বিগত ১৫/১৬ বছরে দেশের আর্থিকখাত বিভিন্নভাবে ধ্বংস করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. জাকির হোসেন গালিব।

শনিবার (২৫ জানুয়ারি) পুলিশ-ম্যাজিস্ট্রেসি কনফারেন্সে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

জাকির হোসেন গালিব বলেন, ‘‘এক শ্রেণির লোকজন লুটপাট করে সমস্ত টাকা-পয়সা বিদেশে পাচার করে ভোগ করছে। আমাদের যে অর্থ সম্পদ নিয়ে গেল, তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। বিচারক হিসেবে এসব মামলা দেখছি, আমার কাছে মনে হচ্ছে এগুলোতে গাফিলতি থেকে যাচ্ছে।’’

তিনি বলেন, ‘‘রাষ্ট্র কাঠামোর মধ্যে যা কিছু আছে, সবকিছু বিচারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। কিন্তু আপনারা ওই বিষয়গুলো নজর দিচ্ছেন না, অবহেলিত রয়ে গেছে। ভেজাল ওষুধ কারখানা রয়েছে, সেগুলো শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা দরকার। সেদিন এক মামলায় একজনের সম্পদ নিয়ে দেখলাম দুই শ ৫০ কোটি টাকা। কিন্তু তার তো দুই লাখ কোটি টাকার মালিক।’’

কনফারেন্সে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমানে সভাপতিত্ব করেন। শুভেচ্ছা বক্তব্যে তিনি জুলাই বিপ্লবে আত্মদানকারী শহীদ ও হতাহত শতশত ছাত্র-জনতাকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন। বিচার কাজ ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে তিনি সবাইকে প্রয়োজনীয় মতামত জানানোর আহ্বান জানান। 

অনুষ্ঠানে আইনের ব্যত্যয় ও উত্তরণের উপায় শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকার অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (এসিএমএম) মো.

ছানাউল্ল্যাহ। কনফারেন্সে ঢাকা মহানগর আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী, ঢাকা আইনজীবী সমিতির অ্যাডহক কমিটির সভাপতি খোরশেদ মিয়া আলম, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ নজরুল ইসলাম, ডিএমপির প্রসিকিউশন বিভাগের উপকমিটির তারেক জুবায়ের প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। 

এ ছাড়াও ঢাকার অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট, মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ, ঢাকা সিটির অন্যান্য দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, ডিএমপির বিভিন্ন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উপস্থিত ছিলেন। 

ঢাকা/মামুন/এনএইচ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন

টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।

এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।

গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।

প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ