হতাশ হলে এতদিনে গলায় দড়ি দিতাম, আইপিএল প্রসঙ্গে তাসকিন
Published: 21st, January 2025 GMT
‘‘এর আগে তিনবার আইপিএলে সুযোগ পেয়েও যেতে পারিনি। হতাশ হলে এতদিনে গলায় দড়ি দিয়ে মরে যাওয়ার কথা। হতাশ না। আমার তকদিরে যেটা আছে সেটা সামনে আসবে।’’
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের সংবাদ সম্মেলনে বসে কথা গুলো বলছিলেন তাসকিন আহমেদ। মুখে হাসি থাকলেও তার অন্তরে দহন হচ্ছিল, বলার অপেক্ষা রাখে না।
বিদেশের মাঠে ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে তাসকিন ‘অমাবশ্যার চাঁদ’। বিভিন্ন কারণে প্রায়ই তার খেলা হয় না আইপিএলসহ বিশ্বের অনেক ফ্র্যাঞ্চাইজি প্রতিযোগিতায়। বিশ্বের সবচেয়ে বড় ফ্রাঞ্চাইজি লিগ আইপিএল। সুযোগ পাওয়া বিরাট কিছু। সেখানে বারবার তার অংশগ্রহণ করতে না পারা নিশ্চিতভাবেই হতাশার।
২০২২ সালে চোটে পড়ে ইংল্যান্ডের মার্ক উড ছিটকে গিয়েছিলেন লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টস দল থেকে। উডের পরিবর্তে তখন তাসকিনকে প্রস্তাব দেয় লক্ষ্ণৌ। কিন্তু তখন বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ চলায় মাঝপথে ছাড়তে চায়নি বিসিবি। এরপর ২০২৩-এর আইপিএলের মেগা নিলামে ৫০ লাখ ভিত্তিমূল্য দাম ছিল। তবে কোনো দল তাকে কেনেনি।
এরপর ২০২৪ আইপিএলের নিলামে নাম দেন তিনি। তার ভিত্তিমূল্য ছিল ৭৫ লাখ রুপি। এবারও সামনে চলে আসে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ইস্যু। নিলাম থেকে নাম তুলে নিলেও এরপর তাসকিনকে দলে নেওয়ার জন্য প্রস্তাব দেয় দুটি ফ্র্যাঞ্চাইজি। জানা যায়, এই দুটি দল কলকাতা নাইট রাইডার্স ও পাঞ্জাব কিংস।
এবার পিএসএলের ড্রাফটে নাম তুলেছিলেন তাসকিন। দুর্বার রাজশাহীতে থাকা পাকিস্তানি কোচ এজাজ আহমেদ ও ওপেনার হারিস সোহেল তাসকিনকে নিজেদের দলে নিতে আগ্রহও দেখিয়েছিলেন। কিন্তু ড্রাফটে তাকে দলে নেয়নি কোনো ফ্রাঞ্চাইজি। বিদেশী লিগে অংশগ্রহণ নিয়ে তাসকিন বলেছেন, ‘‘হতাশ না। হতাশার কি আছে। সবচেয়ে বড় বিষয় আমি যেন জাতীয় দলে নিজের সেরাটা সার্ভ করতে পারি। যেখানেই খেলতে পারি যদি ভালো করতে পারি সুযোগ অনেক আসবে।’’
বিপিএলে রাজশাহীর হয়ে ২০ উইকেট পাওয়া তাসকিন এখনো আশা ছাড়ছেন না, ‘‘হয়তো ড্রাফটে পিক হইনি। কোথাও রিপ্লেসমেন্টে প্রয়োজন হলে নিতেও পারে। সেইম অ্যাস পিএসএল। এখানেও …। আমার সাথে সরাসরি কারো কথা হয়নি। এটা ব্যক্তিগতভাবে হয়ও না। এজেন্টের মাধ্যমে হয়।’’
সংবাদ সম্মেলনের শেষ দিকে আইপিএলের পছন্দের দল কোনটা জানতে চাওয়া হলে হাসতে হাসতে তাসকিন উত্তর দেন, ‘‘আমার ইচ্ছা বাংলাদেশ দলে আরো লম্বা সময় খেলা, ভালো খেলার।’’
চট্টগ্রাম/ইয়াসিন
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বন্দীদের ফুল দিয়ে বরণ, চালু হলো ফেনীর দ্বিতীয় কারাগার
সংস্কার শেষে ফেনীর দ্বিতীয় কারাগার চালু হয়েছে। আজ শনিবার সকালে বন্দীদের ফুল দিয়ে বরণ করার মধ্য দিয়ে এ কারার যাত্রা শুরু হয়। এতে চট্টগ্রাম বিভাগের আটটি কারাগারের সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের ও ফেনী জজ আদালতে বিচারাধীন মামলার আসামিদের রাখা হবে।
কারা সূত্র জানায়, দেশের পুরোনো চারটি কারাগারের মধ্যে ফেনী-২ কারাগার একটি। শত বছরের পুরোনো এ কারাগার ভবন ছিল জরাজীর্ণ। এ কারণে ২০১৯ সালে ১২ জানুয়ারি এ কারাগার থেকে বন্দীদের ফেনীর শহরতলির রানীরহাট এলাকার নতুন কারাগারে স্থানান্তর করা হয়। এরপর থেকে কারাগারটি অনেকটা ‘পরিত্যক্ত’ অবস্থায় ছিল।
নতুন করে চালু হওয়া কারাগারটির অবস্থান ফেনী শহরের মাস্টারপাড়ায়। এটি ১৯১৫ সালে সাবজেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এরপর ১৯৯৮ সালে জেলা এটিকে কারাগারে উন্নীত হয়। এ কারাগারের বর্তমান ধারণক্ষমতা ১৭২ জন। এর মধ্যে ১৭০ জন পুরুষ ও ২ জন নারী। কারাগার চালু করার জন্য গতকাল কুমিল্লা জেলা কারাগার থেকে ২৪ জন ও চট্টগ্রাম থেকে চারজন বন্দীকে আনা হয়েছিল। তাঁরা সবাই সশ্রম সাজাপ্রাপ্ত। এ কারাগারে তাঁরা রান্নার দায়িত্বে থাকবেন।
কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, ধাপে ধাপে সাজাপ্রাপ্ত ও বিচারাধীন বন্দীদের ফেনীর দ্বিতীয় কারাগারে আনা হবে। আপাতত এতে কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ২৬ জন, কুমিল্লা থেকে ৭৪ জন, নোয়াখালী থেকে ১৫ জন, লক্ষ্মীপুর থেকে ৪ জন এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ৩৩ জন বন্দী এখানে স্থানান্তর করা হবে। এতে সেল, রান্নাঘর, কিশোর ওয়ার্ড, মসজিদসহ প্রয়োজনীয় সুবিধা রয়েছে। এ কারাগার নিয়ে বর্তমানে দেশে কারার সংখ্যা ৭১।
জানতে চাইলে ফেনী-২–এর জেল সুপার মো. দিদারুল আলম বলেন, ‘রাষ্ট্র চায়, কারাগার শুধু শাস্তির জায়গা নয়, সংশোধনের কেন্দ্র হোক। এরই অংশ হিসেবে সংস্কার শেষে ফেনী কারাগার-২ চালু হয়েছে।’
কারাগারের ভারপ্রাপ্ত জেলার ফেরদৌস মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ কারাগারে স্থানান্তরিত বন্দীদের সব সুযোগ-সুবিধা ইতিমধ্যে নিশ্চিত করা হয়েছে। চিকিৎসক ও প্রশিক্ষিত নার্সও যোগদান করেছেন। বেশির ভাগ পদে কর্মচারীরাও কাজ শুরু করেছেন।’