ইরানের সঙ্গে সব ক্ষেত্রে সম্পর্ক জোরদার করতে প্রস্তুত রাশিয়া। আজ সোমবার ক্রেমলিনের পক্ষ থেকে এমন আগ্রহের কথা জানানো হয়েছে। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, দুই দেশের সম্পর্ক ‘নাটকীয়ভাবে’ এগিয়ে যাচ্ছে।

তেহরান ও মস্কোর মধ্যে আগে থেকেই ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। চলতি বছর ইরানের পরমাণু স্থাপনায় ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের হামলার নিন্দা জানিয়েছিল রাশিয়া। ইরান পরমাণু অস্ত্র তৈরি করছে বলে অভিযোগ দেশ দুটির। যদিও শুরু থেকেই পরমাণু অস্ত্র তৈরির বিষয়টি নাকচ করে আসছে তেহরান।

আজ সাংবাদিকেরা পেসকভের কাছে প্রশ্ন করেন, ইরানের পরমাণু প্রকল্প ঘিরে ঘটে যাওয়া নানা ঘটনা কীভাবে দেখছে রাশিয়া? আর এমন পরিপ্রেক্ষিতে দেশটির সঙ্গে মস্কো সম্পর্ক জোরদার করবে কি না? জবাবে পেসকভ বলেন, ‘রাশিয়া অবশ্যই সব ক্ষেত্রে ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক বৃদ্ধি করতে প্রস্তুত আছে। ইরান আমাদের অংশীদার। আর আমাদের সম্পর্ক নাটকীয়ভাবে এগিয়ে যাচ্ছে।’

এদিকে ইরানের সর্বোচ্চ জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের সচিব আলী লারিজানির সঙ্গে গতকাল সাক্ষাৎ করার কথা ছিল রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের এক দূতের। এর এক সপ্তাহেরও কম সময় আগে পুতিনের সঙ্গে দেখা করেছিলেন লারিজানি। সে সময় ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির একটি বার্তা রুশ প্রেসিডেন্টের কাছে পৌঁছে দিয়েছিলেন তিনি।

এর আগে গত জানুয়ারিতে পুতিন ও ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান একটি কৌশলগত অংশীদারত্ব চুক্তিতে সই করেছিলেন। এ ছাড়া গত মাসে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পরমাণু শক্তি সংস্থা রোসাটমের সঙ্গে ইরান একটি চুক্তি করেছে। ওই চুক্তি অনুযায়ী ইরানে চারটি পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করবে সংস্থাটি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পরম ণ

এছাড়াও পড়ুন:

খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নেওয়ার তারিখ আরও পেছাচ্ছে

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ নেওয়ার তারিখ আবারও পেছানো হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে তাঁকে বিদেশ নেওয়ার বিষয়ে গতকাল শুক্রবার সকালে নতুন তারিখ বলা হয়েছিল ৭ ডিসেম্বর। পরে রাতে জানা গেছে, সে তারিখ পিছিয়ে সম্ভাব্য যাত্রার তারিখ ঠিক করা হয়েছে ৯ ডিসেম্বর। এই তারিখও পেছাতে পারে।

খালেদা জিয়ার চিকিৎসা ও বিদেশ পাঠানোর বিষয়ে অবগত একটি সূত্র জানায়, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে তাঁকে বিদেশ পাঠানোর পরিকল্পনা আরও দুদিন পিছিয়ে ৯ ডিসেম্বর করা হয়েছে। তবে তাঁর যাত্রার বিষয়টি নির্ভর করছে তাঁর শারীরিক অবস্থা ও চিকিৎসকদের সিদ্ধান্তের ওপর। তবে গতকাল সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্যে তাঁর শারীরিক অবস্থার উন্নতির বিষয়ে কিছু জানা যায়নি। পরিস্থিতি অনেকটা অপরিবর্তিত রয়েছে।

এদিকে কাতারের ব্যবস্থাপনায় নতুন করে যে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করা হয়েছে, সেটা ৬ ডিসেম্বর ঢাকায় অবতরণের কথা থাকলেও পরে সময়সূচিও পুনর্নির্ধারণ করে ১০ ডিসেম্বর করা হয়েছে।

আরেকটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্স আসছে

এদিকে খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নিতে কাতারের আমিরের পক্ষ থেকে একটি বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পাঠানোর কথা ছিল ঢাকায়। কারিগরি ত্রুটির কারণে সেটি পাঠানোর ক্ষেত্রে জটিলতা তৈরি হওয়ায় বিকল্প হিসেবে দ্রুত একটি ভাড়া করা এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পাঠানোর ব্যবস্থা করছে কাতার সরকার।

গতকাল সন্ধ্যায় ঢাকায় কাতার দূতাবাস এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দুজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

এ বিষয়ে ঢাকায় কাতার দূতাবাসের জনসংযোগ কর্মকর্তা আসাদুর রহমান আসাদ প্রথম আলোকে বলেন, কাতার সরকার জার্মানির একটি প্রতিষ্ঠানের এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে ঢাকায় পাঠাচ্ছে। চিকিৎসক এবং বিএনপি নেতাদের সঙ্গে সময় সমন্বয় করে ওই এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ঢাকায় পৌঁছাবে।

সংশ্লিষ্ট অপর একটি সূত্র জানায়, জার্মানির এফএআই রেন্ট-এ-জেট নামক একটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এই এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি ভাড়া করা হচ্ছে। এটি আসবে জর্জিয়ার রাজধানী তিবিলিসি থেকে। গতকাল বিকেলে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, এই এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি ৬ ডিসেম্বর বিকেলে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ ও পরদিন ৭ ডিসেম্বর ঢাকা থেকে যাত্রার কথা ছিল। পরে রাতে জানা যায়, এই সময়সূচি পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে। নতুন সূচি অনুযায়ী, এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় আসার কথা রয়েছে।

তবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানান, কাতারের আমিরের নির্দেশে খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নিতে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি পাঠানো হচ্ছে। সেটি কবে ঢাকা থেকে লন্ডনের উদ্দেশে যাত্রা করবে, সেটি চিকিৎসক এবং বিএনপি নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে চূড়ান্ত করা হবে।

কূটনৈতিক একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ঢাকা থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে খালেদা জিয়ার সঙ্গে লন্ডনে যাওয়া লোকজনের কলেবর ছোট হবে। প্রাথমিকভাবে বিএনপি ১৮ জনের যে তালিকা করেছে, সেটা থেকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে খালেদা জিয়ার সঙ্গে লন্ডনে যাবেন। তালিকায় থাকা বাকি ব্যক্তিরা বাণিজ্যিক ফ্লাইটে যেতে পারেন।

চিকিৎসকেরা প্রাণপণ চেষ্টা করছেন

গুরুতর অসুস্থ বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার বিষয়ে কয়েক দিন ধরেই আলোচনা চলছিল। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে বিএনপি নেতা ও চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেন জানান, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুসারে তাঁকে লন্ডনে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। শুক্রবার ভোরে কাতারের আমিরের দেওয়া এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তাঁকে লন্ডন নেওয়া হবে।

এর এক ঘণ্টা পর আরেক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই তথ্য দেন। পরে রাতে জানা যায়, কাতারের আমিরের এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ‘কারিগরি সমস্যা’ দেখা দেওয়ায় যাত্রা বিলম্বিত হতে পারে।

গতকাল সকাল ১০টার দিকে বিএনপির মিডিয়া সেল তাদের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে বিএনপির মহাসচিবকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা যদি যাত্রার জন্য উপযুক্ত থাকে এবং মেডিকেল বোর্ড সিদ্ধান্ত দিলে তাহলে তিনি ৭ ডিসেম্বর লন্ডনের উদ্দেশে রওনা দেবেন।

এরপর গতকাল জুমার নামাজের পর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় সংলগ্ন মসজিদে দোয়া মাহফিলের পর মির্জা ফখরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, খালেদা জিয়াকে সুস্থ করে তুলতে চিকিৎসকেরা প্রাণপণ চেষ্টা করছেন। শনিবার এয়ার অ্যাম্বুলেন্স এসে পৌঁছালে রোববার (৭ ডিসেম্বর) তাঁকে লন্ডনে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে বলে চিকিৎসকেরা আশা করছেন।

অবশ্য গতকাল রাতে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র থেকে জানা গেছে, যাত্রার সম্ভাব্য নতুন তারিখ ঠিক করা হয়েছে ৯ ডিসেম্বর।

আরও পড়ুনখালেদা জিয়ার জন্য জার্মানির প্রতিষ্ঠান থেকে ভাড়া করে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পাঠাচ্ছে কাতার৬ ঘণ্টা আগেশাশুড়ির পাশে জুবাইদা রহমানলন্ডন থেকে ঢাকায় পৌঁছানোর পর শাশুড়ি খালেদা জিয়াকে দেখতে বিমানবন্দর থেকে সরাসরি রাজধানীর বসুন্ধরায় এভারকেয়ার হাসপাতালে যান জুবাইদা রহমান। এ সময় সঙ্গে ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান (ডানে)। গতকাল সকালে

সম্পর্কিত নিবন্ধ