শেষ ২ বলে জয়ের জন্য ৯ রান দরকার ছিল দুর্বার রাজশাহীর। এনামুল হক বিজয় সেঞ্চুরি থেকে ১ রান দূরে ছিলেন। খুলনা টাইগার্সের পেসার হাসান মাহমুদের করা ওভারের পঞ্চম বলের কোনো উত্তর জানা ছিল না এনামুলের। টো অ্যান্ড ইয়র্কারে কেবল ব্যাটটাই পেতে দিয়েছিলেন। তাতে খুলনার জয় নিশ্চিত হয়ে যায়। শেষ বলটা কেবল বৈধ করলেই হয়।

ওদিকে এনামুল অপেক্ষায় ছিলেন ১ রানের। জয় হাতছাড়ার পর সেঞ্চুরি বঞ্চিত হতে চাননি। শেষ বলে ১ রান নিয়ে বিপিএলের প্রথম ও সব মিলিয়ে নিজের ক্যারিয়ারের তৃতীয় টি-টোয়েন্টি সেঞ্চুরি। ৭ রানের দারুণ জয় তুলে নেয় খুলনা টাইগার্স।

এর আগে আফিফ হোসেন পেয়েছিলেন আসরের প্রথম ফিফটি। উইলিয়াম বোসিস্টো পান দ্বিতীয় ফিফটি ছোঁয়ার স্বাদ। শেষে মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনের ঝড়। তাতে টস জিতে ব্যাটিং করতে নেমে ৪ উইকেটে ২০৯ রান তুলে খুলনা টাইগার্স।

আরো পড়ুন:

চট্টগ্রামে ‘চিটাগং ঝাঁজ’ টের পেল খুলনা

আশ্বাসেও ভরসা নেই ক্রিকেটারদের!

লক্ষ্য তাড়ায় জিসানের শুরুর ঝড়ের পর এনামুলের সেঞ্চুরিতে জবাব দেয় দুর্বার রাজশাহী। ইয়াসির, বার্ল রাখেন অবদান। শেষ ৬ বলে ১৭ রানের লক্ষ্য ছিল তাদের। এনামুল প্রথম বলে চার হাঁকিয়ে সমীকরণ কমিয়ে আনেন। পরের বলে নেন আরো ২ রান। তৃতীয় বল রিভার্স স্কুপ করতে গিয়ে বল মিস করেন এনামুল। পরের বল ফুলটসে ২ রান নেন রাজশাহীর অধিনায়ক। শেষ ২ বলে ৯ রান দরকার থাকলেও শেষ হাসিটা হাসতে পারেননি। ২০২ রান তুলে ম্যাচটা হারতে হয়েছে তাদের। 

বিশাল লক্ষ্য তাড়ায় রাজশাহীর ভালো শুরুর প্রয়োজন ছিল। ৪ ওভারে ৪৭ রান তুলে নেন দুই ওপেনার। জিসান ২টি ছক্কা ও ৩টি চারে দর্শক মাতিয়ে তোলেন। মনে হচ্ছিল তরুণ ওপেনার ভালো ইনিংস উপহার দেবেন। কিন্তু পেসার হাসান বোলিংয়ে এসে প্রথম বলেই তাকে আউট করেন। সঙ্গী হারানোর পর হারিস বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। হাসানের পরের ওভারেই লং অফে রনি তালুবন্দি হন।

এগিয়ে এসে সামনে ডাইভ দিয়ে দারুণ এক ক্যাচ নিলেও রনি কিছুক্ষণ পর ইয়াসিরের লোপ্পা ক্যাচ ছাড়েন। অবশ্য ৩ রানে জীবন পাওয়ার পর ইয়াসির বেশিদূর যেতে পারেননি।২০ রানে রনির বলেই আউট হন। সেখান থেকে বার্লকে সঙ্গে নিয়ে দলকে জয়ের এগিয়ে নিতে থাকেন এনামুল। ৩৩ বলে ফিফটির পর সেঞ্চুরির দিকে এগিয়ে যেতে থাকেন। বার্ল ১৬ বলে ২৫ রান করে যোগ্য সঙ্গ দেন। কিন্তু শেষের হাসিটা তারা কেউই হাসতে পারেননি।

এর আগে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে ইনিংসের শুরু থেকে ছন্দে ছিল খুলনা। আগ্রাসী শুরু এনে দেন নাঈম শেখ ও মেহেদী হাসান মিরাজ। দুই স্পিনার সানজামুল ও জিসানের ওপর চড়াও হয়ে ৩.

৫ ওভারে ৪২ রান তুলে নেন তারা। বিপজ্জনক হয়ে উঠা এই জুটি ভাঙেন জিসান।

২টি করে চার ও ছক্কায় ১৪ বলে ২৭ রান করা নাঈম বোল্ড হন জিসানের বলে। অন্যদিকে ১৩ বলে ৩ চার ও ২ ছক্কায় ২৬ রান করেন মিরাজ। পঞ্চম ওভারে তাকে থামান পেসার তাসকিন আহমেদ। প্রথমবারের মতো খেলতে আসা অ্যালেক্স রস চারে নেমে সুবিধা করতে পারেননি। ৩ বলে ১ রান করে ফেরেন রান আউট হয়ে।

৬ ওভার শেষে ৩ উইকেটে খুলনার রান ৬০ রান। পাওয়ার প্লে’র কাজটা ঠিকঠাক হলেও উইকেট একটু বেশিই হারিয়েছিল। সেখান থেকে জুটি বাঁধেন আফিফ ও বোসিস্টো। তাদের ৭৫ বলে ১১৩ রনের জুটিতেই পাল্টে যায় দলের স্কোরবোর্ডের চিত্র। আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ের সঙ্গে বলের মেরিট অনুযায়ী খেলে অনায়েসে রান তোলেন তারা।

শেষ তিন ম্যাচে আফিফের রান ছিল যথাক্রমে ৩৩, ২৯ ও ২০। এবার ভালো শুরুর পর পেয়েছেন প্রথম ফিফটির স্বাদ। ৪২ বলে ৩টি করে চার ও ছক্কায় করেন ৫৬ রান। স্পিনার ডেয়ালকে মারা একটি ছক্কা ছিল ১১৩ মিটারের।

ওপেনিং থেকে মিডল অর্ডারে নেমে বোসিস্টিও সুযোগটা দারুণভাবে কাজে লাগিয়েছেন। পেয়েছেন নিজের দ্বিতীয় ফিফটি। ৩৭ বলে ৪ চার ও ১ ছক্কায় করেন ৫৫ রান।

পরের গল্পটা শুধুই মাহিদুলের। ১৯তম ওভারে মৃত্যুঞ্জয়কে দুই ছক্কা উড়ানোর পর শেষ ওভারে তাসকিনের বলেও দুই ছক্কা পান হার্ডহিটার ব্যাটসম্যান। তার শেষ ৩০ রানই গড়ে দেয় ব্যবধান।

শেষ ওভার বাদে তাসকিন ছিলেন দুর্দান্ত। সব মিলিয়ে ৩৬ রানে পেয়েছেন ২ উইকেট। ১ উইকেট নেন জিসান আলম।

সিলেটে দুই দলের প্রথম মোকাবিলায় দুর্বার রাজশাহী ২৮ রানে হারিয়েছিল খুলনাকে। খুলনা চট্টগ্রামে নিল প্রতিশোধ। ম্যাচ সেরার পুরস্কার পেয়েছেন ২৫ রানে ২ উইকেট নেওয়া হাসান মাহমুদ।

ঢাকা/ইয়াসিন/সাইফ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব প এল র ন কর উইক ট প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

সায়েমের অলরাউন্ড পারফরম‌্যান্সে পাকিস্তানের জয়ে শুরু

জয়ের ধারাবাহিকতায় পাকিস্তান। বাংলাদেশের বিপক্ষে ঢাকায় শেষ টি-টোয়েন্টি জয়ের পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন ম‌্যাচ সিরিজের প্রথমটিতেও জয় পেয়েছে তারা।

অলরাউন্ড পারফরম‌্যান্সে পাকিস্তানের জয়ের নায়ক সায়েম আইয়ুব। তার ৩৮ বলে ৫৭ রানের ইনিংসে ভর করে পাকিস্তান লাডারহিলে ৬ উইকেটে ১৭৮ রান করে। জবাব দিতে নেমে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৭ উইকেটে ১৬৪ রানের বেশি করতে পারেননি। দারুণ ব‌্যাটিংয়ের পর বোলিংয়ে সায়েম ২০ রানে ২ উইকেট নেন। ১৪ রানের জয়ে সিরিজে ১-০ ব‌্যবধানে এগিয়ে পাকিস্তান।

টস হেরে ব‌্যাটিংয়ে নেমে পাকিস্তান শুরুতে শাহিবজাদা ফারহানের উইকেট হারায়। ১২ বলে ১৪ রান করে আউট হন ডানহাতি ব‌্যাটসম‌্যান। তিনে নেমে ফখর সায়েমকে সঙ্গ দেন। দুজন ৮১ রানের জুটি গড়েন। এ সময়ে ফখর ২ চার ও ১ ছক্কায় ২৪ বলে ২৮ রান করেন। বাকি রান আসে সায়েমের ব‌্যাটে।  এ সময়ে তিনি তুলে নেন ক‌্যারিয়ারের দ্বিতীয় ফিফটি। হোল্ডারের বলে এলবিডব্লিউ হলে থেমে যায় তার ইনিংস।

এরপর হাসান নওয়াজের ১৮ বলে ২৪, সালমান আগার ১০ বলে ১১, ফাহিম আশরাফের ৯ বলে ১৫ রানে পাকিস্তান লড়াকু পুঁজি পায়। শেষ দিকে ১ বল খেলার সুযোগ পান হারিস। ছক্কায় উড়িয়ে পাকিস্তানের শেষটা ভালো করেন তিনি।
বোলিংয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে সেরা ছিলেন শামার জোসেফ। ৩০ রানে নেন ৩ উইকেট।

লক্ষ‌্য তাড়ায় উদ্বোধনী জুটিতে ৭২ রান পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এরপর হঠ‌্যাৎ ছন্দপতন। ৫ রান পেতেই ৩ উইকেট হারায় স্বাগতিকরা। ওই ধাক্কার পর তারা আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। জনসন চার্লস ও জুয়েল অ‌্যান্ড্রু ৩৫ রানের দুটি ইনিংস খেলেন। শেই হোপ (২),  গুদাকেশ মোটি (০), শেফরন রাদারফোর্ড (১১) ও রস্টন চেজ (৫) দ্রুত আউট হন। শেষ দিকে পরাজয়ের ব‌্যবধান কমান হোল্ডার ও জোসেফ। হোল্ডার ১২ বলে ৪ ছক্কায় ৩০ রান করেন। ১২ বলে ১ চার ও ২ ছক্কায় ২১ রান করেন জোসেফ ।

পাকিস্তানের বোলারদের মধ‌্যে সেরা ছিলেন হাসান নওয়াজ। ২৩ রানে ৩ উইকেট নেন বাঁহাতি স্পিনার। সায়েমের ২ উইকেট বাদে ১টি করে উইকেট পেয়েছেন শাহীন শাহ আফ্রিদি ও সুফিয়ান মুকিম।
আগামীকাল একই মাঠে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি অনুষ্ঠিত হবে।

ঢাকা/ইয়াসিন

সম্পর্কিত নিবন্ধ