রাষ্ট্রযন্ত্র আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের বিভিন্ন প্রস্তুতি নিচ্ছে : হাসনাত আব্দুল্লাহ
Published: 14th, January 2025 GMT
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ফ্যাসিবাদের পক্ষে যেসব মগজ তাদের চিন্তা প্রসারিত করবে তাদের চিন্তার বিপক্ষে আমাদের শক্ত অবস্থান থাকবে।
আপনারা যদি তরুণ প্রজন্মের কথা বুঝতে ব্যর্থ হন আওয়ামী লীগের যে পরিণতি হয়েছে পরবর্তীতে যারা নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে আসবে তাদেরও একই পরিণতি হবে।
আমাদেরকে রক্ত দিতে হয়েছে, ভয়কে জয় করতে হয়েছে। কারণ আমাদের যে দুর্বৃত্তায়ণের রাজনীতি ও প্রতিহিংসার রাজনীতির সংস্কৃতি, তা আমাদের তরুণদেরকে আশাহত করেছে। আমরা জনকল্যাণমূলক কাজ করতে পারিনি। আমরা রাষ্ট্রের মধ্যে নাগরিক হয়ে উঠতে পারিনি।
আমাদের অতীতের যে রাজনৈতিক কাঠামো রয়েছে সেটা আমাদের নাগরিক অধিকার থেকে ইতিহাসের স্তরে স্তরে বঞ্চিত করেছে। এ বঞ্চিতের ক্ষোভ থেকে ক্ষোভের আগুন দিয়ে আমরা ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশ গড়েছি।
মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাঢ়া শহীদ মিনারে জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্রের দাবিতে এক সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
এ সময় হাসনাত আবদুল্লাহ আরও বলেন, যেসব টকশোজীবী, মিডিয়াপাড়া, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবীরা আওয়ামী লীগের মানবাধিকারের জন্য সরব হয়েছেন, তারা ফ্যাসিবাদের তেল, নুন, ঘি খেয়ে এতদিন ফ্যাসিবাদের পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন। ফ্যাসিবাদের পক্ষে যেসব কলমগুলো লিখবে আমরা সেই কলমগুলো ভেঙে দেব, যেসব মিডিয়া কথা বলবে সেসব মিডিয়ার বিপক্ষে আমাদের অবস্থান থাকবে।
আওয়ামী লীগ প্রসঙ্গ টেনে তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্রযন্ত্র আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের জন্য বিভিন্ন প্রস্তুতি নিচ্ছে। আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের রাজনীতিতে পুনর্বাসিত হবে কিনা সেটার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ৫ আগস্ট হয়ে গেছে। সেই সিদ্ধান্ত নতুন করে নেওয়ার কিছুই নাই।
এ বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের রাজনীতি পুনর্বাসিত হবে কিনা সেটা এখন প্রাসঙ্গিক আলাপ নয়। ওয়ার্ড থেকে শুরু করে কেন্দ্র পর্যন্ত আওয়ামী লীগের প্রত্যেকটা নেতাকর্মীকে বিচারের আওতায় আনতে হবে।
তাদের বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আবার যারা তাদেরকে পুনর্বাসনের কথা বলবে, আওয়ামী লীগের উপস্থিতি ছাড়া নির্বাচন পার্টিসিপেটরি হবে না, এসব কথা যারা বলবে আমরা ধরে নেব গত ১৬ বছর আওয়ামী লীগের জাহিলিয়াতের রাজনীতি কায়েমে তাদেরও ইন্ধন ছিল।
তরুণদের মাইসান করার কথা উল্লেখ করে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, আমাদের পরবর্তী বাংলাদেশ বিনির্মাণ হবে অতীতে যারা রাজনীতি করেছে তাদের অভিজ্ঞতা ও তরুণ প্রজন্মের ভয়হীন মনোভাব এ দুটোর সংমিশ্রণে। কিন্তু এখানে যদি তরুণদের মাইনাস করার কোনো ধরনের চিন্তা থাকে, গণঅভ্যুত্থানের একক এজেন্ডার প্রবণতা আমরা দেখতে পাচ্ছি।
তিনি বলেন, আমাদের আল্টিমেটাম ১৫ তারিখ পর্যন্ত। অন্তর্র্বতী সরকার আমাদের কমিটমেন্ট দিয়েছে সব রাজনৈতিক দলের ঐকমত্যের ভিত্তিতে প্রক্লেমেশন করা হবে। তবে দুঃখজনক হলো আমরা এখনও কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ নিতে দেখিনি।
আপনাদের উপদেষ্টা বানিয়েছি, আপনারা আমাদের প্রতিনিধিত্ব করছেন। আপনাদের যদি মনে হয় এখানে কোনো বাধা আছে, সেটা জনগণের কাছে প্রকাশ করুন। আমরা আবারও রাস্তায় নেমে আসবো। যদি ব্যর্থ হন তাহলে উপদেষ্টা থেকে জনগণের কাতারে নেমে আসুন।
এ সময় জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন বলেন, এই নারায়ণগঞ্জ একটা দুর্গ হয়ে বাংলাদেশকে নতুন আশা দেখিয়েছিল। বাংলাদেশের প্রতিটি স্থানে, প্রতিটি জোনে তরুণরা যে অভূতপূর্ব সাড়া দেখিয়েছিল তা কখনও ভুলে যাওয়ার মতো নয়।
কিন্তু অভ্যুত্থানের পর নানা পক্ষ নানাভাবে এসব আমাদের ভুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। এক দফা দাবি কোন ব্যানারের নেতৃত্বে কারা উচ্চারিত করেছিল তাও বিকৃত করা হচ্ছে। তরুণদেরকে আবারও একত্রিত হতে হবে।
নতুন সংবিধান রচনার দাবি জানিয়ে সামান্তা বলেন, মুজিববাদকে বাংলাদেশ থেকে উৎখাত করতে হবে। মুজিববাদ দিয়ে বাংলাদেশের তরুণদের দীর্ঘদিন কনফিউজ করে রাখা হয়েছে। আমরা আর কনফিউজড না। চব্বিশের তরুণরা দেখিয়েছে, তারা কী করতে পারে।
এরপর ‘জুলাই বিপ্লবের’ ঘোষণাপত্র জারির দাবিতে কেন্দ্রঘোষিত গণসংযোগ কর্মসূচির অংশ হিসেবে জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা চাষাড়া, শিমরাইল ও কাঁচপুর এলাকায় গণসংযোগ ও প্রচারপত্র বিতরণ করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম সদস্য সচিব আব্দুলাহ আল আমিন, যুগ্ম আহ্বায়ক আলী আহসান জোনায়েদ, মুখপাত্র আরেফীন মুহাম্মদ হিজবুল্লাহ, কেন্দ্রীয় সদস্য শওকত আলী, তামিম আহমেদ।
.উৎস: Narayanganj Times
এছাড়াও পড়ুন:
সোনারগাঁ উপজেলা জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের কমিটি গঠন
সোনারগাঁ উপজেলার বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার (১৫ জুন) দুপুরে উপজেলার বিঞ্চান্দী বাজারে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের সোনারগাঁ উপজেলা শাখার ৩৭ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়।
এতে মাওলানা মো.ওমর ফারুক আহবায়ক ও মাওলানা মুজ্জাম্মেল হককে সাধারণ সম্পাদক ও সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক মাওলানা দেলেয়ারকে অনুমোদন দেওয়া হয়।
নারায়ণগঞ্জ জেলা ওলামা দলের আহবায়ক হাফেজ মাওলানা জাকারিয়া এবং সদস্য সচিব হাফেজ মাওলানা মো.মামুন স্বাক্ষরিত ৩৭ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি এ কর্মী সম্মেলনে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে ।
ওলামা দলের নারায়ণগঞ্জ জেলার যুগ্ম আহবায়ক মাওলানা ওমর ফারুকের সভাপতিত্বে এ কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা ওলামা দলের আহবায়ক হাফেজ মাওলানা মো. জাকারিয়া। প্রধান বক্তা ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা ওলামা দলের সদস্য সচিব মোঃ মামুন হাফেজ মাওলানা।
ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা ওলামা দলের যুগ্ম আহবায়ক মো.মুজ্জাম্মেল হক ও সদস্য মুফতী জসিম উদ্দিন সিদ্দিকীর সঞ্চালনায় এ কর্মী সম্মেলন উদ্বোধন করেন নোয়াগাঁও ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ডা.মিজানুর রহমান।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন নোয়াগাঁও ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু বক্কর সিদ্দিক,সিনিয়র সহসভাপতি সেলিম ভূঁইয়া,সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির প্রচার সম্পাদক সেলিম হোসেন দীপু,উপজেলা বিএনপি সদস্য ও নোয়াগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আতাউর রহমান, নোয়াগাঁ ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ফারুক আহমেদ, নোয়াগাঁও ইউনিয়ন ৯নং ওয়ার্ড সভাপতি আবদুল হালিম প্রমূখ।