রাজধানীর মতিঝিলে আদিবাসী ছাত্রদের শান্তিপূর্ণ সমাবেশে হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এ হামলার সঙ্গে জড়িত দুর্বৃত্তদের আইনের আওতায় আনা হবে। বৃহস্পতিবার সকালে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রেস উইংয়ের এক বিবৃতিতে এ কথা বলা হয়েছে।  

এতে বলা হয়, বুধবার মতিঝিলের জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) ভবনের সামনে আদিবাসী ছাত্রদের একটি শান্তিপূর্ণ সমাবেশে হামলার ঘটনা তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে এ ঘটনায় দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য অপরাধীদের শনাক্ত করা হচ্ছে। শিগগিরই গ্রেপ্তার করা হবে। সকল দুর্বৃত্তদের আইনের আওতায় আনা হবে। 

বিবৃতিতে বলা হয়, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রকৃত চেতনার আলোকে সরকার দ্ব্যর্থহীন ভাষায় পুনর্ব্যক্ত করছে যে, আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া, জাতিগত বিদ্বেষ ও ধর্মান্ধতার কোনো স্থান নেই বাংলাদেশে।

এতে আরও বলা হয়, সরকার সতর্ক করছে যে, দেশের সম্প্রীতি, শান্তি ও আইনশৃঙ্খলা পরিপস্থী কর্মকাণ্ডে যেই জড়িত হবে তাকে কঠোর পদক্ষেপের সম্মুখীন হতে হবে।

প্রসঙ্গত, পাঠ্যবইয়ে ‘আদিবাসী’ শব্দ-সংবলিত গ্রাফিতি (দেয়ালে আঁকা বিশেষ বার্তাবহ চিত্রকর্ম) রাখার পক্ষে-বিপক্ষে দুটি সংগঠনের কর্মসূচি ঘিরে হামলা-সংঘর্ষে অন্তত ৩৩ জন আহত হয়েছেন। বুধবার রাজধানীর মতিঝিলে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) ভবনের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
পার্বত্য চট্টগ্রামকেন্দ্রিক দুটি সংগঠন সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতা এবং স্টুডেন্টস ফর সভরেন্টির কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের এক পর্যায়ে পুলিশ লাঠিপেটা করে দু’পক্ষকে সরিয়ে দেয়। দুই সংগঠনেরই দাবি, অপর পক্ষ তাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। এ ঘটনায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সদস্যই বেশি।
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক

অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।

বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক। 

আরো পড়ুন:

রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী

‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত

সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।

প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের  প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।

জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।

আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে  বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।

লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ