টিসিজেএ ইনডোর ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ
Published: 22nd, January 2025 GMT
টিভি ক্যামেরা জার্নালিস্টস এসোসিয়েশন (টিসিজেএ) চট্টগ্রামের বার্ষিক ইনডোর ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ২০২৪-এর বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম নগরীর নুর আহমদ সড়কের টিসিজেএ মিলনায়তনে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, সংবাদ কর্মীরা নিজেদের ব্যক্তি জীবনের অনেক সুখ-স্বাচ্ছন্দ ত্যাগের মনমানসিকতা নিয়েই এই মহান পেশায় মনোনিবেশ করেছেন। তাই কর্মজীবনের কিছুটা ক্লান্তি দূর করার পাশাপাশি শারীরিক ও মানসিক উৎকর্ষ সাধনের জন্য ক্রীড়া চর্চার প্রতি মনোযোগী হতে সবার প্রতি আহ্বান জানান তারা।
আরো পড়ুন:
ফরিদপুরে সাংবাদিকের বাসার গ্রিল কেটে চুরি
ইয়ুথ জার্নালিস্ট কমিউনিটির সভাপতি কামরুল, সম্পাদক সজিব
এসোসিয়েশনের সভাপতি শফিক আহমেদ সাজীবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন- বনজৌর রেস্টুরেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক পলাশ কান্তি দে। বিশেষ অতিথি ছিলেন- এনুমিয়া আয়শা খাতুন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম রাহী, হোমস টেক্স-এর কর্ণধার ব্যবসায়ী নেতা মুহাম্মদ মহিউদ্দিন, রেষ্টুরেন্ট এন্ড ট্যুরিজম ব্যবসায়ী মো.
টিসিজেএ সহ-সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলমগীরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন- সাবেক সভাপতি এনামুল হক, সহ-সভাপতি ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতা পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক মোহাম্মদ আলী আকবর, সাবেক সাধারণ সম্পাদক দীপংকর দাশ বাবু, সাংগঠনিক সম্পাদক বাসুদেব। স্বাগত বক্তব্য রাখেন- সাধারণ সম্পাদক মো. আশরাফুল আলম চৌধুরী।
অর্ধশত প্রতিযোগির অংশগ্রহণে আয়োজিত টিসিজেএ ইনডোর ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় ক্যারাম এককে চ্যাম্পিয়ন হারুন উর রশিদ, রানার্সআপ শীতল মল্লিক উত্তম, ক্যারাম দ্বৈততে চ্যাম্পিয়ন নুর জামান আতিক ও শীতল মল্লিক উত্তম, রানার্সআপ নাছিরুল আলম ও হারুন উর রশিদ, লুডু এককে চ্যাম্পিয়ন আবদুল আজিজ মুন্না, রানার্সআপ মো. হাসান উল্লাহ, লুডু দ্বৈততে মো. সেলিম উল্ল্যাহ ও নাজিম উদ্দিন, রানার্সআপ মোহাম্মদ আলমগীর ও মো. পারভেজুর রহমান, দাবায় চ্যাম্পিয়ন মো. আলী আকবর, রানার্সআপ রবিউল হোসেন টিপু।
ঢাকা/রেজাউল/মাসুদ
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
চাকরির নামে ইউক্রেন যুদ্ধে পাঠানো চক্রের হোতা গ্রেপ্তার
গত বুধবার ওই চক্রের মূল হোতাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই চক্র চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে লোকজনকে রাশিয়ায় নিয়ে যুদ্ধ অংশ নিতে বাধ্য করে।
আকর্ষণীয় বেতনে চকলেট কারখানায় পরিচ্ছন্নতাকর্মী বা বাবুর্চির কাজের প্রলোভন দেখিয়ে বাংলাদেশ থেকে লোকজনকে রাশিয়ায় নিয়ে যায় একটি চক্র। কিন্তু সেখানে যাওয়ার পর তাঁদের সামরিক প্রশিক্ষণ দিয়ে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশ নিতে বাধ্য করে। ওই যুদ্ধে অংশ নিয়ে কয়েকজন নিহতও হয়েছেন।
গত বুধবার গভীর রাতে ওই চক্রের মূল হোতাকে গ্রেপ্তার করেছে বলে দাবি করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম মুহাম্মদ আলমগীর হোছাইন (৪০)। তাঁকে চট্টগ্রামের শাহ আমানত বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গতকাল শুক্রবার সিআইডির পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়। ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ৪ ফেব্রুয়ারি বনানী থানায় হওয়া মানব পাচার আইনের মামলায় আলমগীরকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। গতকাল তিনি ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। আদালত জবানবন্দি নিয়ে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। আলমগীরের বাড়ি চট্টগ্রামের লোহাগড়া থানার আমতলী মাঝেরপাড়া গ্রামে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সিআইডি প্রাথমিকভাবে জানতে পারে, এই চক্রের সদস্যরা রাশিয়ায় মাসে দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা বেতনে চকলেট কারখানায় পরিচ্ছন্নতাকর্মী বা বাবুর্চির কাজের প্রলোভন দেখিয়ে ১০ জনকে প্রথমে ওমরাহ ভিসায় সৌদি আরব পাঠান। সেখানে তাঁদের ওমরাহ করানোর পর রাশিয়ায় নিয়ে গিয়ে এক সুলতানের কাছে বিক্রি করে দেন। সুলতান তাঁদের দাস হিসেবে রাশিয়ার সেনাদের কাছে হস্তান্তর করেন। সেখানে তাঁদের সামরিক প্রশিক্ষণ দিয়ে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশ নিতে বাধ্য করা হয়। যুদ্ধে অংশ নিতে না চাইলে তাঁদের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়। খাবার বন্ধ করে দিয়ে তাঁদের মানসিক শক্তি ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। পরে ভুক্তভোগীরা বাধ্য হয়ে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশ নেন।
সিআইডির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, যুদ্ধে নাটোরের সিংড়া উপজেলার হুমায়ুন কবির নিহত এবং ঢাকার কেরানীগঞ্জের আমিনুল নামের একজন গুরুতর আহত হন। রাশিয়ায় পাঠানো ১০ জনের মধ্যে একজন নরসিংদীর পলাশ থানার বাসিন্দা মো. আকরাম হোসেন (২৪) প্রশিক্ষণ ক্যাম্প থেকে পালিয়ে যান। পরে তিনি নিজ ব্যবস্থাপনায় গত ২৬ জানুয়ারি বাংলাদেশে ফিরে আসেন। এরপর তিনি ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তাঁর কাছে তথ্য পেয়ে যুদ্ধাহত আমিনুলের স্ত্রী (ঝুমু আক্তার) ঢাকার বনানী থানায় মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে মামলা করেন।
তদন্তে সিআইডি আরও জানতে পারে, ১০ জনের আরেকটি দল সৌদি আরবে অবস্থান করছে। রাশিয়ায় নিয়ে তাঁদের জোরপূর্বক যুদ্ধে অংশ নেওয়ার বিষয়ে জানাজানি হওয়ায়, তাঁরা রাশিয়ায় যেতে অস্বীকৃতি জানান। এ কারণে সেখান থেকে তাঁদের পাসপোর্ট কেড়ে নেওয়া হয়। তাই তাঁরা সৌদি আরবে কোনো কাজ করতে পারছেন না এবং দেশে ফিরতেও পারছেন না।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, গত ৫ ফেব্রুয়ারি রাতে সিআইডি নেপালে পালিয়ে যাওয়ার সময় মানব পাচারকারী চক্রের অন্যতম সদস্য ফাবিহা জেরিন ওরফে তামান্নাকে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করে। ফাবিহা জেরিন ঢাকার বনানীর ড্রিম হোম ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরস লিমিটেডের অংশীদার। সিআইডি ভুক্তভোগীদের দেশে ফিরিয়ে আনতে সংশ্লিষ্ট সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করছে।
অভিযান তদারকির সঙ্গে যুক্ত সিআইডি প্রধান কার্যালয়ের অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার মো. মোস্তাফিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, গ্রেপ্তার আলমগীর ২০০৮ সালে ছাত্র ভিসায় রাশিয়ায় যান। সেখানে বিয়ে করে তিনি ওই দেশের নাগরিকত্ব পান। এ পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ থেকে তিন ক্যাটাগরির ভিসায় ৫০ জনকে রাশিয়ায় নেন। গত এক বছরে ১১ জনকে ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় রাশিয়ার সেনা ক্যাম্পে কাজ করার কথা বলে নিয়ে যান। কিন্তু শর্ত ভঙ্গ করে তাঁদের ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধে অংশ নিতে বাধ্য করেন। সেখান থেকে পাওয়া টাকাও বিভিন্ন খাতে খরচ হয়েছে ফিরিস্তি দিয়ে আলমগীর কেড়ে নেন।
সিআইডির কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, রাশিয়ার হয়ে ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধে অংশ নিয়ে এ পর্যন্ত তিনজন নিহত হয়েছেন বলে তাঁরা জানতে পেরেছেন। তবে রাশিয়ার সরকার দুজন বাংলাদেশি নিহত হওয়ার তথ্য নিশ্চিত করে তাঁদের লাশ বাংলাদেশে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছে।