হালকা গড়ন মানেই কিন্তু হৃদ্রোগের ঝুঁকিমুক্ত নন
Published: 19th, September 2025 GMT
অনেকে ভাবেন, যিনি স্লিম বা হালকা গড়নের, তাঁর নিশ্চয়ই কোনো হার্টের অসুখ থাকতে পারে না। স্লিম হলে রক্তে কোলেস্টেল বাড়বে না, উচ্চ রক্তচাপ বা ডায়াবেটিসও হবে না। এ রকম ধারণা একেবারেই ঠিক নয়। সত্যি হলো, স্লিম বা পাতলা ব্যক্তির শরীরেও উচ্চ রক্তচাপ, বাড়তি কোলেস্টেরল কিংবা হৃদ্রোগ দেখা দিতে পারে।
স্লিম থাকা সত্ত্বেও কেন হৃদ্রোগ হয়আমরা যদি হৃদ্রোগের ঝুঁকিগুলো খতিয়ে দেখি, তাহলে দেখব, হৃদ্রোগের ঝুঁকিগুলো দুই ধরনের।
● অপরিবর্তনীয় ঝুঁকি
বংশগতির প্রভাব বা রক্তের সম্পর্ক আছে, এমন কারও হৃদ্রোগের পারিবারিক ইতিহাস। বয়স বাড়তে থাকা। পুরুষ এবং মেনোপজ–পরবর্তী নারী।
● পরিবর্তনযোগ্য ঝুঁকি
ডায়াবেটিস; উচ্চ রক্তচাপ; রক্তে উচ্চমাত্রার খারাপ কোলেস্টেরল; ধূমপান; উচ্চতা অনুযায়ী অতিরিক্ত শারীরিক ওজন; কায়িক শ্রমের অভাব।
এখানে স্লিম বা হালকা গড়নের ব্যক্তির হয়তো অতিরিক্ত ওজন–সম্পর্কিত ঝুঁকিটি নেই, কিন্তু তাঁর অন্য হৃদ্রোগের ঝুঁকি যে নেই, তা তো নয়। গবেষণা বলছে, বর্তমানে দক্ষিণ এশীয়দের মধ্যে বংশগতির প্রভাবে হৃদ্রোগের হার আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে চলেছে। রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রার কথা যদি বলি, তাহলে বলব, যাঁরা স্লিম, তাঁদের রক্তে উচ্চমাত্রায় খারাপ কোলেস্টেরল বাড়বে না, এ কথা বলা যাবে না। কারণ, বাইরে থেকে শরীর মেদমুক্ত মনে হলেও শরীরের ভেতর বিভিন্ন অঙ্গে চর্বি জমে থাকতে পারে। একে ভিসেরাল ফ্যাট বলে। এ ক্ষেত্রে রক্তে উচ্চমাত্রায় খারাপ কোলেস্টেরল থাকতে পারে। আবার স্লিম হলেও কেউ যদি নিয়মিত ব্যায়াম না করেন, তাহলে শরীরের মাংসপেশি দুর্বল হয়ে যায় এবং ভেতরে–ভেতরে চর্বি জমতে থাকে। ফাস্ট ফুড, ভাজাপোড়া ও মিষ্টিজাতীয় খাবার, কোমল পানীয় শরীরের ওজন না বাড়িয়েও রক্তে কোলেস্টেরল বাড়াতে পারে। এ ছাড়া ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, ধূমপান ও মদ্যপান এবং পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব হৃদ্রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। তাই শুকনা–পাতলা ভেবে নিশ্চিন্তে বসে থাকার সুযোগ নেই।
করণীয়মনে রাখতে হবে, মোটাই হোন বা রোগা, সবাইকেই সুস্থ–সুন্দর জীবন যাপন করতে হবে। তাই—
স্লিম হলেও নিয়মিত প্রতিদিন কমপক্ষে আধা ঘণ্টা দ্রুত হাঁটার অভ্যাস করতে হবে। প্রতিদিনের খাবারে শাকসবজি, ফল ও আঁশযুক্ত খাবার রাখতে হবে। খাদ্যে অতিরিক্ত লবণ, চিনি ও তেল-চর্বি কমাতে হবে। ধূমপান ও মদ্যপান একেবারেই এড়িয়ে চলতে হবে। পর্যাপ্ত ঘুমের অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। বয়স ৩০-এর বেশি হলে বছরে অন্তত একবার রক্তচাপ, রক্তের সুগার ও কোলেস্টেরল পরীক্ষা করে দেখতে হবে। কোনো গরমিল পাওয়া গেলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
ডা.
শরদিন্দু শেখর রায়, সহকারী অধ্যাপক, হৃদরোগ বিভাগ, জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, ঢাকা
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
হেফাজতের আমিরের সঙ্গে এনসিপির শীর্ষ নেতাদের ‘অনানুষ্ঠানিক’ সাক্ষাৎ
কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির শাহ মুহিবুল্লাহ বাবুনগরীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। এনসিপির পক্ষ থেকে এই সাক্ষাৎকে ‘অনানুষ্ঠানিক সৌজন্য সাক্ষাৎ’ উল্লেখ করে বলা হচ্ছে, সেখানে কোনো রাজনৈতিক আলোচনা হয়নি।
গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় অবস্থিত ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার বাংলাদেশে এ সাক্ষাৎ হয়। হেফাজতের আমিরের সঙ্গে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ও সদস্যসচিব আখতার হোসেনের নেতৃত্বে দলটির কয়েকজন নেতার একটি প্রতিনিধিদল সাক্ষাৎ করে। হেফাজতের মহাসচিব মাওলানা সাজিদুর রহমানও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
কয়েক দিনের জন্য ঢাকায় এসেছেন হেফাজতে ইসলামের আমির শাহ মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী। গতকাল সকালে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ‘জাতীয় উলামা মাশায়েখ সম্মেলন ২০২৫’-এ প্রধান অতিথি ছিলেন তিনি। এনসিপির দুজন নেতা বলেন, হেফাজতের আমির সাধারণত ঢাকায় আসেন না, চট্টগ্রামের হাটহাজারীতেই থাকেন। বিভিন্ন দল-সংগঠনের প্রধানদের সঙ্গে গত এক বছরে এনসিপির নেতাদের সৌজন্য সাক্ষাৎ হয়েছে। কিন্তু হেফাজতের আমিরের সঙ্গে তাঁদের সরাসরি সাক্ষাতের সুযোগ সেভাবে হয়নি।
এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক ও দলের রাজনৈতিক লিয়াজোঁ কমিটির প্রধান আরিফুল ইসলাম আদীব প্রথম আলোকে বলেন, ‘হেফাজতের আমির সাধারণত চট্টগ্রামেই থাকেন। তিনি বয়স্ক মানুষ, সাধারণত ঢাকায় আসেন না। তাঁদের একটি সাংগঠনিক কাজে যেহেতু ঢাকায় এসেছেন, সেই জায়গা থেকে এনসিপির একটি প্রতিনিধিদল তাঁর সঙ্গে অনানুষ্ঠানিকভাবে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছে।’
হেফাজত আমিরের সঙ্গে সাক্ষাৎটিকে ‘সৌজন্য সাক্ষাৎ’ বলছেন এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেনও। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘সাক্ষাতে আমরা হেফাজতে ইসলামের আমিরের স্বাস্থ্যের খোঁজখবর নিয়েছি। সেখানে কোনো রাজনৈতিক আলোচনা হয়নি।’
গতকাল হেফাজতের আমিরের সঙ্গে শুধু এনসিপি নেতারাই সাক্ষাৎ করেছেন, তা নয়। সূত্র বলছে, গতকাল রাতে বসুন্ধরায় ইসলামিক রিসার্চ সেন্টারে গিয়ে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদও। এ বিষয়ে বিএনপির কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।