গ্যাস দুর্ঘটনা রোধে সেফটি স্ট্যান্ডার্ড প্রণয়ন করবে বিএসটিআই
Published: 14th, January 2025 GMT
গৃহস্থালিতে ব্যবহৃত গ্যাসের রান্নায় দুর্ঘটনারোধে ১৭ সেফটি স্ট্যান্ডার্ড প্রণয়ন করতে যাচ্ছে পণ্যের জাতীয় মান প্রণয়ন ও নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই)।
মঙ্গলবার রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে অনুষ্ঠিত ‘সেফটি স্ট্যান্ডার্ডস ফর ডমেস্টিক গ্যাস কুকিং অ্যাপ্লায়েন্সেস’ শীর্ষক দিনব্যাপী কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ তথ্য জানান বিএসটিআই মহাপরিচালক এস এম ফেরদৌস আলম।
বিএসটিআই, পেট্রোবাংলা এবং এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (এডিবি) যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর হোয়ে ইউন জিয়ং এবং পেট্রোবাংলার পরিচালক (পরিকল্পনা) আব্দুল মান্নান পাটোয়ারী। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বিএসটিআইয়ের পরিচালক (মান) মো.
গত বছরের শেষের দিকে গ্যাসের রান্নায় মিরপুরে ৩২ বছরের রুমা দম্পতির মর্মান্তিক মৃত্যুসহ বিভিন্ন দুর্ঘটনার উদাহরণ তুলে ধরে বিএসটিআই মহাপরিচালক বলেন, গৃহস্থালিতে গ্যাসের রান্নায় দুর্ঘটনার একটি বড় কারণ হলো সেফটি কুকিং অ্যাপ্লায়েন্সের বিষয়ে সচেতন না থাকা। দেরিতে হলেও বিএসটিআই এ ধরনের সেফটি স্ট্যান্ডার্ড প্রণয়ন করতে যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে সংগতি রেখে এসব স্ট্যান্ডার্ড প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
স্ট্যান্ডার্ডগুলো এরই মধ্যে বিএসটিআইর টেকনিক্যাল কমিটিতে অনুমোদন পেয়েছে। উচ্চতর কমিটিতে (ডিভিশনাল কমিটি) অনুমোদন শেষে এটা বাস্তবায়নে বাধ্যবাধকতার বিষয়ে কাজ করবে বিএসটিআই। ওই সেফটি স্ট্যান্ডার্ড বাস্তবায়ন করা হলে এ ধরনের দুর্ঘটনা রোধ করা সম্ভব হবে বলে তিনি জানান।
টেকনিক্যাল সেশনে মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএসটিআইর উপপরিচালক (প্রকৌশল) মো. মুরসালিন মাহফুজ। এছাড়া বক্তব্য দেন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মাসরুর-উর-রহমান, ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রির সিনিয়র সহকারী পরিচালক আবদুর রহিম, জেএমআই এলপিজির ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী লিয়াকত আলীসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের বিশেষজ্ঞরা।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
কর অব্যাহতির রাস্তা সামনে কঠিন হবে
কর অব্যাহতির বিষয়ে নীতি প্রণয়ন করা হবে জানিয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান বলেছেন, ব্যবসায়ীরা শুধু করছাড় চাচ্ছেন। তবে সামনে কর অব্যাহতির রাস্তা কঠিন হয়ে যাবে। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) অডিটোরিয়ামে ‘সামষ্টিক অর্থনীতির দৃষ্টিভঙ্গি এবং রাজস্ব ব্যবস্থা’ শীর্ষক সেমিনারে এমন মন্তব্য করেন তিনি। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ড. মাসরুর রিয়াজ।
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, অর্থ উপদেষ্টা নির্দেশনা দিয়েছেন কর অব্যাহতি বিষয়ে নীতি তৈরি করতে। সেই নীতি আইনে প্রতিফলিত হবে। এ ক্ষেত্রে এনবিআরের প্রস্তাব হলো, সরকার কিংবা এনবিআর কোনো কর অব্যাহতি দিতে পারবে না। এ ক্ষমতা যাবে সংসদের হাতে। এর মানে হলো— কারও সঙ্গে একটু ভালো সম্পর্ক হলে অথবা বোঝাতে সক্ষম হলে কর অব্যাহতি পেয়ে যাবে– এমনটা থাকছে না। কর অব্যাহতির রাস্তা সামনের দিনে কঠিন হয়ে যাবে। এই ধরনের নীতি প্রণয়নের দিকে যাচ্ছে সরকার।
তিনি বলেন, দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বাড়াতে এতদিন ব্যাপক কর অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে এর দরকারও ছিল। এখন নতুন করে ভাবতে হবে। রাজস্ব আয়ের চেয়ে ব্যয় অনেক বেশি। দেশের চাহিদা মেটানোর মতো রাজস্ব আয় হচ্ছে না। রাজস্ব কম কেন– সেই প্রশ্নও তুলছে জনগণ। এসব জায়গায় আরেকটু সচেতন হলে আগামী বাজেটের আকার কিছুটা ছোট হতে পারে।
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, রাজস্ব আয়ের মধ্যে পরোক্ষ করের পরিমাণ অনেক বেশি, যা সভ্য দেশের লক্ষণ নয়। প্রত্যক্ষ কর আদায় বাড়াতে হবে। যে পরিমাণ কর আদায় করার কথা ছিল, তা হচ্ছে না। করযোগ্য সবার থেকে কর আদায় করতে না পারার কারণে করজাল সংকুচিত। কর আদায় বাড়ানোর বিষয়ে নতুন করে ভাবা হচ্ছে।
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, একদিকে আয় বাড়ানো, অন্যদিকে নীতি-সহায়তা দেওয়ার মধ্যে ভারসাম্য আনা বড় চ্যালেঞ্জ। সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো সুশাসনের ঘাটতি। যার যে কাজ করা দরকার, তিনি তা করছেন না। ফলে পদে পদে ভোগান্তি হচ্ছে। সে জন্য আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা জরুরি। এ বিষয়ে কাজ চলছে।
তিনি বলেন, অর্থনীতির খারাপ সময়েও রাজস্ব আদায় আগের চেয়ে বাড়ছে। এপ্রিলে প্রবৃদ্ধি আরও ভালো হবে। যারা কর দিচ্ছেন না, তাদের নোটিশ করা হচ্ছে। আগামী বছর থেকে কোম্পানির কর রিটার্ন অনলাইনে দাখিলের নিয়ম করা হবে।
মাসরুর রিয়াজ বলেন, রমজানের আগে নিত্যপণ্যে করছাড়, পর্যাপ্ত আমদানি এবং সরবরাহ পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় খাদ্য মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমেছে। গত জুলাইয়ের আগ পর্যন্ত টাকা ছাপিয়ে যেভাবে ব্যাংকে তারল্য সহায়তা দেওয়া হয়েছে, এখন তা কমে আসছে। টাকা পাচার কমেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ডলার বিক্রি কমেছে। এর ফলে রিজার্ভ ইতিবাচক। তিনি বলেন, যারা ১৫ থেকে ২০ বছর ধরে কর অব্যাহতি পেয়ে আসছেন, তাদের বিষয়ে এনবিআরকে নতুন করে ভাবা দরকার।
সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির নির্বাহী পরিচালক নুরুল কবীর। ইআরএফ প্রেসিডেন্ট দৌলত আক্তার মালা সভাপতিত্ব করেন। সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম সঞ্চালনা করেন।