রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (রুয়েট) নির্মণাধীন পুরকৌশল বিভাগের একাডেমিক ভবনের ছাদ থেকে পড়ে এক শ্রমিক নিহত হয়েছে।

শনিবার (১৮ জানুয়ারি) সকাল ৮টার দিকে দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. শংকর কুমার বিশ্বাস।

নিহত শ্রমিকের নাম মো.

আব্দুস সালাম (২৫)। তিনি পঞ্চগড় জেলার বোদা থানার দড়িপাড়া গ্রামের মো. আয়নুল হক ছেলে। রুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের একাডেমিক সেকশনের নির্মাণাধীন ভবনে রাজমিস্ত্রী হিসেবে কর্মরত ছিলেন তিনি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কোন নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছাড়াই সকালে রড বাঁধায়ের কাজ করছিলেন সালাম। এক পর্যায়ে সকাল ৮টার দিকে হটাৎ অসাবধানতাবশত পাঁচতলার ছাদ থেকে পড়ে যান। পরে সেখানে কর্মরত অন্য শ্রমিকরা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান।

মৃত্যুর বিষয় নিশ্চিত করে ডা. শংকর কুমার বিশ্বাস বলেন, “তার মাথা থেতলানো ও শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাতের চিহ্ন ছিল। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে জানতে পারি হাসপাতালে আসার পূর্বেই তার মৃত্যু হয়েছে। ময়না তদন্ত শেষে আইনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তার লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।”

এ বিষয়ে রুয়েটের প্রকল্প পরিচালক অমিত রায় চৌধুরী বলেন, “মৃত্যুর সংবাদটি আমরা কিছুক্ষণ আগেই জানতে পেরেছি। পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ঘাটতি ছিল। আমাদের নির্দেশনা অনুযায়ী নিরাপত্তা ব্যবস্থা না করায় দায়িত্বরত ঠিকাদারকে বহিষ্কার করেছি। তাছাড়া একটা তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে এবং সে অনুযায়ি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে “

প্রকল্পের দায়িত্বরত প্রকৌশলী মমিনুল ইসলামসহ সংশ্লিষ্টদের একাধিকবার মুঠোফোনে কল দিয়েও তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব নয়। এছাড়া কর্মরত সব শ্রমিককে ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে নেওয়ায় কোন শ্রমিকের বক্তব্যও পাওয়া যায়নি।

রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় পুরকৌশল বিভাগের একাডেমিক ভবনের প্রকল্পটি ২০২১ সালে একনেকে পাস হয়। ২০২২ সালে শুরু হওয়া প্রকল্পের কাজ ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও মাত্র ৪০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে।

ঢাকা/মাহফুজ/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প রকল প

এছাড়াও পড়ুন:

তেহরান থেকে এক কোটি মানুষ কীভাবে সরে যাবে

ইরানের রাজধানী তেহরান ছাড়ার চেষ্টা করছেন অনেক মানুষ। তবে গত কয়েক দিনের মতোই তেহরানের রাস্তাঘাট এখনো যানজটে ঠাসা।

বিবিসি পার্সিয়ানের প্রতিবেদক ঘোনচে হাবিবিয়াজাদ জানান, তিনি এমন একটি পরিবারকে চেনেন, যারা তেহরান থেকে রওনা হয়ে গন্তব্যে পৌঁছেছে ১৪ ঘণ্টা পর। অথচ এই যাত্রাপথ সাধারণত তিন ঘণ্টায় শেষ হওয়ার কথা।

এত সময় লাগলেও শেষ পর্যন্ত তেহরান থেকে বেরিয়ে আসতে পারায় পরিবারটি নিজেদের ‘ভাগ্যবান’ মনে করছে।

পরিবারটির সদস্যদের ভাষায়, ‘ভাগ্যক্রমে’ শেষ পর্যন্ত তাঁরা তেহরান থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছেন।

তেহরানের বাসিন্দাদের আরও অনেকেই এমন কথা বলেছেন। তাঁরা রাজধানী থেকে বেরিয়ে আসতে পেরে কিছুটা স্বস্তি পেয়েছেন। তবে তাঁদের অনেকে আবার উদ্বিগ্ন প্রিয়জনদের নিয়ে, যাঁরা এখনো তেহরান ছাড়তে পারেননি।

বিবিসির এই সাংবাদিক গত রাতে তাঁর এক বন্ধুকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, তিনি তেহরান ছাড়তে পেরেছেন কি না।

জবাবে বন্ধু বলেন, ‘রাস্তা একেবারে আটকে আছে। এখন বেরোলে শুধু যানজটে আটকে থাকতে হবে। আর এই সময়ে তা খুব একটা বুদ্ধিমানের কাজ হবে না।’

প্রথমে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু তেহরানের একটি অংশের বাসিন্দাদের এলাকা ছাড়তে বলেন। এরপর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, সবাইকে তেহরান ছেড়ে যেতে হবে।

ইরান-ইসরায়েলের মধ্যকার নজিরবিহীন সংঘাত পঞ্চম দিনে গড়িয়েছে। উভয় পক্ষ আকাশপথে পাল্টাপাল্টি হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলের হামলায় ইরানে অন্তত ২২৪ জন নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে ইসরায়েলে নিহত হয়েছেন ২৪ জন।

তেহরানে তখন ভোর সাড়ে চারটা বাজে। তবু বহু মানুষ তখনো জেগে ছিলেন।
সাংবাদিক ঘোনচে হাবিবিয়াজাদ যে ইরানি গ্রুপ চ্যাটগুলোতে আছেন, সব কটিই এখন রূপ নিয়েছে রাজনৈতিক আলোচনার জায়গায়। সঙ্গে কোথায় কোথায় হামলা হচ্ছে, তা জানানোর প্ল্যাটফর্মও হয়ে উঠেছে সেগুলো।

একটি চ্যাট গ্রুপে একজন লিখেছেন, ‘আমি একদম বিধ্বস্ত-শরীরেও, মনেও। টানা চার রাত ঘুমাইনি।’

চ্যাট গ্রুপে আরেকজন জিজ্ঞেস করেছেন, ‘তেহরান থেকে এক কোটি মানুষ কীভাবে সরে যেতে পারে?’

এই প্রশ্নের কোনো উত্তর আসেনি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ