হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের জন্য ৪০ কোটি টাকায় কেনা ৩টি অগ্নিনির্বাপণ গাড়ি নিয়ে বিপাকে পড়েছে বেসামরিক বিমান চলাচল (বেবিচক) কর্তৃপক্ষ।

তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পের টাকায় কেনা এসব গাড়ির বয়স এক বছর পার হলেও নানা কারণে এগুলো বুঝে নেয়নি বেবিচক। ফলে গাড়িগুলো শাহজালাল বিমানবন্দর এলাকার ফায়ার স্টেশনের সামনে এখন খোলা জায়গায় অযত্নে পড়ে আছে। 

বেবিচক কর্মকর্তারা জানান, আমদানির সময়েই গাড়িগুলোর ব্যাটারিসহ অধিকাংশ যন্ত্রাংশ নষ্ট ছিল। গত সরকারের আমলে এই তিনটি গাড়ি ক্রয়ে অর্থের নয়ছয় হয়েছে। দরপত্রের নিরাপত্তা নির্দেশনা অনুসারে গাড়ি তিনটি কেনা হয়নি। অধিকাংশ যন্ত্রাংশ নষ্ট থাকার পরও কীভাবে গাড়ি তিনটি আমদানি করা হলো, তা নিয়ে কারও কাছে উত্তর নেই।  

জানা গেছে, গত বছরের শুরুর দিকে এয়ারপোর্ট ঢাকা কনসোর্টিয়ামের (এডিসি) মাধ্যমে চীন থেকে কেনা হয়েছে এসব গাড়ি। তবে এডিসি সরাসরি কোনো মাল ক্রয় করে না। ইউনিমেক নামে বাংলাদেশি একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে গাড়ি তিনটি আমদানি করা হয়। তবে এ বিষয়ে ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কোনো বক্তব্য জানা যায়নি। 

এ ব্যাপারে বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মঞ্জুর কবীর ভুঁইয়া বলেন, আগের চেয়ারম্যানের সময় তৃতীয় টার্মিনাল ফায়ার স্টেশনের জন্য যেসব গাড়ি কেনা হয়েছে, তা নষ্ট থাকলে বুঝে নেওয়া কোনোভাবেই সম্ভব নয়। গাড়িগুলো আমদানির ক্ষেত্রে কোনো নয়ছয় হলে তা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আগের চেয়ারম্যানও গাড়ি তিনটি বুঝে নেননি।

এ ব্যাপারে বিমানবন্দর তৃতীয় টার্মিনাল প্রকল্পসংশ্লিষ্ট কয়েক কর্মকর্তা জানান, অনিয়ম-দুর্নীতির ঘটনায় এরই মধ্যে প্রকল্প পরিচালক একেএম মাকসুদুর রহমানকে অপসারণ করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, ব্যাপক অনিয়ম, দুর্নীতি ও জাল- জালিয়াতির মাধ্যমে প্রকল্পের হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ অনুসন্ধানে কাজ শুরু করেছে দুদক।

এ বিষয়ে বিমানবন্দরের পরিচালক বলেন, তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পে অনিয়ম, দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে কিনা, তদন্ত করছে দুদক। আগেই এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা যাচ্ছে না। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প রকল প আমদ ন

এছাড়াও পড়ুন:

প্রেমিকার বিয়ের দিনে প্রেমিকের লাশ উদ্ধার, হত্যার অভিযোগ পরিবারের

নড়াইলের লোহাগড়ায় প্রেমিকার বিয়ের দিনে প্রেমিক সৈয়দ মাসুম বিল্লাহর (২০) মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মাসুমের বাম হাতের একটি আঙুলের নখ উপড়ে ফেলার আলামত থাকায় তার পরিবার অভিযোগ করছে, এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। 

শুক্রবার (১ আগস্ট) দুপুরে কালনা মধুমতি সেতুর পশ্চিম পাশে রাস্তার ওপর মাসুমকে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে ইজিবাইকের চালক সুজন শেখ তাকে উদ্ধার করে লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। বিকেলে অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।

মাসুম বিল্লাহ লোহাগড়া উপজেলার শালনগর ইউনিয়নের মাকড়াইল গ্রামের মৃত সৈয়দ রকিবুল ইসলামের ছেলে। 

আরো পড়ুন:

জুলাই হত্যাকাণ্ডের মামলায় চট্টগ্রামে প্রথম অভিযোগপত্র দাখিল

সিলেটে স্কুলছাত্র সুমেল হত্যা: ৮ জনের মৃত্যুদণ্ড, ৭ জনের যাবজ্জীবন

মাসুমের স্বজনরা জানিয়েছেন, শালনগর ইউনিয়নের এক কিশোরীর সঙ্গে মাসুমের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। মেয়েটির বিয়ের খবর পেয়ে শুক্রবার (১ আগস্ট) সকালে তিনি ঢাকা থেকে লোহাগড়ায় আসেন। সকালে পরিবারের সঙ্গে তার শেষবার কথা হয়, এরপর থেকে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল।

মাসুম বিল্লাহর চাচা শরিফুল ইসলাম বলেছেন, “আমরা শুনেছি, সকালে লোহাগড়া বাজারের একটি পার্লারে মেয়েটির সঙ্গে মাসুমের কথা হয়। এর পর মেয়েটির বাবার কাছ থেকে হুমকি পায় সে। পরে হাসপাতাল থেকে ফোন পেয়ে মাসুমের মৃত্যুর খবর জানি। তার বাম হাতের  নখ উপড়ানো ছিল। সব মিলিয়ে মনে হচ্ছে, তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।”

মাসুমকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া ইজিবাইক চালক সুজন বলেছেন, “ঘটনাস্থলে কোনো দুর্ঘটনার চিহ্ন ছিল না। তবে মনে হয়েছে, কেউ মাসুমকে গাড়ি থেকে ফেলে দিয়েছে।”

লোহাগড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শরিফুল ইসলাম শনিবার (২ আগস্ট) সকালে সাংবাদিকদের বলেছেন, “আমরা মাসুম বিল্লাহকে মৃত অবস্থায় লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে থানায় নিয়ে আসি। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নড়াইল আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে।” 

ঢাকা/শরিফুল/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ