স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণ ও সাবেক দুই উপাচার্যের অনিয়ম দুর্নীতির তদন্তের দাবিতে তৃতীয় দিনের মত বিক্ষোভ মিছিল ও মহাসড়ক অবরোধ করছে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা। ক্লাস বর্জন করে শিক্ষার্থীরা বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত তারা নগরবাড়ি-বগুড়া মহাসড়ক অবরোধ করে ওই কর্মসূচি পালন করেন। এর আগে একই দাবিতে শিক্ষার্থীরা মঙ্গলবার ও বুধবার মহাসড়ক অবরোধ দেখে বিক্ষোভ পালন করে থাকেন।

বিক্ষোভ চলাকালে সংক্ষিপ্ত সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী আব্দুল মমিন বলেন, গত সাড়ে ৯ বছর আগে  বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হলেও স্থায়ী ক্যাম্পাস হয়নি। গত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দুর্নীতিতে ছেয়ে গেলেও শুধুমাত্র আশ্বাসের উপরে নির্ভর করে চলছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি। দাবি না আদায় হ‌ওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছাড়বে না।

সংগীত বিভাগ চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী হৃদয় সরকার বলেন, দুর্নীতিতে ছেয়ে যাওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণ এখন সময়ের দাবি।

বাংলা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী স্বপন মিয়া বলেন, মুক্ত জ্ঞানচর্চার জন্য এসেছি, কিন্তু তার জন্য যে ধরনের অবকাঠামো দরকার তা গড়ে উঠেনি। অনতিবিলম্বে ক্যাম্পাস নির্মাণ হোক হোক। এটি এখন সকল শিক্ষার্থীদেরই প্রাণের দাবি।

সংগীত বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মির সাব্বির রহমান বলেন, পৃথিবীতে নজিরবিহীন ঘটনার সাক্ষী রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়, অবকাঠামো ছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কীভাবে চলছে, কেউ খবর রাখে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ শুরুর বিষয় সরকারের কাছে আমাদের দাবি।

সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ৪ ব্যাচের ছাত্র রায়হান উদ্দিন বলেন, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণ না হওয়ার নেপথ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের ব্যর্থতা। সেনাবাহিনীর মাধ্যমে দ্রুত কাজটি বাস্তবায়ন হোক। 

সমাজবিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী আম্মার বলেন, এটি একটি যৌক্তিক দাবি, যত দ্রুত সম্ভব বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ শুরু হোক। 
অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী বায়েজিদ বোস্তামী বলেন, অস্তিত্ববিহীন একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের অস্তিত্ব নেই।

সংগীত বিভাগের শিক্ষার্থী আয়েশা ইয়াসমিন, প্রায় ১২০০ জন শিক্ষার্থী কীভাবে এই বিশ্ববিদ্যালয় পাঠদান গ্রহণ করছেন সরকার খোঁজো রাখে না।

সমাজবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সমুদ্র, সংগীত বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী শাহেদ আক্তার, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী হাবিব আদনানসহ অনেকেই এ সময়ে বক্তব্য রাখেন।

উপাচার্য ড.

এস এম হাসান তালুকদার বলেন, চলমান সমস্যার বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনসহ (ইউজিসি) সরকারের নীতি নির্ধারক মহল দীর্ঘদিন থেকেই অবগত রয়েছেন। প্রকল্প বারবার কাটছাঁটের নামে বিগত সরকারের আমলে কালক্ষেপণ করা হলেও সাড়ে ৯ বছরেও স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মিত হয়নি।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স র জগঞ জ সড়ক অবর ধ সরক র র

এছাড়াও পড়ুন:

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের সীমানা পুনর্বিন্যাসের প্রতিবাদে এবার জামায়াতের বিক্ষোভ

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর-বিজয়নগর) আসনের সীমানা পুনর্বিন্যাসের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে জামায়াতে ইসলামী। আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বিজয়নগর উপজেলা জামায়াতের উদ্যোগে ‍উপজেলার চান্দুরা এলাকায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করা হয়।

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ২টি আসনসহ দেশের মোট ৩৯টি সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রাথমিক গেজেট প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সীমানা পুনর্বিন্যাসের আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসন সদর ও বিজয়নগর উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ছিল। নতুন গেজেটে বিজয়নগরের তিনটি ইউনিয়ন—হরষপুর, চান্দুরা ও বুধন্তি ইউনিয়নকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের মধ্যে দেওয়া হয়েছে। ওই ইউনিয়ন তিনটিকে আগের মতো ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের মধ্যে রাখতে গতকাল বৃহস্পতিবার প্রধান নির্বাচন কমিশনের কাছে লিখিত আবেদন পাঠিয়েছেন বিজয়নগর উপজেলার চার বাসিন্দা।

আজকের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা জামায়াতের সভাপতি লুৎফর রহমান। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন উপজেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক রাষ্ট্রু সরকার, চান্দুরা ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি সোহাগ খন্দকার, চান্দুরা হেফাজতে ইসলামের সহসাংগঠনিক সম্পাদক শিহাব সিদ্দিকী, চান্দুরা ইউনিয়ন যুব খেলাফত মজলিসের সাধারণ সম্পাদক তানভীর আহমদসহ আরও অনেকে। তারা আধা ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, বিজয়নগর উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের মধ্যে ৩টিতে প্রায় ৯৬ হাজার ভোটার আছেন, যা উপজেলার মোট ভোটারের প্রায় অর্ধেক। দুই লক্ষাধিক ভোটারবিশিষ্ট উপজেলা একক সংসদীয় আসনের উপযুক্ত হলেও বছরের পর বছর ধরে এটিকে একবার সদর, একবার সরাইল, আবার কখনো নাসিরনগরের সঙ্গে যুক্ত করে অবহেলার শিকারে পরিণত করা হচ্ছে।

তিনটি ইউনিয়নকে আগের আসনে রাখার দাবিতে উপজেলার গোলাম মোস্তফা, এ কে এম গোলাম মুফতি ওসমানী, মো. জাহিদুজ্জামান চৌধুরী ও মো. বায়েজিদ মিয়া স্বাক্ষরিত একটি লিখিত আবেদন গতকাল দুপুরে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কার্যালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে।

বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম জানান, ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়েছে। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

আরও পড়ুনব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের সীমানা পুনর্বিন্যাসের প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ১৭ ঘণ্টা আগে

এর আগে গতকাল বিকেলে উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে কর্মসূচিতে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি স্থানীয় লোকজন অংশগ্রহণে বিজয়নগর উপজেলার চান্দুরা এলাকায় মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করা হয়। এ সময় তাঁরা আধা ঘণ্টার মতো সড়ক অবরোধ করে বিভিন্ন স্লোগান দেন। একই স্থানে আজ বিকেলে একই দাবিতে মিছিল ও সমাবেশ করার কথা আছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ