স্থায়ী ক্যাম্পাসের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন অব্যাহত
Published: 23rd, January 2025 GMT
স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণ ও সাবেক দুই উপাচার্যের অনিয়ম দুর্নীতির তদন্তের দাবিতে তৃতীয় দিনের মত বিক্ষোভ মিছিল ও মহাসড়ক অবরোধ করছে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা। ক্লাস বর্জন করে শিক্ষার্থীরা বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত তারা নগরবাড়ি-বগুড়া মহাসড়ক অবরোধ করে ওই কর্মসূচি পালন করেন। এর আগে একই দাবিতে শিক্ষার্থীরা মঙ্গলবার ও বুধবার মহাসড়ক অবরোধ দেখে বিক্ষোভ পালন করে থাকেন।
বিক্ষোভ চলাকালে সংক্ষিপ্ত সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী আব্দুল মমিন বলেন, গত সাড়ে ৯ বছর আগে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হলেও স্থায়ী ক্যাম্পাস হয়নি। গত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দুর্নীতিতে ছেয়ে গেলেও শুধুমাত্র আশ্বাসের উপরে নির্ভর করে চলছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি। দাবি না আদায় হওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছাড়বে না।
সংগীত বিভাগ চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী হৃদয় সরকার বলেন, দুর্নীতিতে ছেয়ে যাওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণ এখন সময়ের দাবি।
বাংলা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী স্বপন মিয়া বলেন, মুক্ত জ্ঞানচর্চার জন্য এসেছি, কিন্তু তার জন্য যে ধরনের অবকাঠামো দরকার তা গড়ে উঠেনি। অনতিবিলম্বে ক্যাম্পাস নির্মাণ হোক হোক। এটি এখন সকল শিক্ষার্থীদেরই প্রাণের দাবি।
সংগীত বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মির সাব্বির রহমান বলেন, পৃথিবীতে নজিরবিহীন ঘটনার সাক্ষী রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়, অবকাঠামো ছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কীভাবে চলছে, কেউ খবর রাখে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ শুরুর বিষয় সরকারের কাছে আমাদের দাবি।
সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ৪ ব্যাচের ছাত্র রায়হান উদ্দিন বলেন, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণ না হওয়ার নেপথ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের ব্যর্থতা। সেনাবাহিনীর মাধ্যমে দ্রুত কাজটি বাস্তবায়ন হোক।
সমাজবিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী আম্মার বলেন, এটি একটি যৌক্তিক দাবি, যত দ্রুত সম্ভব বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ শুরু হোক।
অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী বায়েজিদ বোস্তামী বলেন, অস্তিত্ববিহীন একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের অস্তিত্ব নেই।
সংগীত বিভাগের শিক্ষার্থী আয়েশা ইয়াসমিন, প্রায় ১২০০ জন শিক্ষার্থী কীভাবে এই বিশ্ববিদ্যালয় পাঠদান গ্রহণ করছেন সরকার খোঁজো রাখে না।
সমাজবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সমুদ্র, সংগীত বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী শাহেদ আক্তার, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী হাবিব আদনানসহ অনেকেই এ সময়ে বক্তব্য রাখেন।
উপাচার্য ড.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স র জগঞ জ সড়ক অবর ধ সরক র র
এছাড়াও পড়ুন:
তিনি হিমালয়ে উঠেছেন সাইকেল নিয়ে
বরফের ওপর সাইকেল নিয়ে সন্তর্পণে এগোচ্ছেন। একটু হড়কে গেলেই অবধারিত মৃত্যু, গিরিখাত বেয়ে একেবারে নিচে। কখনো সাইকেল চালিয়ে, কখনো কাঁধে নিয়ে হাঁটতে হচ্ছিল। এভারেস্ট অঞ্চলের কংমা লা পাস অতিক্রম করার সময় একটু ভয় ভয় লাগছিল। কারণ, এখানটায় এসে মৃত্যুর অনেক ঘটনা আছে। ট্রেইলটা বেশ কঠিন। ১০ কেজি ওজনের সাইকেল কাঁধে, আর ছয়–সাত কেজির ব্যাগ নিয়ে ওপরে উঠতে হচ্ছিল।
‘ভয়ের সঙ্গে আবার সুন্দর মুহূর্তও আছে। পাসগুলো থেকে নামার সময় ভালো লাগত। অপূর্ব সুন্দর সব দৃশ্য,’ বলছিলেন আরিফুর রহমান উজ্জল (৪১)। কুমিল্লার মানুষ, উজ্জল নামেই পরিচিত। গত ৭ সেপ্টেম্বর থেকে সাইকেল নিয়ে চষে বেড়িয়েছেন এভারেস্ট অঞ্চলসহ হিমালয়ের নানা ট্রেক। এসব ট্রেকে সাধারণত পর্বতারোহীরা পায়ে হেঁটে যান। উজ্জল গেছেন দ্বিচক্রযানে চেপে। গতকাল রোববার সন্ধ্যায় সর্বশেষ কথা হয় তাঁর সঙ্গে। তিনি প্রায় দুই মাসের অভিযান শেষ করে কাঠমান্ডুতে এসেছেন।
চ্যালেঞ্জিং এই অভিযানে ছিল কাদামাখা পাথুরে পথ, অতি উচ্চতা, অক্সিজেন স্বল্পতা, ভূমিধস, বরফে ঢাকা পথ, গ্লেসিয়ার ও একদম খাড়া টানা একেকবার ৩–৪ কিলোমিটার রাস্তা। অক্সিজেন স্বল্পতার কারণে রাতে না ঘুমিয়ে পরদিন ট্রেক করতে হয়েছে। বরফ ও রৌদের তাপ, জ্বর, হাতে ফ্রস্টবাইট, পায়ে মাসাল ক্র্যাম্প, বৃষ্টি মাথায় নিয়ে, বাতাসের সঙ্গে যুদ্ধ করে তাঁকে একেকটা পাস অতিক্রম করতে হয়েছে। অনেক পর্বতারোহীর কাছে এটি স্রেফ পাগলামি। এই অভিযানে উজ্জলকে কখনো সাইকেল চালাতে হয়েছে, কখনো কাঁধে বইতে হয়েছে, কখনোবা ঠেলে উপরে তুলতে হয়েছে।
মানাসলু সার্কিট ট্রেইলপর্বতারোহণ এমনিতেই কষ্টসাধ্য কাজ। নিজের শরীরটা ওপরে টেনে তোলাই যেখানে বিরাট চ্যালেঞ্জ, সেখানে উজ্জল সাইকেল নিয়ে এক অভিযানেই ঘুরেছেন এভারেস্টসহ হিমালয়ের তিনটি ট্রেইলে। তিনি ঘুরেছেন নেপালের মানাসলু ও অন্নপূর্ণা সার্কিট ট্রেইল। নেপালের পশ্চিমের এই দুটি ট্রেইলে ঘোরা শেষ করে পাড়ি দিয়েছেন ৭০০ কিলোমিটার পূর্বে এভারেস্টের তিন পাসে। পাস তিনটি হচ্ছে কংমা লা পাস, চো লা পাস এবং রেঞ্জো লা পাস।
৭ সেপ্টেম্বর থেকে অভিযান শুরু করেন এই সাইক্লিস্ট। তার আগে ঢাকা থেকে বিমানে করে গেছেন কাঠমান্ডু। শুরুতেই মানাসলু সার্কিট ট্রেইল। এটা গিরিপথ, রাস্তা। মানাসলু পর্বতকে ঘিরে যে রাস্তা সেটাকে সার্কিট বলে। এই মানাসলুর সর্বোচ্চ বিন্দু, যার উচ্চতা ১৭ হাজার ৩৯০ ফুট। সেখানে নিজের প্রিয় দ্বিচক্রযানটির চাকার ছাপ রেখে এসেছেন। ১৭৪ কিলোমিটার দীর্ঘ সার্কিট ট্রেইলটি শেষ করতে তাঁর ১১ দিন লেগেছে।
রেঞ্জো লা পাস