আল কাদির ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে ১৪ বছর ও তার স্ত্রী বুশরা বিবিকে ৭ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে ইমরানকে ১০ লাখ ও বুশরাকে ৫ লাখ রুপি জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানা অনাদায়ে ইমরানকে অতিরিক্ত ছয় মাস ও বুশরাকে তিন মাস কারাগারে থাকতে হবে। খবর ডনের

আজ শুক্রবার আদিয়ালা কারাগারে স্থাপিত অস্থায়ী আদালতকক্ষে বিচারপতি নাসির জাভেদ রানা এ রায় ঘোষণা করেন। এর আগে তিনবার রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণ করেও তা পেছানো হয়েছিল।

রায় ঘোষণা উপলক্ষে আদিয়ালা কারাগারের বাইরে আজ কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়। রায় ঘোষণার পর আদালতকক্ষ থেকে বুশরাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খান বর্তমানে রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে বন্দী। ১৯ কোটি পাউন্ড তছরুপের অভিযোগে তার ও বুশরা বিবির বিরুদ্ধে আল-কাদির ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা করেছিল পাকিস্তানের ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টাবিলিটি ব্যুরো (এনএবি)। মামলায় ২০২৩ সালের মে মাসে ইমরানকে গ্রেপ্তার করা হয়। আর সাধারণ নির্বাচনের পরপর গত বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি মামলায় ইমরান ও বুশরাকে অভিযুক্ত করা হয়।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, ইমরান ও বুশরা বাহরিয়া টাউন লিমিটেডের কাছ থেকে কোটি কোটি রুপি এবং অনেক জমি নিয়েছিলেন। ইমরানের নেতৃত্বাধীন পূর্ববর্তী পিটিআই সরকারের সময় যুক্তরাজ্য পাকিস্তানকে যে পাঁচ হাজার কোটি রুপি অর্থ ফেরত দিয়েছিল, তা বৈধ করতে এসব লেনদেন করা হয়েছে।

গত ২৩ ডিসেম্বর ইসলামাবাদের অ্যাকাউন্টাবিলিটি আদালতে মামলার রায় ঘোষণার কথা ছিল। তবে শীতকালীন ছুটির কারণে ৬ জানুয়ারি পর্যন্ত রায় স্থগিত করা হয়। ৬ জানুয়ারি বিচারপতি নাসির জাভেদ রানা ছুটিতে থাকায় সেদিনও রায় ঘোষণা করা হয়নি। এরপর ১৩ জানুয়ারি রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু ইমরান ও বুশরা আদিয়ালা কারাগারে স্থাপিত আদালতকক্ষে হাজির হতে পারেননি উল্লেখ করে সেদিনও রায় স্থগিত করা হয়। অবশেষে আজ রায় ঘোষণা করা হলো।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইমর ন খ ন ইমর ন

এছাড়াও পড়ুন:

আসামির কাঠগড়ায় সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের ৪৫ মিনিট

সকালে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে একটি প্রিজন ভ্যানে করে সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হককে আদালতে আনা হয়। সকাল ৯টার দিকে তাঁকে রাখা হয় ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের হাজতখানায়। এর প্রায় আধা ঘণ্টা পর সকাল সাড়ে নয়টার আগে হাজতখানার ভেতর থেকে এ বি এম খায়রুল হককে বের করা হয়। এ সময় তাঁর মাথায় ছিল পুলিশের হেলমেট, বুকে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট।

হাজতখানার ভেতর থেকে হাঁটিয়ে আদালতের ভেতরের একটি সরু রাস্তা দিয়ে খায়রুল হককে নিচতলায় সিঁড়ির সামনে আনা হয়। পরে দুজন পুলিশ কনস্টেবল সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের হাত ধরে রাখেন। তিনি হেঁটে হেঁটে নিচতলা থেকে দোতলায় ওঠেন। পরে দোতলা থেকে আবার হেঁটে হেঁটে তিনতলায় ওঠেন। পরে তাঁকে নেওয়া হয় আসামির কাঠগড়ায়। তখন সময় সকাল ৯টা ৩৫ মিনিট। নিজের দুই হাত পেছনে রেখে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকেন সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক। তখনো বিচারক আদালতকক্ষে আসেননি। তবে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলিরা আদালতকক্ষে উপস্থিত ছিলেন। তখন দেখা যায়, সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক মাথা উঁচু করে সামনের দিকে তাকাতে থাকেন। কিছুক্ষণ দেখার পর আবার মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকেন।

সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটের দিকে আদালতকক্ষে আসেন ঢাকার সিএমএম আদালতের অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (এসিএমএম) মো. ছানাউল্লাহ। এ সময় একজন পুলিশ কর্মকর্তা এ বি এম খায়রুল হকের নাম ধরে ডাকেন।

তখন রায় জালিয়াতির অভিযোগে করা শাহবাগ থানার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) খালেক মিয়া সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হককে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন। এসআই খালেক মিয়া আদালতকে বলেন, ‘মাননীয় আদালত, ত্রয়োদশ সংশোধনীর রায় বাতিল করে ২০১১ সালের ১০ মে একটি সংক্ষিপ্ত রায় দেন সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ। সেই সংক্ষিপ্ত রায়ে সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক মতপ্রকাশ করেন যে পরবর্তী ১০ম ও ১১তম সংসদ নির্বাচন দুটি সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনীর অধীনে অনুষ্ঠিত হতে পারে। সে ক্ষেত্রে সাবেক প্রধান বিচারপতি বা আপিল বিভাগের বিচারপতিদের নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া যাবে না বলেও সংবিধান সংশোধনের জন্য মত দেন। ওই সংক্ষিপ্ত আদেশটি সংখ্যাগরিষ্ঠের ভিত্তিতে দেওয়া হয়। সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের সঙ্গে সংক্ষিপ্ত আদেশের পক্ষে বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেন (পরবর্তী সময়ে প্রধান বিচারপতি), সুরেন্দ্র কুমার সিনহা (পরবর্তী সময়ে প্রধান বিচারপতি) ও সৈয়দ মাহমুদ হোসেন (পরবর্তী সময়ে প্রধান বিচারপতি) মত দেন। তবে আপিল বিভাগের বিচারপতি আব্দুল ওয়াহাব মিয়া, বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা রায়ের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেন। অর্থাৎ আপিল বিভাগের এই তিন বিচারপতি ত্রয়োদশ সংশোধনী অবৈধ মর্মে ঘোষণার বিপক্ষে মত দেন।’

প্রিজন ভ্যানে সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক। আজ বুধবার ঢাকার আদালত এলাকায়

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আসামির কাঠগড়ায় সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের ৪৫ মিনিট