ভারতের উত্তর প্রদেশের প্রয়াগরাজে (পুরোনো এলাহাবাদ) গঙ্গা, যমুনা ও অন্তঃসলিলা সরস্বতীর সঙ্গমস্থলে আজ সোমবার সকালে শুরু হয়েছে মহাকুম্ভের পুণ্যস্নান। পৌষপূর্ণিমা (১৩ জানুয়ারি) ও মকরসংক্রান্তির (১৪ জানুয়ারি) দিন অন্তত তিন কোটি মানুষ প্রয়াগরাজের সঙ্গমে অবগাহন করবেন। প্রথম দিনে আরও অনেকের সঙ্গে স্নান করেছেন অ্যাপলের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত স্টিভ জবসের স্ত্রী লরেন পাওয়েল জবস, হিন্দুধর্মীয় গুরুর কাছে দীক্ষিত হয়ে যাঁর নামকরণ হয়েছে ‘কমলা’।

মহাকুম্ভ উপলক্ষে গত শনিবার লরেন পাওয়েল ভারতে এসেছেন এবং প্রয়াগে সঙ্গমতীরে নিরঞ্জনী আখড়ার তাঁবুতে বাস করছেন। তাঁর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র থেকে এসেছেন আরও ৪০ পুণ্যার্থী। যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও রাশিয়া, ইউরোপ ও দক্ষিণ আমেরিকার বহু দেশের মানুষ আজ সঙ্গমে অবগাহন করেন।

নিরঞ্জনী আখড়ার ধর্মগুরু স্বামী কৈলাসানন্দ গিরি মহারাজ গণমাধ্যমকে জানান, লরেন পাওয়েলের ‘কমলা’ নাম তিনিই দিয়েছিলেন। কমলা শনিবার থেকে তাঁদেরই আখড়ায় বসবাস করছেন। তাঁর পরনে গেরুয়া সালোয়ার–কামিজ। গলায় রুদ্রাক্ষের মালা। প্রয়াগে আসার পর থেকে তিনি যাবতীয় ধর্মীয় প্রথা পালন করছেন। কাশীর বিশ্বনাথ মন্দিরও তিনি দর্শন করেছেন। আগামী বুধ–বৃহস্পতিবার তিনি দেশে ফিরে যাবেন। ২০ জানুয়ারি নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন তিনি।

পৌষপূর্ণিমার পুণ্যলগ্নে শুরু হয়ে আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে এই মহাকুম্ভ; প্রতি ১২ বছর অন্তর প্রয়াগে যা অনুষ্ঠিত হয়। শেষবার যখন প্রয়াগে পূর্ণকুম্ভ হয়েছিল, তখন বিজেপি এই রাজ্যে ক্ষমতায় ছিল না। এই প্রথমবার পূর্ণকুম্ভের সময় কেন্দ্র ও রাজ্য—দুই ক্ষেত্রেই বিজেপির ‘ডবল ইঞ্জিন’ সরকার। কুম্ভমেলাকে ঘিরে হিন্দুত্ববাদের প্রসারে তাই হিন্দুত্ববাদী বিজেপি চেষ্টায় কোনো ত্রুটি রাখেনি।

ইতিমধ্যেই প্রচার করা হচ্ছে, অন্তত ৪০ কোটি পুণ্যার্থী মহাকুম্ভে সঙ্গমে অবগাহন করবেন। হিন্দুশাস্ত্রমতে, এই পুণ্যতিথিতে সঙ্গমে স্নান করলে সব পাপ ধুয়ে পুণ্যলাভ হয়।

মহাকুম্ভ উপলক্ষে স্টিভ জবসের স্ত্রী লরেন পাওয়েল ভারতে এসেছেন। প্রয়াগে সঙ্গমতীরে নিরঞ্জনী আখড়ার তাঁবুতে বাস করছেন। ১২ জানুয়ারি, উত্তর প্রদেশের প্রয়াগরাজ.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

শ্রম আইনের সংশোধন কবে হবে, তা বলছে না শ্রম মন্ত্রণালয়

শ্রম আইন সংশোধনের অধ্যাদেশ কবে হবে, সে বিষয়ে আর সময়সীমার কথা বলছে না শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। গত নভেম্বর মাসে এই মন্ত্রণালয় বলেছিল, ২০২৫ সালের মার্চ মাসের মধ্যে এ অধ্যাদেশ হবে। মার্চ শেষে এপ্রিলও শেষ হচ্ছে আজ বুধবার।

সচিবালয়ে আজ ‘মহান মে দিবস এবং জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেফটি দিবস ২০২৫’ উপলক্ষে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, আইন সংশোধনীর ক্ষেত্রে সময়সীমা থাকার পক্ষে নন তিনি। শ্রমিক–মালিকদের স্বার্থ রক্ষাসহ শিগগিরই তা করা হবে। বিষয়টি এখন কোন প্রক্রিয়ায় আছে, তা বলতে রাজি হননি শ্রম উপদেষ্টা।

শ্রম উপদেষ্টা বলেন, এবারের দিবসের প্রতিপাদ্য ‘শ্রমিক-মালিক এক হয়ে, গড়ব এ দেশ নতুন করে’। তিনি আরও বলেন, ‘একসময় স্লোগান ছিল দুনিয়ার মজদুর, এক হও।’ এখন তা বদলে গেছে। এখন হবে ‘দুনিয়ার মালিক-শ্রমিক, এক হও’। এখন ভালো মালিকেরা শ্রমিকদের সন্তানের মতো মনে করেন।

প্রস্তাবিত অধ্যাদেশে ১০১টি ধারা ও উপধারা সংশোধন হবে। সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় ১০ থেকে ২০ মার্চ অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) গভর্নিং বডির বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এ তথ্য তুলে ধরা হয়।

আইএলওর বৈঠকে যোগ দিতে শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেনের নেতৃত্বে যে দলটি জেনেভা সফর করে, সেখানে শ্রমসচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. হুমায়ুন কবীর, যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ হোসেন সরকার ও শ্রম উপদেষ্টার একান্ত সচিব মো. জাহিদুল ইসলাম ছিলেন।

এর আগে গত বছরের ১০ নভেম্বর তৎকালীন শ্রম উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া ও শ্রমসচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান আইএলওর গভর্নিং বডির বৈঠক থেকে দেশে ফিরে সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, মার্চের মধ্যে শ্রম আইন সংশোধন হবে। উপদেষ্টা তখন এ–ও বলেছিলেন, আগের সরকারের আইনমন্ত্রীর (আনিসুল হক) নেতৃত্বাধীন দলকে আইএলও পর্ষদে অপদস্থ করা হয়েছিল। অথচ এবারের চিত্র ছিল ভিন্ন। বাংলাদেশের পদক্ষেপগুলো নিয়ে বরং প্রশংসা করা হয়েছে। কয়েকটি দেশ বাংলাদেশের বিরুদ্ধে হওয়া মামলাগুলো তুলে নেওয়ার কথাও বলেছিল।

জানা গেছে, শ্রম অধিকার বাস্তবায়নে ঘাটতির অভিযোগ এনে জাপানসহ ছয়টি দেশের পক্ষ থেকে আইএলওতে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। মামলাগুলো চলমান।

আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক খাত মিলিয়ে দেশে ৭ কোটি ৬৫ লাখ শ্রমিক রয়েছে। এদিকে ত্রিপক্ষীয় পরামর্শ পরিষদকে (টিসিসি) শ্রমিকপক্ষ জানিয়েছে, আইন সংশোধনের সময় সব শ্রমিকের কথা মাথায় না রেখে প্রধানত পোশাক খাতের শ্রমিকদের কথা বিবেচনা করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, মে দিবস আর জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেফটি দিবস উপলক্ষে আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীতে শোভাযাত্রাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি আয়োজন করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ–স্কুল পর্যায়ে রচনা ও প্রবন্ধ লেখার ওপরে বিজয়ীদের পুরস্কার দেওয়া হবে।

এ ছাড়া শ্রম অধিকার বিষয়ে প্রকাশিত বা প্রচারিত মানসম্মত সংবাদ বা স্থিরচিত্র যাচাই করে সাংবাদিক ও চিত্রগ্রাহকদের দেওয়া হবে পুরস্কার।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের মহান মে দিবস আজ
  • কর্মক্ষেত্রে অধিকার আদায়ের রক্তাক্ত গৌরবময় দিন
  • শ্রম আইনের সংশোধন কবে হবে, তা বলছে না শ্রম মন্ত্রণালয়
  • শিগগিরই শ্রম আইন সংশোধন করা হবে: শ্রম উপদেষ্টা 
  • আন্তর্জাতিক নৃত্য দিবসে শিল্পকলা একাডেমির  দুই দিনের আয়োজন
  • মেরাদিয়ায় পশুর হাট বসানো যাবে না, নির্দেশ হাইকোর্টের
  • আইনগত সহায়তা দিবসে আলোচনা সভা-শোভাযাত্রা
  • আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস উপলক্ষে ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছে শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন