আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে অনিশ্চয়তা দূর করতে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীকে একজোট হয়ে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান। তিনি বলেছেন, ‘মাত্র ৭ বছর আগে দলীয় স্বার্থে দুই দল একই মার্কা নিয়ে নির্বাচন করেছে। এখন জাতির বৃহত্তর স্বার্থে একজোট হয়ে এক মার্কায় নির্বাচন করলে সমস্যা কোথায়?’

আজ শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে এবি শ্রমিক পার্টির প্রতিনিধি সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মজিবুর রহমান এ কথাগুলো বলেন। সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন এবি পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা শেখ জামাল উদ্দিন। সঞ্চালনায় ছিলেন শ্রমিকবিষয়ক সহসম্পাদক আজিজা সুলতানা। বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় শ্রমবিষয়ক সম্পাদক শাহ আব্দুর রহমান।

বক্তব্যে মজিবুর রহমান বলেন, ‘সবার মনে শঙ্কা, ফেব্রুয়ারিতে আদৌ নির্বাচন হবে কি না? জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি ও বাস্তবায়নপ্রক্রিয়া নিয়ে ঐকমত্যের কাছাকাছি পৌঁছানো গেলেও রাজপথে কর্মসূচি নিয়ে আবার সংশয় দেখা দিয়েছে। আমি মনে করি, বিএনপি ও জামায়াত একজোট হলে নির্বাচন নিয়ে আর কোনো অনিশ্চয়তা থাকবে না।’

নতুন ভূমিষ্ঠ হওয়া রাজনৈতিক দলগুলো পরস্পরের মধ্যে বিতর্কে ব্যস্ত হয়ে পড়ায় দেশের অগ্রগতি থমকে গেছে বলে মন্তব্য করেন এবি পার্টির চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ‘অনেক সময় আমরাও হঠাৎ করে দ্রুত নির্বাচন ও ক্ষমতায় যাওয়ার সিদ্ধান্তে চলে যাই। এবি পার্টি মনে করে, আগে দেশকে গড়ে তোলা প্রয়োজন; তারপর রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে কেউ সেটি মনোযোগ দিয়ে বিবেচনা করছে না।’

গণহত্যার জন্য সুনির্দিষ্টভাবে যারা দায়ী, তাদের বিচারের দাবি জানিয়ে এবি পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ‘যারা এই জাতিকে নির্বাচন থেকে বঞ্চিত করেছে, যারা ক্ষমতায় থেকে দেশের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণে ভূমিকা রেখেছে, তাদের প্রাসঙ্গিকভাবে বিচারের আওতায় আনা উচিত।’ রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘নিজস্ব দলীয় স্লোগান আপাতত স্থগিত রেখে জনগণের স্লোগানকে অগ্রাধিকার দিতে হবে, যেমন আমরা জুলাইয়ে করেছিলাম। রাজনৈতিক দলগুলো যদি নাগরিকদের দক্ষ করে গড়ে তোলার দিকে কাজ করে, তাহলে শ্রমিকদের জন্য বিষয়ভিত্তিক কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা সহজ হবে। শ্রমিকেরাই একটি দেশ বদলে দিতে পারে। তাই শ্রমিকদের দেশ গঠনে এগিয়ে আসতে হবে।’

সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় সহকারী অর্থ সম্পাদক আবু বক্কর সিদ্দিক, আব্দুল হালিম নান্নু, রমনা থানার আহ্বায়ক আব্দুল কাদের মুন্সী প্রমুখ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন ত ক র রহম ন একজ ট

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ