প্রতারনা মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি ফতুল্লার বক্তাবলীর মুর্শিদা বেগম (৪৮) কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর আদালতে আত্মসমর্পণ করলে বিজ্ঞ আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিকালে নারায়ণগঞ্জ আদালত থেকে মুর্শিদাকে কারাগারে পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেন। 

কারাগারে থাকা মুর্শিদা বেগম ফতুল্লার বক্তাবলী ইউনিয়নের রামনগর এলাকার মৃত আবুল হোসেন ওরফে কসাই আবুলের স্ত্রী। সে আওয়ামী লীগ নেতা শহিদুল্লাহর ভাইয়ের স্ত্রী বলেও জানা গেছে। 

আদালত এবং রাবেয়ার দায়েরকৃত মামলার সূত্রে জানা যায়, বক্তাবলী ইউনিয়নের চর রাজাপুর এলাকার আজিজুল ইসলামের স্ত্রী রাবেয়া বেগমের সাথে মুর্শিদার সাথে সম্পর্ক তৈরি হয়। সেই সুবাদে বিগত ২০২১ সালে রাবেয়ার কাছে মুর্শিদা তার বাড়ি বিক্রির প্রস্তাব দেয়। 

এতে রাবেয়া রাজি হলে তার কাছ থেকে বায়না বাবদ  ১১ লাখ টাকা গ্রহণ করে মুর্শিদা। টাকা নেয়ার প্রায় এক বছরের বেশি সময় পাড় হয়ে গেলেও মুর্শিদা তার বাড়ি দলিল করে দেয়ার বিষয় কিছু না বলায় রাবেয়া টাকার জন্য চাপ দেয়।

তাতে করে বাড়ির দলিল না করে দিয়ে রাবেয়াকে ১১ লাখ টাকার চেক প্রদান করে মুর্শিদা। পরে রাবেয়া মুর্শিদার বিরুদ্ধে আদালতে চেক ডিজঅনার মামলা দায়ের করে। 

মামলার একপর্যায়ে মুর্শিদার বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ যুগ্ম দায়রা জজ ফারজানা আক্তার এর ৩য় আদালতে রায় ঘোষণা করেন। বিজ্ঞ আদালত মুর্শিদাকে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং ১১ লাখ টাকা জরিমানা করেন। 

পরে বিজ্ঞ আদালতে মুর্শিদা আদালতে অর্ধেক টাকা জমা দিয়ে জামিন নেয়। কিন্তু আদালতে বাকী টাকা দেয়ার কথা থাকলেও তা না করে আত্মগোপনে চলে যায়। পরে মুর্শিদা আদালতে আত্মসমর্পণ করলে বিজ্ঞ আদালত কারাগারে প্রেরণের আদেশ দেন।

এদিকে রাবেয়া অভিযোগ করেন সম্প্রতি মুর্শিদার কাছে টাকা চাইতে গেলে বিগত আওয়ামী লীগ শাসন আমলে সন্ত্রাসী দিয়ে আমার বাড়িতে হামলা চালায় এবং ভাঙচুর করে। এমনকি আমার ১১ লাখ টাকা আত্মসাত করতে মুর্শিদা আমার বিরুদ্ধে হয়রানি মূলক ভাবে মিথ্যা মামলা দায়ের করে। 

আর চেক ডিজঅনার মামলায় তাকে এক বছরের সাজা দেয় আদালত। সেই মামলায় মুর্শিদা কারাগারে রয়েছে। আদালতের কাছে  আমি সুষ্ঠু বিচার প্রার্থনা করছি এবং পাওনা টাকা যাতে দ্রুত পাই সেই ব্যবস্থা যেন করা হয়। 

মামলার বাদী রাবেয়ার আইনজীবী সাইদুর রহমান সাব্বির জানান, মুর্শিদা একটা প্রতারক। রাবেয়ার কাছে জমি বিক্রি করার কথা বলে ১১ লাখ টাকা নিয়ে নানা তালবাহানা করে।

একপর্যায়ে মুর্শিদার বিরুদ্ধে চেক ডিজঅনার মামলা দায়ের করলে স্বাক্ষ্য প্রমান থাকায় সেই মামলায় বিজ্ঞ আদালত রায় ঘোষণা করেন এবং মুর্শিদাকে এক বছরের সাজা এবং ১১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। আর সেই মামলায় মুর্শিদা আদালতে আত্মসমর্পণ করলে তাকে জেল হাজতে প্রেরন করেন। বর্তমানে সে কারাগারে রয়েছে।
 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ ১১ ল খ ট ক এক বছর র

এছাড়াও পড়ুন:

ত্বকী হত্যা মামলার অভিযোগপত্র দাখিলে আবার সময় নিল র‍্যাব

নারায়ণগঞ্জের মেধাবী ছাত্র তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যা মামলার অভিযোগপত্র দাখিলে আবার সময় চেয়েছে মামলার তদন্তকারী সংস্থা র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)। বৃহস্পতিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল্লাহ্‌ আল মামুনের আদালতে লিখিতভাবে সময় চান মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা র‍্যাবের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দীপক রঞ্জন মজুমদার। আদালত তাঁকে দ্রুত অভিযোগপত্র দাখিলের নির্দেশ দেন।

এর আগে গত ১৪ আগস্ট ত্বকী হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে ধার্য তারিখে হাজির হওয়ার জন্য তলব করেছিলেন আদালত। এদিকে আজ মামলার জামিনে থাকা ৯ আসামি আদালতে হাজিরা দিয়েছেন। তবে পলাতক ছিলেন আজমেরী ওসমানের সহযোগী সুলতান শওকত ও সালেহ রহমান ওরফে সীমান্ত।

এ বিষয়ে মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী প্রদীপ ঘোষ প্রথম আলোকে বলেন, আদালত শুনানির সময় জানিয়েছেন, র‍্যাবের তদন্ত কর্মকর্তা আগামী নভেম্বরে অভিযোগপত্র দাখিল করবেন বলে মৌখিকভাবে জানিয়েছেন। মামলার বাদী ও বিবাদী—উভয় পক্ষের বিচার পাওয়ার অধিকার রয়েছে। তদন্ত কর্মকর্তাকে দ্রুত অভিযোগপত্র দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

নারায়ণগঞ্জ আদালত পুলিশের পরিদর্শক মোহাম্মদ কাইউম খান প্রথম আলোকে বলেন, তদন্তকারী কর্মকর্তা অভিযোগপত্র দাখিলের জন্য আদালতে লিখিতভাবে সময় চেয়েছেন। জামিনে থাকা আসামিরা হাজিরা দিয়েছেন। বাদীপক্ষের আইনজীবীর উদ্ধৃতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তিনি হয়তো মৌখিকভাবে নভেম্বরে অভিযোগপত্র দেবেন বলে জানিয়েছেন।

ত্বকী হত্যায় অভিযুক্ত আজমেরী ওসমান প্রয়াত সাবেক সংসদ সদস্য নাসিম ওসমানের ছেলে ও সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের ভাতিজা। গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে আজমেরী ওসমানসহ ওসমান পরিবারের সদস্যরা আত্মগোপনে চলে যান। অনেকের মতে, তাঁরা দেশ ছেড়েছেন।

আজ আদালতে হাজিরা দেওয়া আসামিরা হলেন আজমেরী ওসমানের গাড়িচালক জামসেদ চৌধুরী এবং রিফাত বিন ওসমান, মামুন মিয়া, তায়েব উদ্দিন জ্যাকি, ইউসুফ হোসেন, সাফায়েত হোসেন, আবদুল্লাহ্ আল মামুন, পিয়ার মাহমুদ পারভেজ, কাজল হাওলাদার।

২০১৩ সালের ৬ মার্চ নগরের শায়েস্তা খাঁ রোডের বাসা থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হওয়ার দুই দিন পর শীতলক্ষ্যা নদীর কুমুদিনী খাল থেকে ত্বকীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই বছরের নভেম্বরে আজমেরী ওসমানের সহযোগী সুলতান শওকত ভ্রমর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে জানান, আজমেরী ওসমানের নেতৃত্বে ত্বকীকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়।

২০১৪ সালের ৫ মার্চ তদন্তকারী সংস্থা র‍্যাব সংবাদ সম্মেলনে জানায়, ওসমান পরিবারের নির্দেশে টর্চার সেলে আজমেরী ওসমানের নেতৃত্বে ১১ জন মিলে ত্বকীকে হত্যা করেছে। তখন বলা হয়েছিল, অচিরেই আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হবে। কিন্তু সাড়ে ১২ বছরেও অভিযোগপত্র দেওয়া হয়নি। বিচারের দাবিতে প্রতি মাসের ৮ তারিখ ধারাবাহিকভাবে মোমশিখা প্রজ্বালন কর্মসূচি পালন করে আসছে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোট।

আরও পড়ুনতদন্তকারী সংস্থা র‍্যাবের প্রতি দ্রুত অভিযোগপত্র দাখিলের আহ্বান০৮ মে ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জুলাই সনদ বাস্তবায়নের দায়িত্ব অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকেই নিতে হবে : খেলাফত মজলিস
  • আল্লাহর আইন ছাড়া এই সমাজ পরিবর্তন করা যাবে না : মাও. জব্বার
  • সোনারগাঁয়ে বড় ভাইয়ের ছুরিকাঘাতে ছোট ভাই খুন
  • চাষাড়া রেলস্টেশন ও ইসদাইরে যৌথবাহিনীর অভিযানে ৯ জনকে কারাদন্ড, আটক ১৮
  • সোনারগাঁয়ে সিরাত বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত
  • ত্বকী হত্যা মামলার অভিযোগপত্র দাখিলে আবার সময় নিল র‍্যাব
  • ১০ টাকায় ইলিশ বিতরণ, জনতার চাপে ‘মাফ চেয়ে’ এলাকা ছাড়ালেন ‘এমপি প্রার্থী’
  • পুকুরে প্রাণ গেল চাচাত ভাই-বোনের 
  • শান্তি স্থাপনের লক্ষ্যে আত্মসমর্পণ ও অস্ত্রত্যাগের প্রস্তাব মাওবাদীদের