আগামী নির্বাচনকে এযাবৎকালের সেরা ও ঐতিহাসিক করতে চাই: প্রধান উপদেষ্টা
Published: 12th, January 2025 GMT
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, বাংলাদেশের আগামী নির্বাচনকে এযাবৎকালের সেরা নির্বাচন করার পরিকল্পনা করছে সরকার, যাতে এটি গণতন্ত্রের একটি ঐতিহাসিক দৃষ্টান্ত হয়ে থাকে।
আজ রোববার ঢাকায় নিযুক্ত নরওয়ের রাষ্ট্রদূত হ্যাকন অ্যারাল্ড গুলব্র্যান্ডসন প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশকে এশিয়ায় নরওয়েজিয়ান পণ্যের আঞ্চলিক বিতরণ কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করতে এবং বাংলাদেশের যুবশক্তিকে কাজে লাগিয়ে এ দেশে আরও বিনিয়োগ করতে হ্যাকনের প্রতি আহ্বান জানান।
উদাহরণ হিসেবে বিদেশে নরওয়েজিয়ান টেলিকম জায়ান্ট টেলিনরের প্রথম উদ্যোগ গ্রামীণফোনের কথা উল্লেখ করেন প্রধান উপদেষ্টা, যা বিগত বছরগুলোতে টেলিনর পরিবারের সবচেয়ে লাভজনক উদ্যোগে পরিণত হয়েছে।
সাক্ষাৎকালে নরওয়ের প্রধানমন্ত্রী জোনাস গার স্টোরের একটি চিঠি হস্তান্তর করেন রাষ্ট্রদূত গুলব্রান্ডসেন। সেই চিটিতে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি নরওয়ের দৃঢ় সমর্থনের কথা লেখা ছিল।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আপনার প্রয়োজনীয় সংস্কার উদ্যোগ এবং অবাধ ও সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রচেষ্টার প্রতি দৃঢ় সমর্থন জানিয়েছেন।’
নরওয়ের রাষ্ট্রদূত জানান, নরওয়ের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের মানবাধিকার রক্ষা এবং পরিবেশগত টেকসই উন্নয়নের অঙ্গীকারের প্রশংসা করেছেন।
রাষ্ট্রদূত গুলব্র্যান্ডসন বলেন, নরওয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে জাহাজ নির্মাণশিল্প এবং সবুজ জ্বালানি রূপান্তর খাতে নিবিড়ভাবে কাজ করতে আগ্রহী।
প্রধান উপদেষ্টা মিয়ানমারের পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে নরওয়ের সহায়তা কামনা করেন। তিনি বলেন, ‘শান্তি প্রতিষ্ঠায় নরওয়ে বড় ভূমিকা পালন করেছে। তাই রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে আপনাদের সহায়তা প্রয়োজন।’
রাষ্ট্রদূত গুলব্র্যান্ডসেন আরও বলেন, ফিলিস্তিন ইস্যু, আন্তর্জাতিক কর এবং প্লাস্টিক দূষণ নিয়ে বৈশ্বিক ফোরামগুলোতে নরওয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে আগ্রহী।
ঢাকায় নরওয়ে দূতাবাসের ডেপুটি হেড অব মিশন মারিয়ানে রাবে নেভেলস্রুদ ফিলিস্তিনে মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর বিষয়ে নরওয়ের নেতৃত্বাধীন জাতিসংঘ প্রস্তাবে পৃষ্ঠপোষকতার জন্য বাংলাদেশের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বিশ্বকাপে জায়গা করতে বিশ্বকাপজয়ীকে কোচের দায়িত্ব দিল ইতালি
দেশের হয়ে বিশ্বকাপ খেলা যে কতটা গৌরবের আর আনন্দের, সেটা একজন বিশ্বকাপ জয়ের-অভিজ্ঞতাসম্পন্ন খেলোয়াড়ের চেয়ে আর কে ভালো বোঝাতে পারবেন?
আর এমন ভাবনা থেকেই এবার গানারো গাত্তুসোকে জাতীয় ফুটবল দলের কোচ নিয়োগ দিয়েছে ইতালি। চারবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা ২০২৬ বিশ্বকাপে জায়গা করা নিয়ে শঙ্কায় আছে। এর আগে খেলতে পারেনি ২০১৮ ও ২০২২ বিশ্বকাপে। টানা তৃতীয় আসর যাতে দর্শক হয়ে না থাকতে হয়, সেই চেষ্টার অংশ হিসেবে ২০০৬ বিশ্বকাপজয়ী গাত্তুসোকে দায়িত্ব দিয়েছে ইতালিয়ান ফুটবল ফেডারেশন এফআইজিসি।
২০২৬ বিশ্বকাপের ইউরোপিয়ান বাছাইয়ে ইতালি খেলছে ‘আই’ গ্রুপে। পাঁচ দলের গ্রুপ থেকে শুধু শীর্ষ স্থানধারী দলই বিশ্বকাপে সরাসরি জায়গা করতে পারবে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা দল প্লে-অফে খেলার সুযোগ পাবে। এই মুহূর্তে ‘আই’ গ্রুপে ৪ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে নরওয়ে। ৩ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে ইসরায়েল। ইতালির অবস্থান তিনে, ২ ম্যাচে ৩ পয়েন্ট।
গত সপ্তাহে নরওয়ের কাছে ৩-০ ব্যবধানে হারার পরই এফআইজিসি কোচ লুসিয়া স্পালেত্তিকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। তবে বিদায় নিশ্চিতের পরও সোমবার মল দোবার বিপক্ষে ম্যাচে ডাগআউটে দাঁড়ান স্পালেত্তি, ম্যাচটি ইতালি ২-০ ব্যবধানে জেতে।
নরওয়ে নিজেদের প্রথম চার ম্যাচের চারটিতেই জেতায় ইতালি এখন চাপে আছে। হাতে এখনো ৬টি ম্যাচ বাকি। তবে শীর্ষস্থানে থাকতে হলে নিজেদের বাকি সব ম্যাচ তো জিততেই হবে, নরওয়েকেও পয়েন্ট হারাতে হবে। আর এমন জটিল পরিস্থিতির মধ্যেই ইতালি দলের দায়িত্ব নিচ্ছেন গাত্তুসো।
৪৭ বছর বয়সী গাত্তুসো ২০০০ থেকে ২০১০ পর্যন্ত ইতালির জাতীয় দলে খেলেছেন। এর মধ্যে ২০০৬ বিশ্বকাপজয়ী দলের সেরা পারফরমারদের একজন ছিলেন। সব ম্যাচেই শুরুর একাদশে ছিলেন, পরে জায়গা করে নিয়েছিলেন বিশ্বকাপের অলস্টার একাদশেও। ২০১৩ সালে সুইজারল্যান্ডের ক্লাব সিওনে খেলোয়াড় কাম কোচ হিসেবে কাজ শুরু করেন। তখন থেকে গত ১২ বছরে মোট ৯টি ক্লাবের ডাগআউটে দাঁড়িয়েছেন গাত্তুসো। যার মধ্যে আছে নিজের সাবেক ক্লাব এসি মিলান এবং ভ্যালেন্সিয়া ও মার্শেই। সর্বশেষ ক্রোয়েশিয়ার ক্লাব হাইদুক স্প্লিটের দায়িত্বে ছিলেন, যা গত মাসে পারস্পরিক সমঝোতায় ছেড়ে দিয়েছেন। এখন পর্যন্ত কোচ হিসেবে মোট ৩৭৬টি ম্যাচে ডাগআউটে দাঁড়িয়ে গাত্তুসোর জয়ের হার ৪২.৮২ শতাংশ। জিতেছেন ১৬১টিতে, ড্র ১০৮ আর হার ১০৭-এ।
এখন দেখার বিষয়, ইতালি দলে তার সাফল্যের হার কতটা হয়, বিশেষ করে যখন দলের দরকার শতভাগ জয়। ইতালি জাতীয় দল তাদের পরবর্তী ম্যাচ খেলবে ৫ সেপ্টেম্বর এস্তোনিয়ার বিপক্ষে।