আদিবাসী ছাত্রদের সমাবেশে হামলায় জড়িতদের শনাক্ত করা হচ্ছে: প্রেস উইং
Published: 16th, January 2025 GMT
রাজধানীর মতিঝিলে আদিবাসী ছাত্রদের শান্তিপূর্ণ সমাবেশে হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এ হামলার সঙ্গে জড়িত দুর্বৃত্তদের আইনের আওতায় আনা হবে। বৃহস্পতিবার সকালে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রেস উইংয়ের এক বিবৃতিতে এ কথা বলা হয়েছে।
এতে বলা হয়, বুধবার মতিঝিলের জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) ভবনের সামনে আদিবাসী ছাত্রদের একটি শান্তিপূর্ণ সমাবেশে হামলার ঘটনা তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে এ ঘটনায় দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য অপরাধীদের শনাক্ত করা হচ্ছে। শিগগিরই গ্রেপ্তার করা হবে। সকল দুর্বৃত্তদের আইনের আওতায় আনা হবে।
বিবৃতিতে বলা হয়, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রকৃত চেতনার আলোকে সরকার দ্ব্যর্থহীন ভাষায় পুনর্ব্যক্ত করছে যে, আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া, জাতিগত বিদ্বেষ ও ধর্মান্ধতার কোনো স্থান নেই বাংলাদেশে।
এতে আরও বলা হয়, সরকার সতর্ক করছে যে, দেশের সম্প্রীতি, শান্তি ও আইনশৃঙ্খলা পরিপস্থী কর্মকাণ্ডে যেই জড়িত হবে তাকে কঠোর পদক্ষেপের সম্মুখীন হতে হবে।
প্রসঙ্গত, পাঠ্যবইয়ে ‘আদিবাসী’ শব্দ-সংবলিত গ্রাফিতি (দেয়ালে আঁকা বিশেষ বার্তাবহ চিত্রকর্ম) রাখার পক্ষে-বিপক্ষে দুটি সংগঠনের কর্মসূচি ঘিরে হামলা-সংঘর্ষে অন্তত ৩৩ জন আহত হয়েছেন। বুধবার রাজধানীর মতিঝিলে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) ভবনের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
পার্বত্য চট্টগ্রামকেন্দ্রিক দুটি সংগঠন সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতা এবং স্টুডেন্টস ফর সভরেন্টির কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের এক পর্যায়ে পুলিশ লাঠিপেটা করে দু’পক্ষকে সরিয়ে দেয়। দুই সংগঠনেরই দাবি, অপর পক্ষ তাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। এ ঘটনায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সদস্যই বেশি।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
এনসিপির উদ্বেগ আদালত অবমাননার শামিল: ইশরাক
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র পদ নিয়ে ইশরাক হোসেনের মামলা, রায় এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) তৎপরতা নিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উদ্বেগ প্রকাশের বিষয়টিকে আদালত অবমাননার শামিল বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির নেতা ইশরাক হোসেন। তিনি বলেছেন, এনসিপি আইনের ব্যাখ্যা এবং আইন সম্পর্কে অজ্ঞ থাকায় ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে জাতিকে বিভ্রান্ত করছে। একই সঙ্গে বিজ্ঞ আদালতের আদেশকে অবমাননা করেছে।
বুধবার রাতে এক প্রতিবাদলিপিতে ইশরাক হোসেনের পক্ষে তাঁর আইনজীবী রফিকুল ইসলাম এ কথা বলেছেন। এর আগে গতকাল বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে গণমাধ্যমে বিবৃতি দিয়েছিল এনসিপি।
দ্রুত মামলা নিষ্পত্তি হওয়া নিয়ে এনসিপির উদ্বেগের বিষয়টি উল্লেখ করে ইশরাক হোসেনের পক্ষে পাঠানো প্রতিবাদলিপিতে তাঁর আইনজীবী বলেন, মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির কারণ নিয়ে এনসিপির বক্তব্য একেবারেই শিশুসুলভ। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় যেকোনো মামলায় দ্রুত নিষ্পত্তির বিজ্ঞ আদালতের একটি সহজাত ক্ষমতা। তা ছাড়া ২০২০ সালে দায়ের করা মামলাটি ২০২৫ সালে নিষ্পত্তি হয়েছে। এটি দীর্ঘ পাঁচ বছরের অধিক সময় অতিক্রান্ত হয়েছে, যা মোটেও সংক্ষিপ্ত সময় নয়; বরং মোকদ্দমাটি আরও আগেই নিষ্পত্তি হওয়া প্রয়োজন ছিল।
নির্বাচনী মামলার নিষ্পত্তি সংক্ষিপ্ত সময়ে হওয়া উচিত উল্লেখ করে প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়, এনসিপির এ জাতীয় বক্তব্য আদালত অবমাননার শামিল। এ ছাড়া এ-সংক্রান্ত যে বক্তব্য দিয়েছে, তার সম্পূর্ণ আইনি অজ্ঞতার বহিঃপ্রকাশ। মামলার তদবিরকারক বাদীর ইচ্ছা অনুযায়ী যে কেউ হতে পারে বিধায় বিজ্ঞ আদালত হলফনামা গ্রহণ করেছেন, যা সম্পূর্ণ আইন মেনেই করা হয়েছে। এ ছাড়া আদালত কোনো প্রকার বিচার-বিশ্লেষণ করেননি বলে যে বক্তব্য এনসিপি দিয়েছে, তা এককথায় তাদের জ্ঞানের স্বল্পতারই বহিঃপ্রকাশ এবং আদালত অবমাননার শামিল।
প্রতিবাদলিপিতে আরও বলা হয়, ‘আদালত যথাযথ আইন মেনেই রায় প্রদান করেন। এ ক্ষেত্রে কেউ যদি ন্যায়বিচার হয়নি বলে মনে করে, তাহলে উচ্চ আদালতে আপিল করার সুযোগ আছে এবং তার বক্তব্য ওই উচ্চ আদালতে রাখারও সুযোগ আছে। এভাবে প্রেসনোট দিয়ে বক্তব্য প্রদান দেশের জনগণকে বিভ্রান্ত করা ও বিজ্ঞ আদালতকে অবমাননা ছাড়া কিছুই নয়।’
২০২০ সালে অনুষ্ঠিত ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের ফল বাতিল করে সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে বিএনপি নেতার ইশরাক হোসেনকে গত ২৭ মার্চ মেয়র ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন আদালত। এর এক মাস পর আদালতের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপির নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গেজেট প্রকাশের পর এটি বর্তমানে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এই মন্ত্রণালয় থেকে শপথ গ্রহণের যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনা করার কথা। তবে কবে নাগাদ শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান হবে, সে বিষয়টি নিয়ে এখন ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে।
নির্বাচনের হিসাব অনুযায়ী আগামী ১৫ মে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র পদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে।