ভারতের নুমালিগড় রিফাইনারি লিমিটেড (এনআরএল) থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার মেট্রিক টন ডিজেল আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন বা বিপিসি। এতে খরচ হবে ১ হাজার ১৩৭ কোটি টাকা। গতকাল রোববার সংস্থাটির পরিচালনা পর্ষদের ১০০০তম সভায় আমদানির এই সিদ্ধান্তের অনুমোদন দেওয়া হয়। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে এই ডিজেল আমদানি করা হবে।

চলতি বছর বিপিসির পরিশোধিত জ্বালানি তেলের চাহিদা ৭৪ লাখ মেট্রিক টন। এর মধ্যে ৪৬ লাখ টন ডিজেল, যার ৮০ শতাংশই সরাসরি আমদানি করা হয়। বাকিটা স্থানীয় পরিশোধনাগার থেকে পাওয়া যায়।

ভারতের নুমালিগড় রিফাইনারি লিমিটেড থেকে নিয়মিত পরিশোধিত জ্বালানি তেল আনে বিপিসি। ২০১৬ সালের জানুয়ারি থেকে ট্রেনে আসছে এই তেল। এই রিফাইনারি থেকে তেল আনার পরিমাণ বাড়াতে দুই দেশের মধ্যে তৈরি করা হয়েছে বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী পাইপলাইন। এই পাইপলাইন দিয়ে নুমালিগড় থেকে দিনাজপুরের পার্বতীপুরে জ্বালানি তেল আসছে। গত বছর ভারত থেকে ৭০ হাজার ৫৫ মেট্রিক টন ডিজেল আমদানি করা হয়েছে।

জানতে চাইলে বিপিসির চেয়ারম্যান আমিন উল আহসান প্রথম আলোকে বলেন, চলতি বছর ১ লাখ ৩০ হাজার টন ডিজেল আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত আমদানি হবে ৭০ হাজার টন ও জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত হবে ৪০ হাজার টন। অতিরিক্ত আমদানি ধরা হয়েছে আরও ২০ হাজার টন। পরিচালকদের বোর্ড সভায় আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির অনুমোদনের জন্য প্রস্তাবনাটি জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগে পাঠানো হচ্ছে। সেখানে অনুমোদন পাওয়ার পর আমদানির প্রক্রিয়া শুরু হবে।

বিপিসি সূত্রে জানা যায়, ভারতের বাইরে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুনের মধ্যে সাতটি দেশের আটটি প্রতিষ্ঠান থেকে সোয়া ১৪ লাখ টন পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করবে বাংলাদেশ। ভারত, চীন, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ওমান থেকে এই তেল আমদানি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দেশগুলো থেকে জ্বালানি তেল আমদানিতে ব্যয় হবে ১১ হাজার ৪৭৯ কোটি টাকা। গত বছরের ২৪ অক্টোবর অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়।

বিপিসি সূত্র জানায়, আমদানির প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে গ্যাস অয়েল ৮ লাখ ৮০ হাজার টন, জেট এ-ওয়ান ১ লাখ ৯০ হাজার টন, মোগ্যাস ৭৫ হাজার টন, ফার্নেস অয়েল ২ লাখ ৫০ হাজার টন ও মেরিন ফুয়েল ৩০ হাজার টন।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ