‘হ্যান্ডশেক টেকনিকে’ ঘুষ নিয়ে ধরা খেলেন এসআই
Published: 19th, January 2025 GMT
নাটোর সদর থানার এক পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণের একটি ভিডিও প্রকাশ্যে এসেছে। ওই ভিডিওতে দেখা যায়, সদর থানার ভেতরে পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দিতে আসা এক সেবাপ্রার্থীর কাছ থেকে এসআই আমিনুল ইসলাম নামে এক উপ-পরিদর্শক (এসআই) ঘুষ নিচ্ছেন।
শনিবার সন্ধ্যায় ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে রাতেই তাকে সদর থানা থেকে ক্লোজড করে পুলিশ লাইন্সে পাঠানো হয়।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহাবুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, এসআই আমিনুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
এক মিনিট ২০ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের জন্য কাগজপত্র দিতে আসা এক সেবাপ্রার্থী সদর থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক আমিনুল ইসলামের সঙ্গে ‘হ্যান্ডশেকের বাহানায়’ ঘুষ দেন। পরে আমিনুল তা নিয়ে ড্রয়ারে রেখে দেন।
এই ভিডিওটি ধারণকারী অপর ভুক্তভোগী মামুন হোসেন জানান, গত বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) তিনি তার পরিচিত মোবারক হোসেনের হয়ে পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে থানায় আসেন। এসময় থানার ভেতরেই ক্লিয়ারেন্সের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) আমিনুল ইসলাম তার কাছে ঘুষ দাবি করেন।
এসময় অন্য এক আবেদনকারীর কাছ থেকে ঘুষ গ্রহণের একটি ভিডিও ধারণ করে রাখেন ভুক্তভোগী মামুন। পরে পুনরায় তার কাছে ঘুষ দাবি করলে প্রতিবাদ করে থানা থেকে বেড়িয়ে আসেন তিনি। আবেদনকারী মোবারককে বারবার ফোন করে ঘুষ দাবি করেন ওই এসআই।
ভুক্তভোগী মামুন বলেন, যারাই পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের জন্য আবেদন করেন তাদের থেকে কৌশলে পুলিশের অনেক কর্মকর্তা টাকা আদায় করেন। জুলাই-আগস্ট পরবর্তী সময়ে এসেও যদি তারা এভাবে ঘুষ নেয় তাহলে তো আর বলার কিছু থাকল না।
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত এসআই আমিনুল ইসলামের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
সদর থানার ওসি মাহবুর রহমান বলেন, ভিডিওটি আমাদের নজরে এসেছে। সেটি পর্যালোচনা করা হচ্ছে এবং ভুক্তভোগীর সঙ্গে কথা হয়েছে। অভিযুক্ত সাব-ইন্সপেক্টরের বিরুদ্ধে অবশ্যই বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: প ল শ ক ল য় র ন স র জন য সদর থ ন র
এছাড়াও পড়ুন:
ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব
রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সীতা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে বিগত এক মাস ধরে অবস্থান করছেন একদল বন্যহাতি। ১৭ (সতের) দলের এই বন্যহাতির তাণ্ডবে এরইমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগান শ্রমিকদের ঘরবাড়ি, গাছপালা এবং বাগানের অভ্যন্তরে অবস্থিত কাঁচা সড়ক।
এদের তাণ্ডবে বাগানের ২নং সেকশনে বসবাসকারী চা শ্রমিকরা এরইমধ্যে নিজ নিজ বসতবাড়ি ছেড়ে কর্ণফুলি নদীর উত্তর পাড়ে অবস্থান নিয়েছে। এই সেকশনে থাকা বহু ঘর হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ওয়াগ্গা টি লিমিটেডের পরিচালক খোরশেদুল আলম কাদেরী বলেন, “হাতির তাণ্ডবে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগানের নিজস্ব বোট চালক সানাউল্লাহর বসতবাড়ি। এসময় তিনিসহ তার স্ত্রী-সন্তানেরা ঘর হতে বের হয়ে কোনরকমে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে।”
বোট চালক সানাউল্লাহ বলেন, “সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে আমি হাতির গর্জন শুনতে পাই। এসময় একটি বড় হাতি আমার ঘর ভাঙার চেষ্টা চালায়। আমি হতবিহ্বল হয়ে যাই। সেসময় স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে ঘরের পেছন দিয়ে কোন রকমে পালিয়ে বোটে করে এপারে চলে আসি।”
চা বাগানের টিলা বাবু চাথোয়াই অং মারমা বলেন, “বিগত এক মাস ধরে ১৭টি হাতির একটি দল বাগানে অবস্থান করছে। মাঝে মাঝে দলটি সীতা পাহাড়ে চলে গেলেও হঠাৎ বাগানে চলে এসে আসে এবং বাগানের গাছপালা, বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমাদের চা শ্রমিকরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।”
ওয়াগ্গা চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আমিনুর রশীদ কাদেরী বলেন, “বিগত এক মাস ধরে হাতির একটি দল ওয়াগ্গা চা বাগানে অবস্থান নিয়েছে। তাদের দলে সদস্য সংখ্যা সতেরো ১৭টি। সম্প্রতি দুটি নতুন শিশু জন্ম নিয়েছে। শিশু হস্তী শাবককে আশীর্বাদ করার জন্য সীতা পাহাড়ের গভীর অরণ্য থেকে আরো একদল হাতি যোগদান করেছে।”
হাতি খুবই শান্তিপ্রিয় জীব। নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করে। অনেকে বলে থাকেন, মামারা বেরসিক বাদ্য বাজনা, বাঁশির সুর, গলাফাটা গান, গোলা বারুদ, ড্রামের শব্দ পছন্দ করে না। তারা কোলাহল এড়িয়ে চলে।
গতকাল সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্বচক্ষে দেখা হলো। আমাদের টিলা বাবু চাই থোয়াই অং মারমা শ্রমিকদের নিয়ে পাহাড়ের উপর বাঁশির সুর তুলেছে। সুর ও বাদ্য বাজনা এড়িয়ে মামারা (হাতি) চা বাগান পেরিয়ে সদলবলে বাঁশবনের গভীর থেকে গভীরে হারিয়ে গেলো। হয়তো আবার ফিরে আসবে।
কাপ্তাই বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ অফিসার ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, “দিন দিন হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার ফলে হাতি খাবারের সন্ধানে প্রায়ই লোকালয়ে এসে হানা দিচ্ছে। আমাদের উচিত হাতির আবাসস্থল ধ্বংস না করা।”
ঢাকা/রাঙামাটি/এস