কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে র্যাগিং, অভিযুক্ত ১৩ শিক্ষার্থীকে শোকজ
Published: 23rd, January 2025 GMT
কালচার শেখানোর নামে র্যাগিংয়ের ঘটনায় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ১৩ শিক্ষার্থীকে শোকজ করা হয়েছে। বিভাগের ১৭তম ব্যাচের বিরুদ্ধে ১৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের র্যাগিংয়ের অভিযোগ উঠলে বুধবার এ সিদ্ধান্ত নেয় বিভাগটি।
জানা যায়, মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ১৭তম ব্যাচের ১৩ শিক্ষার্থী মিলে ১৮তম ব্যাচের ৩২ শিক্ষার্থীদেরকে ডেকে নিয়ে 'চেইন অব কমান্ড' ও 'ভার্সিটির কালচার' শিখানোর নামে অমানুষিক নির্যাতন করে। নানা ম্যানার শেখানোর নামে বিকাল ৫টা থেকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে রাখা হয় তাদের। এসময় দুই নারী শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েন। এর আগে রাতের বেলা ছেলেদেরকে বঙ্গবন্ধু হলের ৪১৬ ও ৮২৪ নাম্বার কক্ষে ও জঙ্গলবাড়ি এলাকায় নিয়ে হেনস্থা করে ফজরের সময় ছেড়ে দেওয়ার ঘটনাও রয়েছে বলে লিখিত অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করেন তারা। অভিযোগের প্রমাণ মেলায় বুধবার সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ১৭তম ব্যাচের ১৩ শিক্ষার্থীকে শোকজ করে বিভাগটি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক নারী শিক্ষার্থী জানায়, আমাদের সিনিয়ররা ডেকে নিয়ে বিকেল ৫টা থেকে রাত ৯/১০টা পর্যন্ত আটকে রেখে নানান ভাবে মানসিক নির্যাতন করে। দাঁড় করিয়ে অপমান করে। অকথ্য ভাষায় গালি-গালাজ করে। নানান ইঙ্গিতে আমাদেরকে অসম্মান করে।
অপর এক নারী শিক্ষার্থী বলেন, আমরা অনেকেই নিজে রান্না করে খাই। আমাদের রাত পর্যন্ত আটকে রাখায় খাওয়া-দাওয়াও করতে পারিনি। তারা কাউকে কিছু না জানাতে বলে ভয় দেখায়।
র্যাগিংয়ের শিকার ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা জানায়, সিনিয়রদের জেলার নাম মুখস্থ, তাদের কি পছন্দ তা মনে রাখতে বলা হয়। নানান ভাবে মেয়েদেরকে হেনস্তা করা হয়। অকথ্য ভাষায় গালিও দেওয়া হয়। এতে আমরা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত।
এ বিষয়ে সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মাসুদুর রহমান জানান, বিভাগ থেকে ইতোমধ্যে অভিযুক্তদেরকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ভবিষ্যতে র্যাগিংয়ের ঘটনায় কাউকে কোনোপ্রকার ছাড় দেওয়া হবে না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ১৩ শ ক ষ র থ
এছাড়াও পড়ুন:
সচিবালয়মুখী শিক্ষক নিবন্ধনধারীদের মিছিলে পুলিশের বাধা, সাউন্ড গ্রেনেড, লাঠিচার্জ
নিষেধাজ্ঞা জারি থাকলেও সচিবালয় অভিমুখে মিছিল নিয়ে অগ্রসর হন ১৭তম শিক্ষক নিবন্ধনধারীরা। মিছিলটি প্রেসক্লাবের সামনে পৌঁছালে বাধা দেয় পুলিশ। মিছিলকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কয়েকটি সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে ও লাঠিচার্জ করে। এতে রাজধানীর প্রেস ক্লাব এলাকায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
আজ রোববার দুপুর সোয়া ১টার দিকে প্রেস ক্লাব সংলগ্ন সচিবালয়ের ৫ নম্বর ফটকের কাছে এ ঘটনা ঘটে। ১৭তম শিক্ষক নিবন্ধনধারীরা এনটিআরসিএর (বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ) আওতায় দ্রুত নিয়োগের দাবিতে প্রেস ক্লাব থেকে সচিবালয়ের দিকে পদযাত্রা শুরু করেন। তবে সচিবালয় এলাকায় আগে থেকে সভা-সমাবেশ, গণজমায়েত, মিছিল ও শোভাযাত্রা নিষিদ্ধ ছিল বলে জানায় পুলিশ।
সরেজমিনে দেখা যায়, মিছিলকারীরা ব্যারিকেড অতিক্রম করে সচিবালয়ের ফটকের কাছাকাছি চলে গেলে পুলিশ তাদের থামার অনুরোধ করে। আন্দোলনকারীরা সেই অনুরোধ না মানলে পুলিশ প্রথমে পাঁচটি ও পরে আরও দুটি সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে এবং লাঠিচার্জ করে। এরপর বিক্ষোভকারীরা প্রেস ক্লাব মোড়ে ফিরে অবস্থান নেন।
শাহবাগ থানার পেট্রোল অফিসার জয়নাল আবেদিন সমকালকে বলেন, সচিবালয় এলাকায় সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ। সচিবালয়ের দিকে এগোতে চাইলে মিছিলকারীদের সরিয়ে দেওয়া হয়। এ সময় তাদের ওপর লাঠিচার্জ কর হয়। এছাড়াও পরিস্থতি নিয়ন্ত্রণে বেশ কয়েকটি সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করা হয়।
মিছিলে অংশ নেওয়া এক নিবন্ধনধারী জানান, আমরা বারবার শান্তিপূর্ণভাবে দাবি জানাচ্ছি। অথচ সরকার বারবার তা উপেক্ষা করছে। এনটিআরসিএ ষষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে যাচ্ছে অথচ আমাদের ১৭তম ব্যাচের সমস্যার সমাধান করছে না। তাই বাধ্য হয়েই আমরা সচিবালয়ের সামনে অবস্থান নিতে চাই।
তাদের প্রধান দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে—
১. ১৭তম ব্যাচের নিবন্ধিত প্রার্থীদের জন্য আপিল বিভাগের রায় অনুসারে বিশেষ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে অন্তত একবার আবেদন করার সুযোগ দিতে হবে।
২. ১৭তম ব্যাচের বিষয় নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ষষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তির কার্যক্রম স্থগিত রাখতে হবে।
৩. আইন ও বিচার মন্ত্রণালয় এবং এনটিআরসিএর সুপারিশ অনুযায়ী দ্রুত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
এখনও আন্দোলনকারীরা প্রেস ক্লাব মোড়ে অবস্থান করছেন। সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে এবং পরিস্থিতি থমথমে রয়েছে।