নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার জাহাজমারা ইউনিয়নের বিরবিরি গ্রামে বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে অনশন করেছেন এক কিশোরী। সোমবার (২০ জানুয়ারি) প্রেমিক সােহেল উদ্দিনের বাড়িতে অবস্থান নেন তিনি। 

প্রেমিক সোহেল উদ্দিন (২৫) উপজেলার জাহাজমারা ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বিরবিরি গ্রামের নবীর উদ্দিনের ছেলে। 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কিশোরীর এক স্বজন জানান, মাদরাসায় যাওয়া আসার পথে কিশোরীকে দেখে প্রেমের প্রস্তাব দেন সোহেল। এতে রাজি না হওয়ায় মেয়েটিকে  উত্যক্ত করতে শুরু করেন সোহেল। এক পর্যায়ে বাধ্য হয়ে সোহেলের সঙ্গে প্রেমে জড়িয়ে পড়েন কিশোরী। কয়েক মাসের মধ্যে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে কিশোরীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করেন সোহেল। এসময় সোহেল অন্তরঙ্গ মুহূর্তের কিছু ছবি তুলে মেয়েটিকে ব্ল্যাকমেইল করতে শুরু করেন। এরই এক পর্যায়ে অন্তঃসত্ত্বা হয় মেয়েটি। পরে গর্ভের সন্তান নষ্ট করতে মেয়েটিকে চাপ দিতে শুরু করেন সোহেল। রাজি না হওয়ায় সম্পর্কের বিষয়টি অস্বীকার করেন সোহেল।

আরো পড়ুন:

কুষ্টিয়ায় জেলা বিএনপির কমিটি বাতিলের দাবিতে কর্মসূচি ঘোষণা

কুড়িগ্রাম
হাসপাতালে অনিয়ম-অব্যবস্থাপনা সমাধানে দুই দিনের আল্টিমেটাম

ভুক্তভোগী কিশোরী আত্মহত্যার হুমকি দিয়ে  বলেন, “সোহেলের সঙ্গে আমার দীর্ঘদিনের সম্পর্ক। আমি দেড় মাসের অন্তঃসত্ত্বা। পেটের সন্তান নষ্ট করতে সোহেল আমাকে মেডিসিন দেয়। মেডিসিন না খাওয়ায় সে আমাকে মারধর করে। একপর্যায়ে বিয়ে করবে না বলেও জানিয়ে দেয়। এখন যদি সে আমাকে বিয়ে না করে আমি আত্মহত্যা করব।”

অভিযুক্ত সোহেল সম্পর্কের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, “অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার বিষয়টি মিথ্যা। বিয়ের বিষয়ে কথা চলছে।”

মো.

নুর নবী নামে স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, “মেয়েটি দুই দিন ধরে বিয়ের দাবিতে অনশন করছে। মেয়েটি আসার খবর পেয়ে সোহেলের পরিবারের সবাই ঘরে তালা দিয়ে পালিয়ে যায়। মেয়ের দাবি, হয় বিয়ে করতে হবে, না হলে তিনি আত্মহত্যা করবেন।”

স্থানীয় ইউপি সদস্য আশরাফ উদ্দিন বলেন, “বিষয়টি সমাধানের জন্য উভয় পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করছি। সমাধান না হলে ভুক্তভোগী ও তার পরিরবার আইনগত ব্যবস্থা নেবেন।”

হাতিয়া থানার ওসি আজমল হুদা বলেন, “বিষয়টি শুনেছি। পুলিশের একটি দল ওই এলাকায় গেছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঢাকা,সুজন/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অনশন কর ন স হ ল

এছাড়াও পড়ুন:

সাহেবগঞ্জ এলাকায় ইপিজেড নির্মাণের সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে গণ–অনশন

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাহেবগঞ্জ এলাকার ফসলি জমিতে ইপিজেড নির্মাণের সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে গণ–অনশন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার গোবিন্দগঞ্জ–দিনাজপুর সড়কের কাটামোড় এলাকায় এ কর্মসূচিতে অংশ নেন শতাধিক সাঁওতাল ও বাঙালি নারী–পুরুষ। পরে বিকেল চারটার দিকে কয়েকজনকে শরবত পান করিয়ে অনশন ভাঙান আমন্ত্রিত অতিথিরা।

সাহেবগঞ্জ বাগদা ফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির এ কর্মসূচিতে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গাইবান্ধা আদিবাসী বাঙালি সংহতি পরিষদের আহ্বায়ক সিরাজুল ইসলাম, সামাজিক সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর কবির, বিশিষ্ট আইনজীবী মোহাম্মদ আলী প্রামাণিক, ফারুক কবীর, সাঁওতাল নেতা স্বপন শেখ, প্রিসিলা মুর্মু, তৃষ্ণা মুর্মু, বিটিশ সরেন, গৌড় পাহাড়ি, রাফায়েল হাসদা, অলিভিয়া হেমব্রম, বার্নাবাস টুডু, লুইস মুর্মু, খিলন রবিদাস প্রমুখ। কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন সাহেবগঞ্জ বাগদা ফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সভাপতি ফিলিমন বাস্কে।

গণ–অনশনে বক্তারা বলেন, গোবিন্দগঞ্জে ইপিজেড নির্মাণ করার মতো সরকারের অনেক জমি পতিত আছে। কিন্তু বিরোধপূর্ণ সাঁওতালদের রক্তভেজা তিন ফসলি জমিতেই কেন ইপিজেড করতে হবে? এ আন্দোলন ইপিজেডের বিরুদ্ধে নয়; বরং বাপ–দাদার জমি উদ্ধারের জন্য তাঁরা আন্দোলন করছেন। এসব জমি উদ্ধার করতে গিয়ে তিন সাঁওতালকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। সেই হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের আজও গ্রেপ্তার করা হয়নি। দোষী ব্যক্তিদের বিচার হয়নি।

বক্তারা বিরোধপূর্ণ জমিতে ইপিজেড নির্মাণ কার্যক্রম বন্ধ, তিন সাঁওতাল হত্যায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার, সাঁওতাল–বাঙালিদের নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও পৈতৃক জমি ফেরত দেওয়ার দাবি জানান। অন্যথায় বৃহত্তর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।

রংপুর চিনিকল সূত্রে জানা যায়, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাহেবগঞ্জ এলাকায় রংপুর চিনিকলের আওতায় ১ হাজার ৮৪২ একর জমি আছে। এই জমিতে উৎপাদিত আখ রংপুর চিনিকলে মাড়াই হতো। চিনিকলে আখমাড়াই বন্ধ হলে সাঁওতালরা দফায় দফায় এই জমি দখল করেন। ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর চিনিকল কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ এসব জমিতে উচ্ছেদে গেলে সাঁওতালদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এতে শ্যামল হেমব্রম, রমেশ টুডু ও মঙ্গল মার্ডি নামে তিন সাঁওতাল নিহত হন। সেই সঙ্গে অন্তত ২০ জন আহত হন।
এ পরিস্থিতিতে শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন রংপুর চিনিকলের জমিতে ইপিজেড স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এ জন্য বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষকে (বেপজা) ইপিজেড বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়। এদিকে চিনিকলের জমিতে ইপিজেড নির্মাণের বিরোধিতা করে সাহেবগঞ্জ বাগদা ফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ডাকসু নির্বাচন কমিশন ও তফসিল ঘোষণা দাবিতে প্রশাসনকে ‘সালাম’
  • বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে অনশনে নারী
  • সাহেবগঞ্জ এলাকায় ইপিজেড নির্মাণের সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে গণ–অনশন