বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও এডুকেশন সোসাইটির পরিচালক বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মনোনীত নারায়ণগঞ্জ- ৩ (সোনারগাঁ - সিদ্ধিরগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী প্রিন্সিপাল ড. মো. ইকবাল হোসাইন ভূইয়া বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু ও সংখ্যাগুরু বলতে কোন শব্দ থাকবে না। সবাই এদেশের নাগরিক। সবাই রাষ্ট্রের সমান সুযোগ- সুবিধা ভোগ করবে।

শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকালে সোনারগাঁ পৌরসভা আদমপুর বাজার থেকে গণসংযোগ কালে ৩টি পুজা মন্ডল পরিদর্শন করে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সাথে কুশল বিনিময় এসব কথা বলেন।

ড.

ইকবাল হোসাইন ভূইয়া বলেন, দেশের মানুষ বুঝে গেছে কাদের হাতে দেশ ও দেশের সকল ধর্মের মানুষ নিরাপদ। ৫ আগস্টের পর সোনারগাঁয়ের তৎকালীন ওসি ও উপজেলা কর্মকর্তা (ইউএনও) সোনারগাঁয়ের ৩৬ টি পূজা মন্ডপ ও মন্দিরের নিরাপত্তার জন্য আমার কাছে সহযোগিতা চেয়েছিলেন। 

আমি স্পষ্ট করে বলেছি, পূজা মন্ডপ ও মন্দিরের নিরাপত্তার জন্য অন্য কোন দল, অন্য কোন ব্যক্তির সহযোগিতার প্রয়োজন নাই। তারা আমাদের ভাই বোন, তারা এদেশের নাগরিক। তাদের পূজা মন্ডপ ও মন্দির সম্পূর্ণ অক্ষত থাকবে। বাংলাদেশে সংখ্যালঘু ও সংখ্যাগুরু বলে কোন শব্দ থাকবে না। সবাই এদেশের নাগরিক। 

সবাই রাষ্ট্রের সমান সুযোগ সুবিধা ভোগ করবে। সমান অধিকার পাবে। আপনারা জানেন কারা গত ৫৪ বছর ধরে সনাতন ধর্মালম্বীদের বাড়ি ঘরে ও মন্দিরে হামলা চালিয়েছে।

জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীরা কোনদিন এ ধরনের কাজের সাথে জড়িত ছিল না। পৌরসভার হিন্দু সম্প্রদায়ের আমিনপুর সার্বজনী পুজা মন্ডব, ঋষিপাড়া পুজা মন্ডল, ও সোনারগা গৌর নিতাই পুজা মন্ডব পরিদর্শন করে তাদের সাথে কুশল বিনিময় করে ও বিভিন্ন সমস্যার কথা শোনেন।

তিনি আরো বলেন, সোনারগাঁয়ের কোন নাগরিকের উপর অন্যায়ভাবে জুলুম ও অত্যাচার করা হলে দাতভাংগা জবাব দেয়া হবে। স্বৈরাচারী কায়দায় ভোট কেন্দ্র দখল করার কোন সুযোগ দেয়া হবে না। আল কুরআনের সমাজ ও রাষ্ট্র কায়েমের জন্য প্রতিটি মুহূর্তকে মূল্যায়ন করতে হবে।

আল্লাহ রাব্বুল আলামিন ঈমানদারদের লক্ষ্য করে বলছেন, হে ইমানদারগণ আল্লাহকে ভয় করার মত ভয় করো আর মুসলমান হওয়া ছাড়া মৃত্যু বরণ করো না।

যে ব্যক্তি জীবনে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে, ব্যক্তি জীবনে, পারিবারিক জীবনে, সামাজিক জীবনে, রাজনৈতিক জীবনে,রাষ্ট্রীয় জীবনে ও আন্তর্জাতিক জীবনে ও ইসলাম অনুসরণ করে তারাই প্রকৃত মুসলমান। 

তাই আমরা যারা নিজেদের মুসলমান বলে দাবি করি জীবনের প্রতিটি সিদ্ধান্ত কুরআন ও হাদিসের আলোকে নেয়া ছাড়া মুসলমান হওয়া সম্ভব না। এবারের সংসদ নির্বাচন  ঈমান ও ইসলামের সাথে জড়িত। কেউ যদি দশজনের ভোট একজনে দেয়ার স্বপ্ন দেখে, তাদের সেই স্বপ্ন কে দুঃস্বপ্নে পরিণত করা হবে। স্বৈরাচারী কায়দায় ভোট কেন্দ্র দখল করার কোন সুযোগ দেয়া হবে না।

গণসংযোগ কালে ড. ইকবাল হোসাইন ভূইয়া দাঁড়িপাল্লা মার্কার প্রচারনা চালায় ও সকলের নিকট দোয়া প্রার্থনা করে বলেন আল কোরআনের দাওয়াত নিয়ে মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরছি। আমরা আশা করছি, আগামীর বাংলাদেশ হবে আল কোরআনের বাংলাদেশ, আগামীর বাংলাদেশ হবে ইসলামের বাংলাদেশ। 

সোনারগাঁওয়ে যত বড় প্রভাবশালী বা শক্তিধর ক্ষমতাধর ব্যক্তি থাকুন না কেন, সাধারণ মানুষের অধিকার নিশ্চিত করাই আমাদের মূল লক্ষ্য। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সাধারণ মানুষের প্রতি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।

গণসংযোগকালে উপস্থিত ছিলেন সোনারগাঁ দক্ষিনের সেক্রেটারী আসাদুল ইসলাম মোল্লা পৌরসভার সহসভাপতি মেহেদী হাসান, উপজেরা কর্মপরিষদ সদস্য ডা. তোফাজ্জল হোসেন পৌরসভা সেক্রেটারী মাওলানা মো. হোসাইন পৌরসভা সহসেক্রেটারী সৌরভ হোসাইন, প্রচার সম্পাদক ইবনে ফাহাদ রনি জামায়াত নেতা ডা. হারুন অর রশিদ রুবায়েত হাসান রাকিব ও মো. শামীম হোসেন।
 

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: স ন রগ ও ন র য়ণগঞ জ ও মন দ র ইসল ম র ম সলম ন ক জ বন হ স ইন স ন রগ প রসভ ক রআন

এছাড়াও পড়ুন:

‘৭০ ভাগ জনগণ পিআর পদ্ধতির পক্ষে সমর্থন জানিয়েছে’

জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় প্রচার বিভাগের সেক্রেটারি মতিউর রহমান আকন্দ বলেছেন, ‘২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা পালিয়ে গেছেন। এরপর ছাত্র-জনতার আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করেছে। সেই জনগণের ৭০ ভাগ পিআর পদ্ধতির পক্ষে সমর্থন জানিয়েছে। ঐকমত্য কমিশনে ৩১টি দলের মধ্যে ২৫টি দল পিআরের পক্ষে রয়েছে।’

আজ শুক্রবার বিকেলে খুলনা নগরের ডাকবাংলা সোনালী ব্যাংক চত্বরে জুলাই সনদের ভিত্তিতে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনসহ ৫ দফা দাবিতে জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।

মতিউর রহমান আকন্দ বলেন, ‘একটি দলের কেউ কেউ বলছেন, পিআর খায় না মাথায় দেয়। কোনো রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এটা বলতে পারেন না। তাই পিআর বাস্তবায়নের জন্য গণভোট দিন। রায় পিআরের পক্ষে নাকি বিপক্ষে যাচাই করুন। জনগণ যদি পিআর মানে আপনাদেরও মানতে হবে। আর জনগণের রায় যদি পিআরের বিপক্ষে যায়, তাহলে আমরা মেনে নেব। কিন্তু তারা তো গণভোটকে ভয় পাচ্ছে। পিআরের মধ্য দিয়ে সবার অংশীদারির ভিত্তিতে যদি পেশিশক্তি ও কালোটাকামুক্ত কোয়ালিটিপূর্ণ পার্লামেন্ট হয়, সরকার গঠন হয়, তাহলে কোনো দলের পক্ষে ফ্যাসিবাদী হয়ে ওঠার সম্ভাবনা নেই। তাই তারা পিআর ঠেকাতে চায়।’

জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও খুলনা মহানগরের আমির অধ্যাপক মাহফুজুর রহমানের সভাপতিত্বে এবং সহকারী সেক্রেটারি মুহাম্মদ শাহ আলম ও শেখ জাহাঙ্গীর আলমের সঞ্চালনায় সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি ও খুলনা অঞ্চলের পরিচালক আবদুল খালেক, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ও খুলনা অঞ্চলের সহকারী পরিচালক আবুল কালাম আজাদ, কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও খুলনা অঞ্চলের টিম সদস্য মাস্টার শফিকুল আলম এবং কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও খুলনা জেলার আমির মাওলানা এমরান হুসাইন প্রমুখ।

মতিউর রহমান আকন্দ বলেন, ‘আর্টিকেল ৭-এর ভিত্তিতেই জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দিয়ে তার আলোকে নির্বাচন দিতে হবে। এখন যদি দুই-তিন মাস আলোচনার পর একটি দল বলে যে এটা পরে হবে, তাহলে কেন এত পরিশ্রম করালেন? সে জন্যই বলছি আমাদের আন্দোলন রাজনীতির অংশ। আমাদের রাজনীতি জনগণের আকাঙ্ক্ষা তুলে ধরার জন্য। আমরা আলোচনার টেবিলে নিষ্পত্তির জন্য আশাবাদী। আমরা নিরাশ নই।’

জামায়াতের এই নেতা বলেন, ‘আপনারা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড মেনটেইন করতে পারছেন না। তাহলে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে কীভাবে? তাই আমাদের দাবি—আপনারা জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দিন। সাংবিধানিক অর্ডার জারি করুন। গণভোট দিন। ফ্যাসিবাদের কার্যক্রম স্থগিত করুন। আপনারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন নির্বাচনের আগে দৃশ্যমান বিচার করবেন। আমাদেরও দাবি নির্বাচনের আগেই তা দৃশ্যমান করতে হবে।’

মতিউর রহমান আকন্দ আরও বলেন, ‘এই সংস্কার যদি এখন না হয়, প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য যদি ঠিক করা না হয়, আর তা যদি নির্বাচনের আগে না হয়, বিদ্যমান রাষ্ট্রকাঠামোতে যদি আবার নির্বাচন হয়, তাহলে এই নির্বাচনের মাধ্যমে আরেকটি ফ্যাসিবাদের জন্ম হবে। বিদ্যমান কাঠামোতে নির্বাচন হলে আরেকটি হাসিনার জন্ম হবে। বাংলার মানুষ আর ফ্যাসিবাদের জন্ম হতে দেবে না।’

পরে একটি বিক্ষোভ মিছিল নগরের ডাকবাংলা সোনালী ব্যাংক চত্বর থেকে শুরু হয়ে ফেরিঘাট মোড়, পাওয়ার হাউস মোড় ও সংগীতার সামনে দিয়ে শিববাড়ী মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ