পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। না হলে এ ধরনের ঘটনা বাড়তে থাকবে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রথম আল ক ওই ন র র ন ওই ন র আস ম র অন য য় ব কল য় আগস ট

এছাড়াও পড়ুন:

উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএসসি প্রোগ্রাম, জেএসসি ছাড়াও ভর্তি

বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপেন স্কুল পরিচালিত এসএসসি প্রোগ্রামের মানবিক, ব্যবসায় শিক্ষা ও বিজ্ঞান শাখায় ২০২৬-২০২৭ শিক্ষাবর্ষে ভর্তির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ভর্তির যোগ্যতা জেএসসি পাস হতে হবে। জেএসসি ছাড়াদের ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে।

ভর্তির দরকারি তারিখ—

১. অনলাইনে ভর্তি এবং আবেদনের তারিখ শেষ তারিখ: ৩১ জানুয়ারি ২০২৬।

২. অষ্টম শ্রেণি বা সমমানের সনদবিহীন ভর্তি-ইচ্ছুকদের ভর্তি পরীক্ষা : ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৬।

৩. ওরিয়েন্টেশন ও টিউটোরিয়াল ক্লাস শুরু : ১৫ মে ২০২৬।

ভর্তির যোগ্যতা—

১. জেএসসি বা জেডিসি বা অষ্টম শ্রেণি বা সরকার স্বীকৃত সমমানের পরীক্ষায় পাস বা উত্তীর্ণ হতে হবে। (ভর্তির তারিখ ০২/১১/২০২৫ থেকে ৩১/০১/২০২৬)।

২. সরাসরি অনলাইন ভর্তির জন্য: osapsnew.bou.ac.bd

ভর্তির যোগ্যতা(জেএসসি ছাড়া) —

১. যেসব শিক্ষার্থীর জেএসসি বা জেডিসি বা অষ্টম শ্রেণি বা সরকার স্বীকৃত সমমানের সনদপত্র নেই তারাও ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন, এ ক্ষেত্রে বয়স হতে হবে ন্যূনতম ১৪ বছর (৩১/১২/২০২৫ তারিখে)।

২. এসব আবেদনকারীকে যোগ্যতা যাচাইয়ের জন্য বাউবি কর্তৃক নির্ধারিত ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে।

৩. এ জন্য ভর্তির প্রাথমিক আবেদন ফরম ফি বাবদ ৩০০ টাকা দিতে হবে।

৪. ভর্তি পরীক্ষার বিষয়, মানবণ্টন, তারিখ ও পরীক্ষা কেন্দ্র এবং প্রক্রিয়ার বিস্তারিত তথ্য বাউবি’র ওয়েবসাইট, আঞ্চলিক ও উপ-আঞ্চলিক কেন্দ্র এবং স্টাডি সেন্টার থেকে পাওয়া যাবে। (অনলাইনে আবেদনের তারিখ ০২/১১/২০২৫ থেকে ৩১/০১/২০২৬)।

প্রয়োজনীয় কাগজ যা লাগবে—

১. দুই কপি ছবি।

২. জেএসসি বা জেডিসি বা অষ্টম শ্রেণি বা সরকার স্বীকৃত সমমানের পরীক্ষায় পাস বা উত্তীর্ণের সনদ।

৩. জাতীয় পরিচয়পত্র বা অনলাইন জন্মনিবন্ধন সনদের সত্যায়িত ফটোকপি।

ভর্তি ও অন্যান্য ফি—

অনলাইন আবেদন ফি: ১০০ টাকা,

রেজিস্ট্রেশন ফি : ১০০ টাকা,

কোর্স ফি (প্রতি কোর্স ৫২৫ টাকা): ৩৬৭৫ টাকা,

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আবশ্যিক) ব্যবহারিক ফি: ১০০ টাকা,

একাডেমিক ক্যালেন্ডার ফি:৫ টাকা,

ডিজিটাল আইডি কার্ড ফি: ২০০ টাকা,

পরীক্ষা ফি (প্রতি কোর্স ৫০ টাকা) : ৩৫০ টাকা,

প্রথম বর্ষ নম্বরপত্র ফি : ৭০ টাকা,

মোট আবেদন ফি: ৪৬৯৬ টাকা।

বিজ্ঞান শাখার জন্য দুটি ব্যবহারিক কোর্সের জন্য অতিরিক্ত ২০০ টাকা জমা দিতে হবে।

দরকারি তথ্য—

১. অষ্টম শ্রেণি বা সমমান পাসের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর নাম, পিতা ও মাতার নাম এবং জন্ম তারিখ ইত্যাদি প্রদত্ত সনদ, জাতীয় পরিচয়পত্র বা অনলাইন জন্মনিবন্ধন অনুযায়ী একই রকম হতে হবে।

২. জেএসসি বা জেডিসি পাসের ক্ষেত্রে জেএসসি বা জেডিসি সনদ অনুযায়ী হতে হবে। ২০২০ সাল কিংবা তার পরবর্তীতে অষ্টম শ্রেণি উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের অষ্টম শ্রেণি পাশ সনদে বা প্রমাণকে বোর্ড কর্তৃক ইস্যুকৃত রেজিস্ট্রেশন নম্বর উল্লেখ থাকতে হবে। সনদবিহীনদের ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্র বা অনলাইন জন্মনিবন্ধন সনদ অনুযায়ী হতে হবে।

৩. তৃতীয় লিঙ্গের শিক্ষার্থীরা কোর্স ফির শতকরা ৬০ ভাগ ছাড় পাবেন।

# বিস্তারিত তথ্যের জন্য ওয়েবসাইট

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোতে হঠাৎ দুদকের অভিযান
  • উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএসসি প্রোগ্রাম, জেএসসি ছাড়াও ভর্তি
  • সঞ্চয়পত্র কেনার পর যেসব বিষয়ে সতর্ক থাকবেন