মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কোটায় ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় নির্বাচিত ১৯৩ জনের ফল স্থগিত করেছে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর। প্রয়োজনীয় যাচাই-বাছাই শেষে এই ১৯৩ জনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

সোমবার (২০ জানুয়ারি) সংস্থাটির অতিরিক্ত মহাপরিচালক (চিকিৎসা শিক্ষা) অধ্যাপক রুবীনা ইয়াসমীন সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

অধ্যাপক রুবীনা ইয়াসমীন বলেন, ‘‘আমরা তাদের কাগজপত্র যাচাই করব। সেজন্য তিনটা কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। ২৭, ২৮ ও ২৯ জানুয়ারি, এই তিন দিন তারা সব কাগজপত্র নিয়ে মন্ত্রণালয়ে আসবে। সন্তান ছাড়া অন্য কেউ এই তালিকায় রয়ে গেছে কি না, তা আমরা যাচাই করব। যদি সন্তান ছাড়া অন্য কেউ লিস্টে থাকে, তাহলে তার স্থান পাওয়ার কোনো সুযোগই নেই।’’

তিনি আরো বলেন, ‘‘এটা প্রাথমিক ফল। সবকিছু ফাইনাল হবে কাগজপত্র দেখার পর। অন্য সময় মুক্তিযোদ্ধা কোটার কাগজপত্র যাচাই-বাছাই হয় সংশ্লিষ্ট কলেজে, এবার কলেজে যাওয়ার সুযোগ নেই।’’

এর আগে, দুপুরে ঢাকার একটি হোটেলে এ প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ডা.

সায়েদুর রহমান বলেন, ‘‘কোটা বাতিলের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে আদালত থেকে যে রায় দেওয়া হয়েছিল, সেখানে মূল পরিবর্তন হল, নাতি-নাতনির পরিবর্তে সন্তানের কথা বলা হয়েছে। অতএব কোটার বিষয়টিতে ভর্তি হওয়ার ক্ষেত্রে এটা একটা নীতিগত সিদ্ধান্ত। এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষাও প্রচলিত আইন ও বিধি অনুযায়ী হয়েছে। তারপরও এটা স্ক্রুটিনি করা হবে।’’

তিনি বলেন, ‘‘ভর্তির জন্য নির্বাচিতদের মধ্যে ১৯৩ জনের মধ্যে খুবই আনইউজুয়াল হবে, যাদের বয়স ৬৭-৬৮ এবং যাদের সন্তান থাকার সম্ভাবনা খুবই কম। সেখানে যদি কোনো ত্রুটি ধরা পড়ে তাহলে সেটা দেখা হবে। এমবিবিএস পরীক্ষায় মূল কোটা থাকবে কী থাকবে না, এই নীতিগত সিদ্ধান্তটি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নয়, এটি রাষ্ট্রের। আগামী ২৭, ২৮ ও ২৯ জানুয়ারি বিষয়টি যাচাই করা হবে।’’

এর আগে, রবিবার ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর। দেশের ৩৭টি সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য প্রাথমিকভাবে ৫ হাজার ৩৭২ জন নির্বাচিত হয়, যাদের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কোটার ১৯৩ জন রয়েছেন। এরপর, মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় কোটা বাতিলের দাবিতে সরব হন শিক্ষার্থীরা। কম নম্বর পেয়েও ভর্তির জন্য নির্বাচিত হয়েছেন, এমন যুক্তি দিয়ে সমালোচনাও শুরু হয়। প্রকাশিত ফলকে ‘বৈষম্যমূলক’ দাবি করে সেদিন রাতেই কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিক্ষোভ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা মেডিকেল কলেজের একদল শিক্ষার্থী। তারা ফল বাতিলের দাবিও তোলেন।

একই দাবিতে সোমবারও শহীদ মিনারে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বিক্ষোভ-সমালোচনার মুখে ওই ১৯৩ জনের ফল স্থগিতের সিদ্ধান্ত এল।

ঢাকা/হাসান/এনএইচ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক গজপত র পর ক ষ

এছাড়াও পড়ুন:

১০০ কোটি টাকার পাচারের অভিযোগ, জাহাঙ্গীরের নামে মামলা

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দপ্তরের সাবেক পিয়ন জাহাঙ্গীর আলম ওরফে পানি জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে ১০০ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে মামলা করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) নোয়াখালীর চাটখিল থানায় মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে এই মামলা করেছে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট।

আরো পড়ুন:

নাফিসা কামালসহ ৮ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অর্থপাচারের মামলা

সাজিদ হত্যার তদন্তে সিআইডিকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমোদন 

সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান জানান, প্রাথমিক অনুসন্ধানে উল্লেখযোগ্য প্রমাণ পাওয়ায় নোয়াখালীর চাটখিল থানায় জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

তিনি আরো জানান, নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার এক নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান জাহাঙ্গীর আলম জাতীয় সংসদ সচিবালয়ে দৈনিক মজুরিভিত্তিক কর্মচারী হিসেবে কাজ করতেন। পরে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর তিনি অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে স্বল্প সময়ের জন্য ‘ব্যক্তিগত সহকারী’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এই দায়িত্বই তাকে আর্থিকভাবে লাভবান করেছে মর্মে প্রাথমিক অনুসন্ধানে উঠে এসেছে।

জসীম উদ্দিন খান জানান, ২০১০ সালে জাহাঙ্গীর ‘স্কাই রি অ্যারেঞ্জ লিমিটেড’ নামে একটি কোম্পানি গঠন করে বিকাশের ডিস্ট্রিবিউশন ব্যবসা নেন। কিন্তু এর আড়ালে তিনি অসংখ্য সন্দেহজনক ব্যাংকিং কার্যক্রম করেন। কোম্পানির নামে একাধিক ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অস্বাভাবিক অঙ্কের টাকা জমা হয়, যার বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি ও ব্যবসার সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ।

সিআইডির এই কর্মকর্তা জানান, প্রতিষ্ঠানটির অ্যাকাউন্টগুলোতে ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে বিভিন্ন ব্যাংকে মোট ৫৬৫ কোটিরও বেশি টাকা লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য অংশ নগদে জমা হয়েছে দেশের নানা স্থান থেকে। এসব অর্থের উৎস অজানা এবং হুন্ডি ও মানিলন্ডারিং কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত বলে প্রাথমিক প্রমাণ মেলে।

বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দীন জানান, জাহাঙ্গীর আলম তার স্ত্রী কামরুন নাহার ও ভাই মনির হোসেনের সহায়তায় দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ অর্থ লেনদেন করতেন। জাহাঙ্গীর আলম ও তার স্ত্রী ২০২৪ সালের জুন মাসে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান এবং বর্তমানে ভার্জিনিয়ায় অবস্থান করছেন। বিদেশে তাদের বিনিয়োগ বা সম্পদ ক্রয়ের কোনো সরকারি অনুমোদন না পাওয়া গেলেও তারা যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছেন বলে প্রাথমিক অনুসন্ধানে প্রমাণ মেলে।

অনুসন্ধানে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে, জাহাঙ্গীর আলম, তার স্ত্রী কামরুন নাহার, ভাই মনির হোসেন এবং প্রতিষ্ঠান স্কাই রি অ্যারেঞ্জ লিমিটেড যৌথভাবে ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে প্রায় ১০০ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন। অপরাধের পূর্ণাঙ্গ তথ্য উদঘাটন, অপরাপর সদস্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করার স্বার্থে সিআইডির তদন্ত ও অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

ঢাকা/মাকসুদ/সাইফ 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সাংবাদিকদের জন্য নিউইয়র্ক টাইমসের ফেলোশিপ প্রোগ্রাম
  • যশোরে জিআই পণ্য খেজুর গুড় তৈরির রস সংগ্রহে গাছ প্রস্তুতির উদ্বোধন
  • ১০০ কোটি টাকার পাচারের অভিযোগ, জাহাঙ্গীরের নামে মামলা