১৯২৫ সালের ৪ নভেম্বর ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন পরিচালক ঋত্বিক ঘটক। ১৯৭৬ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি মারা যান বরেণ্য এই নির্মাতা। বেঁচে থাকলে আজ জন্মশতবর্ষ উদযান করতেন। ৫০ বছরের জীবনে খুব বেশি সিনেমা উপহার দেননি; মাত্র ৮টি সিনেমা নির্মাণ করে বিশ্বব্যাপী খ্যাতি কুড়ান।

কেবল সিনেমাই বানাননি, অনেককে বানানোও শিখিয়ে গেছেন ঋত্বিক ঘটক। তাদের মধ্যে অন্যতম বলিউড পরিচালক-প্রযোজক বিধু বিনোদন চোপড়া। তার এই নামটি ঋত্বিক ঘটকেরই দেওয়া। এ পরিচালক বলেন, “আমি যখন পুনের ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়াতে (এফটিআইআই) পড়তে যাই, তখন আমার নাম ছিল বিনোদ কুমার চোপড়া।”

আরো পড়ুন:

আমি আজ যা কিছু, সবই নারীদের জন্য: শাহরুখ

১৩ দিনে রাশমিকার সিনেমার আয় কত?

ঋত্বিক ঘটক বিধু বিনোদ চোপড়ার শিক্ষক ছিলেন। একটি ঘটনা বর্ণনা করে এই পরিচালক বলেন, “উনি (ঋত্বিক ঘটক) তখন ফিল্ম ইনস্টিটিউটে পড়াতেন। একদিন আমাকে ডেকে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘তোমার নাম কি?’ আমি বললাম, আমার নাম বিনোদ কুমার চোপড়া। উনি হো হো করে হেসে উঠলেন। তারপর সোজা বললেন, ‘তোমাকে দিয়ে কোনোদিন পরিচালক হওয়া সম্ভব নয়।’ আমি অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করলাম, কেন? উনি বললেন, ‘এটা একটা নাম? নাম হতে হবে ঋত্বিক ঘটক। যাইহোক, তারপর উনি বললেন, ‘তোমার বাড়িতে তোমাকে কী বলে ডাকে?’ আমি বললাম ‘বিধু’ বলে ডাকে। তখন উনি বললেন, ‘তাহলে বিধু বিনোদ চোপড়া। এইবার ঠিক আছে নাম। আসলে আমার এই নামটা উনারই দেওয়া। আমি আমার নামের জন্য উনার কাছে ঋণী।” 

৭৩ বছর বয়েসি বিধু বিনোদন চোপড়া বলেন, “উনি (ঋত্বিক ঘটক) আমাকে শিখিয়েছেন যে, যদি কেউ উৎকর্ষের পিছনে ছুটে, তবে সাফল্য নিজেই ধরা দেবে। এই কথাটাই আমি ‘থ্রি ইডিয়টস’ সিনেমায় বলেছি, বাস্তব জীবনেও আমি সেটাই মানি,” 

ঋত্বিক ঘটক সবসময় তার সঙ্গে বাংলা ভাষায় কথা বলতেন। এ তথ্য উল্লেখ করে বিধু বিনোদন চোপড়া বলেন, “আমি বাংলা বুঝতাম না। স্নেহ ও ভালোবাসা থেকে উনি আমাকে বাঙালি বলে ডাকতেন এবং বাংলাতেই কথা বলতেন।

ঢাকা/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র বলল ন

এছাড়াও পড়ুন:

জুবিনের মৃত্যু নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বিস্ফোরক মন্তব্য

গত ১৯ সেপ্টেম্বর সিঙ্গাপুরে মারা যান ভারতের বরেণ্য সংগীতশিল্পী জুবিন গার্গ। তার মৃত্যু নিয়ে ক্রমশ ধোঁয়াশা তৈরি হচ্ছে। এ গায়কের মৃত্যু মামলায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার নির্দেশে জুবিন গার্গের মৃত্যুতদন্তের জন্য গত সেপ্টেম্বর মাসে ‘সিট’ গঠন করা হয়েছে। আগামী ডিসেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ে চার্জশিট জমা দেবেন তদন্তকারীরা। তার আগে জুবিনের মৃত্যু নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত শর্মা। 

আরো পড়ুন:

ঋত্বিক ঘটক কীভাবে বিধু বিনোদ চোপড়ার নাম রাখেন?

দুই গায়িকার পাল্টাপাল্টি অভিযোগ, দ্বন্দ্ব চরমে

ষড়যন্ত্রের আশঙ্কা করে মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত শর্মা ভারতীয় গণমাধ্যমে বলেন, “১৯ সেপ্টেম্বর সিঙ্গাপুরে জুবিনের রহস্যমৃত্যুকে ‘দুর্ঘটনা’ বলে উল্লেখ করব না। ডিসেম্বর মাসের ১৭ তারিখ জুবিন গার্গের ‘খুন’ এর চার্জশিট জমা দিতে হবে। যদিও আমি ৮ ডিসেম্বরের মধ্যে জমা দিতে বলেছি। আমরা সবদিক থেকে প্রস্তুত।” 

বিষয়টি ব্যাখ্যা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “বিদেশে কোনো ঘটনা ঘটলে চার্জশিট দাখিলের আগে আমাদের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন প্রয়োজন হয়। গতকাল আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকেও বিষয়টি জানিয়েছি, যাতে উনি দ্রুত অনুমোদন দিতে পারেন। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে সিটের পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে চিঠি যাবে। অনুমোদন পেলে, আমরা ৮, ৯ কিংবা ১০ ডিসেম্বর চার্জশিট দাখিল করব।” 

গত ১৯ সেপ্টেম্বর সিঙ্গাপুরের সেন্ট জন’স দ্বীপ থেকে অচেতন অবস্থায় গায়ক জুবিনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেদিনই সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।  

এরপর প্রাথমিক তদন্ত ও ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন ভারতের হাইকমিশনকে সরবরাহ করে সিঙ্গাপুর পুলিশ। তাতে কারণ হিসেবে স্পষ্ট লেখা—“ডুবে যাওয়া”। সাঁতার কাটতে গিয়েই তার মৃত্যু হয়েছে। এরপরও উত্তপ্ত হয়ে পড়ে আসামবাসী। বিষয়টি সিঙ্গাপুর পুলিশও জানতে পারেন।  

গত ১৭ অক্টোবর দুপুরে সিঙ্গাপুর পুলিশ অফিসিয়ালি একটি বিবৃতি প্রকাশ করে। এ বিবৃতিতে বলা হয়, “মিস্টার জুবিন গার্গের মৃত্যু নিয়ে অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া জল্পনা-কল্পনা ও ভুয়া তথ্য সম্পর্কে অবগত সিঙ্গাপুর পুলিশ ফোর্স। বর্তমানে এই মামলা সিঙ্গাপুরের ‘করোনার্স অ্যাক্ট ২০১০’-এর অধীনে তদন্তাধীন। প্রাথমিক তদন্তে, পুলিশ অপরাধমূলক কোনো কিছুই পায়নি।”  

সিঙ্গাপুল পুলিশের তদন্ত শেষ হতে ৯০ দিন সময় লাগতে পারে। এ তথ্য উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, “এ মামলার তদন্ত সম্পূর্ণ করতে আরো তিন মাস বা আরো কিছুটা সময় বেশি লাগবে। তারপর তদন্ত রিপোর্ট সিঙ্গাপুরের স্টেট করোনারের কাছে জমা দেওয়া হবে।” 

জুবিনের মৃত্যুতে আসাম পুলিশ খুনের মামলা দায়ের করেছে। গত ২৫ সেপ্টেম্বর জুবিনের টিমের ড্রামার শেখর জ্যোতি গোস্বামীকে গ্রেপ্তার করা হয়। পয়লা অক্টোবর গ্রেপ্তার হন জুবিনের ম্যানেজার সিদ্ধার্থ শর্মা ও নর্থ-ইস্ট ফেস্টিভ্যালের আয়োজক শ্যামকানু মহন্ত। ৩ অক্টোবর প্রেপ্তার করা হয় জুবিনের টিমের গায়িকা অমৃতপ্রভ মহন্তকে। তাছাড়াও গ্রেপ্তার হয়েছেন জুবিনের এক কাজিন।

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ