ইয়েমেন, লেবানন ও ফিলিস্তিনের গাজায় একযোগে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। স্থানীয় সময় গত শুক্রবার রাত থেকে এসব হামলা শুরু হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় পরিসরে হামলা হয়েছে ইয়েমেনে। এ ছাড়া যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে আবারও লেবাননে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এদিকে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর বিমান হামলার পাশাপাশি স্থল হামলাও অব্যাহত রয়েছে।

ইয়েমেনের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী হুতিদের অবস্থান নিশানা করে শুক্রবার বিমান ও ড্রোন হামলা চালায় ইসরায়েলের বিমানবাহিনী। এর মধ্যে একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র ও একটি সমুদ্রবন্দরও রয়েছে।

ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী এক বিবৃতিতে দাবি করেছে, ইসরায়েলের অবস্থান নিশানা করে হুতিদের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জবাবে পাল্টা এসব হামলা চালিয়েছে তারা। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর একজন কর্মকর্তা জানান, ইয়েমেনে ২০টির বেশি যুদ্ধবিমান দিয়ে ইরান-সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীদের ওপর হামলা চালিয়েছেন তাঁরা।

ইয়েমেনে ইসরায়েলের হামলার নিন্দা জানিয়ে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গতকাল শনিবার এক বিবৃতিতে বলেছে, ইয়েমেনে একের পর এক পাশবিক হামলা চালিয়েছে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী। নজিরবিহীন এমন হামলার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে তেহরান।

এদিকে লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শুক্রবার দেশটির দক্ষিণাঞ্চলে ইসরায়েলের হামলায় অন্তত দুজন নিহত হয়েছেন। ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর দাবি, লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর একটি অস্ত্রের ট্রাক নিশানা করে এ হামলা চালায় তারা।

লেবাননের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ সংস্থা ন্যাশনাল নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, উপকূলীয় শহর টায়ারের টাইর ডিবা নামক এলাকায় একটি গাড়ি লক্ষ্য করে ড্রোন হামলা চালায় ইসরায়েল। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক লেবাননের নিরাপত্তা বাহিনীর একটি সূত্র এএফপিকে বলেছে, ড্রোনটি এসে একটি রকেট লঞ্চারে আঘাত হানে। এ সময় একাধিক বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।

গতকাল বিকেলে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গতকাল বিকেল থেকে আগের ২৪ ঘণ্টায় গাজায় ইসরায়েলের হামলায় অন্তত ৩২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের হামলায় অবরুদ্ধ উপত্যকাটির অন্তত ৪৬ হাজার ৫৩৭ ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। আহত হয়েছেন লক্ষাধিক।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার প্রতিবেদন অনুযায়ী, শুক্রবার রাতভর গাজাজুড়ে বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। বেশির ভাগ হামলা হয়েছে আবাসিক এলাকায়। বিশেষ করে গাজার উত্তর অংশে বেশি হামলা হয়েছে। বিমান হামলার পাশাপাশি গাজার বিভিন্ন স্থানে স্থলপথে হামলা চালান ইসরায়েলি সেনারা।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

অফিসে আপনি কি ১১ ঘণ্টার বেশি কাজ করেন

প্ল্যান ওয়ান জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণা নিয়ে চলছে আলোচনা। সেখানে দুই হাজার ফুলটাইম কর্মজীবীর ওপর একটা জরিপ পরিচালনা করা হয়। পেশাগত কাজ বা চাপের সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্যের সম্পর্ক নিয়ে পরিচালিত গবেষণাটি থেকে পাওয়া গেছে চমকপ্রদ তথ্য।

বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, যাঁরা কর্মক্ষেত্রে ১১ ঘণ্টা বা তার বেশি কাজ করেন, তাঁদের খাদ্যাভ্যাস তুলনামূলকভাবে অস্বাস্থ্যকর, তাঁরা অন্যদের তুলনায় মানসিক চাপে ভোগেন বেশি। ঠিকমতো পানি খাওয়ার প্রবণতা কম। পরিবার, প্রকৃতি ও পোষা প্রাণীর সঙ্গে সময় কাটানোর প্রবণতাও কম। কম ঘুমান। আর যেকোনো মানসিক আঘাত থেকে সেরে ওঠার পর্যাপ্ত সময় বা সুযোগ পান না। এই মানুষেরাই বেশি হতাশায় ভোগেন।

শুধু তা-ই নয়, দ্রুত বুড়িয়ে যাওয়া এবং হৃদ্‌রোগ ও স্ট্রোকের মতো কার্ডিওভাস্কুলার রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বেশি। যাঁরা ১১ ঘণ্টা বা তার বেশি সময় অফিস করেন, তাঁদের মধ্যে কর্মক্ষেত্রে অসুস্থ হয়ে যাওয়ার সংখ্যাও অনেক।

আরও পড়ুন২৫ বছর ধরে অফিসে যাননি তিনি১৩ মার্চ ২০২৫যদি ১১ ঘণ্টা কর্মক্ষেত্রে থাকতেই হয়, তাহলে যেসব বিষয় খেয়াল রাখবেন

রাতে ৮ ঘণ্টা ঘুমাতেই হবে। তাতে শরীর ও মস্তিষ্ক দিনের শারীরিক ও মানসিক পরিশ্রমের ধকল কাটিয়ে ওঠার সুযোগ পাবে।

কাজের ফাঁকে ফাঁকে বিরতি নিন। সবুজের দিকে তাকান। ডেস্কে গাছ রাখতে পারেন। উঠে একটু হাঁটুন। ব্যায়াম করুন। সহকর্মীর সঙ্গে চা খেতে খেতে গল্প করুন। গবেষণা জানাচ্ছে, ছোট ছোট বিরতি কাজে মনোযোগ পুনঃস্থাপন করতে সাহায্য করে এবং কাজের গুণমান বাড়ায়।

দুপুরে খাওয়ার পর একটা ন্যাপ নিতে পারেন।

২ লিটারের একটা বোতলে পানি রাখবেন। প্রতিদিন ১ বোতল পানি অবশ্যই শেষ করবেন। তা ছাড়া পানি, শরবত, জুস, ডাবের পানি, তরমুজ, শসা, আনারস ইত্যাদি খাবেন। হাইড্রেটেড থাকলে এনার্জি ধরে রেখে কাজ করা সহজ হয়।

প্রক্রিয়াজাত খাবার, কার্বোনেটেড ড্রিংক, চিনিযুক্ত খাবার বাদ দিন। এসব কেবল আপনার ক্লান্তি বাড়াবে।

আর সম্ভব হলে কর্মক্ষেত্রে কথা বলে আপনার কর্মঘণ্টা ৮ ঘণ্টায় নিয়ে আসতে পারলে তো কথাই নেই।

সূত্র: এনবিসি নিউজ

আরও পড়ুনঅফিসের বাড়তি কাজকে যেভাবে ‘না’ বলবেন১৩ মার্চ ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ