রানে সবার ওপরে জাকির, উইকেটে তাসকিন
Published: 14th, January 2025 GMT
ঢাকা থেকে সিলেট ঘুরে বিপিএল এখন চট্টগ্রামে। ঢাকা ও সিলেটে রান–বন্যাই দেখেছে এবারের বিপিএল। লিটন-তানজিদের সেঞ্চুরিতে সিলেটে ঢাকা ক্যাপিটালস দুর্বার রাজশাহীর বিপক্ষে রেকর্ডের পসরাই সাজিয়েছিল। ঢাকায় যখন এই দুই দলের দেখা হয়েছিল, সেই ম্যাচে বল হাতে আবার রেকর্ড গড়েছিলেন তাসকিন আহমেদ। দুর্বার রাজশাহীর হয়ে খেলা পেসার ৭ উইকেট নিয়ে গড়েন স্বীকৃত টি-টোয়েন্টি তৃতীয় সেরা বোলিংয়ের কীর্তি।
প্রথম ২০ ম্যাচ শেষে ব্যাটিংয়ে রানের হিসেবে সবার ওপরে আছেন সিলেট স্ট্রাইকার্সের জাকির হাসান। ৬ ম্যাচে ৬ বার ব্যাট করে জাকিরের রান ২৫১। তিনটি ফিফটি পাওয়া ব্যাটসম্যান ভালোই অবদান রেখেছেন দলের দুই জয়ে। ১৪৯.
চিটাগং কিংসের পাকিস্তানি ব্যাটসম্যান উসমান খানের চেয়ে ২ ম্যাচ বেশি খেলেও মাত্র ২ রানে এগিয়ে জাকির। উসমান ৪ ইনিংসে ১ সেঞ্চুরিতে করেছেন ২৪৯ রান। স্ট্রাইক রেটও দারুণ তাঁর—১৭১.৭২। ঢাকা ক্যাপিটালসের দুই সেঞ্চুরিয়ান তানজিদ হাসান (২৪৬) ও লিটন দাসও (২৪০) আছেন শীর্ষ পাঁচে। লিটন ১৯৮ রানই করেছেন শেষ দুই ম্যাচে।
সংস্করণটি টি-টোয়েন্টি। তাই শুধু রান দিয়েই ব্যাটসম্যানদের বিচার করা যায় না এখানে। নুরুল হাসানের কথাই ধরা যাক। রান সংগ্রহে শীর্ষ ২৫-ও নেই রংপুর রাইডার্স অধিনায়ক। তবে টুর্নামেন্টের সবচেয়ে কার্যকর, সবচেয়ে বিধ্বংসী ইনিংসটা খেলেছেন এই উইকেটকিপার ব্যাটসম্যানই। সিলেটে ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে শেষ ওভারটায় কী ব্যাটিং করেই না দলকে জেতালেন নুরুল। শেষ ওভারে দলকে জেতাতে দরকার ছিল ২৬ রান। কাইল মায়ার্সের করা ওভারে ৩টি করে চার-ছক্কায় নুরুল তুললেন ৩০ রান। সেদিন ৭ বলে ৩২ রানে অপরাজিত নুরুলের মোট রান ৯৯।
এক ম্যাচে ৭ উইকেট নেওয়া তাসকিন আহমেদই উইকেট শিকারে সবার ওপরে। ৬ ম্যাচে ১৪ উইকেট নেওয়া পেসারের ইকোনমিও দারুণ—৬.৭২। উইকেটে শিকারে শীর্ষ তিনজনই পেসার। খুলনা টাইগার্সের আবু হায়দার ও সিলেট স্ট্রাইকার্সের তানজিম হাসান, দুজনই নিয়েছেন ১১টি করে উইকেট। ৯ উইকেট নিয়ে এরপরই আছেন দুই স্পিনার খুশদিল শাহ, মেহেদী হাসান ও ফাস্ট বোলার নাহিদ রানা।
বোলিং তাসকিন ছাড়া আর কেউ ম্যাচে ৫ উইকেট পাননি। ৪ উইকেট নিয়েছেন মেহেদী হাসান, নাহিদ রানা ও আবু হায়দার।
৪৫৭.১৪নুরুলের ৪৫৭.১৪ স্ট্রাইক রেটের সেই ইনিংসই এবারের বিপিএলে সর্বোচ্চ স্ট্রাইক রেটের ইনিংস। স্ট্রাইক রেটের হিসেবে খুলনা টাইগার্সের ১৮ বলের ফিফটির ইনিংসটি আছে এরপরই। মিরপুরে চিটাগংয়ের বিপক্ষে ২২ বলে ৫৯ রানের ইনিংসে মাহিদুলের স্ট্রাইক রেট ছিল ২৬৮.১৮।
২১৯.২৩কমপক্ষে ১০০ রান করা ব্যাটসম্যানদের মধ্যে স্ট্রাইক রেটে সবার ওপরে ঢাকা ক্যাপিটালসের সাব্বির রহমান।১৬সর্বোচ্চ ১৬টি করে ছক্কা মেরেছেন তিনজন—খুশদিল শাহ, ইয়াসির আলী ও তানজিদ হাসান।উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
চাকরি খেয়ে ফেলব, কারারক্ষীকে কারাবন্দী আ’লীগ নেতা
‘চাকরি খেয়ে ফেলব, দেখে নেব তোমাকে, চেন আমি কে?’ কারবন্দী কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজু (৪৯) মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে ২ কারারক্ষীকে এভাবে হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে দেখতে যান তার কয়েকজন স্বজন। কারা নিয়মানুযায়ী সাক্ষাৎ কক্ষে বেঁধে দেওয়া সময়ে কথা শেষ করার কথা থাকলেও তিনি তার মানতে রাজি নন। তিনি দীর্ঘ সময় কথা বলতে চাইলে সাক্ষাৎ কক্ষে দায়িত্বরত মহিলা কারারক্ষী পপি রানী কারাবন্দী নেতার স্বজনদের সময়ের মধ্যে কথা শেষ করতে বলেন। এতে ক্ষিপ্ত হন আওয়ামী লীগ নেতা সাজু। তখন তিনি বলেন, ‘এই আপনি কে? ডিস্টার্ব করছেন কেন? চিনেন আমাকে? চাকরি খেয়ে ফেলব।’
এ সময় সাক্ষাৎ কক্ষে সাজুর স্বজনরাও পপি রানীর সঙ্গেও আক্রমণাত্মক আচরণ করেন। পপি রানীকে নিরাপদ করতে সুমন নামের আরেকজন কারারক্ষী এগিয়ে এলে তাকে লাথি দিয়ে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন সাজু। উত্তেজনার একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে দ্রুত উপস্থিত হন প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক। তিনি সাজুর স্বজনদের সাক্ষাৎ কক্ষ থেকে চলে যেতে বলেন। তারাও চলে যাওয়ার সময়ে কারারক্ষীদের গালিগালাজ করেন।
এ ব্যাপারে কারারক্ষী পপি রানী বলেন, ‘আমি ডিউটিরত অবস্থায় তিনি আমাকে প্রভাব দেখিয়ে চাকরি খাওয়ার হুমকি দেন ও গালিগালাজ করেন। আমি জেলার স্যারের কাছে বিচার প্রার্থনা করছি।’
প্রত্যক্ষদর্শী কারারক্ষী মো. সুমন বলেন, ‘আমরা তো ছোট পদে চাকরি করি, আমাদের নানান নির্যাতন সহ্য করতে হয়। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া আর কিছু বলতে পারব না।’
প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সাক্ষাৎ কক্ষের ভেতরে পুলিশ সদস্যকে গালিগালাজ করা হয়। পরে আমি গিয়ে পরিবেশ শান্ত করি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুড়িগ্রাম কারাগারের জেলার এ জি মো. মামুদ বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। বন্দীরা আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করলেও আমরা মানবিকতা প্রদর্শন করি। কেউ অতিরিক্ত কিছু করলে জেলের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
উল্লেখ্য, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে গত ৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রংপুর শহরের সড়ক ও জনপথ কার্যালয়ের কাছ থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও শিক্ষার্থী আশিক হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।