বিএসএফের গুলিতে আহত বাংলাদেশি যুবক
Published: 25th, January 2025 GMT
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার তেলকুপি সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে হাবিল আলী নামে এক বাংলাদেশি যুবক আহত হয়েছেন। আহতের স্বজনের দাবি, শনিবার ভোরে সীমান্তসংলগ্ন জমিতে পানি দেওয়ার সময় হাবিল গুলিবিদ্ধ হন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় কৃষক হাবিল বর্তমানে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। স্থানীয় শাহবাজপুর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য কাসেদ আলী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
রামেক হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানান, গুলিবিদ্ধ হাবিল আলীর অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁর পিঠের ডানপাশে গুলি লেগেছে। গুলিটি এখনও বের করা সম্ভব হয়নি।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে ওয়ার্ড সদস্য কাসেদ আলী বলেন, ভোর সাড়ে ৪টার দিকে কৃষক হাবিল গম ক্ষেতে পানি দিতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হন। স্থানীয়রা ৪/৫ রাউন্ড গুলির শব্দ পেয়েছেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে বিজিবির নির্দেশনা আছে, সন্ধ্যা ৬টার পর থেকে সকাল পর্যন্ত কেউ যেন সীমান্তে না যান। তবু কেন হাবিল সীমান্তে গেলেন, তা জানি না।
আহতের পরিবার ও স্থানীয়দের দাবি, সীমান্তে গুলির ঘটনায় বিজিবি পতাকা বৈঠকে প্রতিবাদ জানাতে গেলে আহত ব্যক্তি একজন চোরাকারবারি বলে জানিয়েছে বিএসএফ। গুলি ছুড়েছে বিএসএফের ১১৯ গোপালনগর ক্যাম্পের সদস্যরা। হাবিল উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নের তেলকুপি লম্বাপাড়া গ্রামের মৃত বেলাল হোসেনের ছেলে।
হাবিলের স্ত্রী তাসলিমা বেগম জানান, ভোর সাড়ে ৪টার দিকে তাঁর স্বামী সীমান্ত এলাকায় থাকা গম ক্ষেতে পানি দিতে গেলে তাঁকে গুলি করে বিএসএফ সদস্যরা। তিনি এ ঘটনায় বিচার দাবি করেন। আহতের ভাই জামাল আলীর দাবি, তাঁর ভাইয়ের বিরুদ্ধে চোরাচালান বা এ-সংক্রান্ত কোনো অভিযোগ নেই।
তবে স্থানীয়রা বলছেন, প্রায় ২০ বছর আগে হাবিলের ভাই আলম আলী চোরাচালান করতে গিয়ে একই সীমান্তে মারা গেছেন। গতকালের ঘটনায় হাবিলের আরও এক সহযোগী আহত হয়েছেন। তবে তাঁর পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে ৫৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল গোলাম কিবরিয়া বলেন, শুক্রবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে আহত ব্যক্তিসহ ছয়-সাতজনের একটি চোরাকারবারি দল সীমান্ত পিলার ১৮০-এর পাশ দিয়ে চোরাচালানের উদ্দেশ্যে ভারতে অনুপ্রবেশ করলে গুলি করে বিএসএফ। এ নিয়ে শনিবার দুপুরে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছে বিজিবি। তবে বিএসএফের পক্ষ থেকে চোরাচালান ও সীমান্তে রাতের বেলা জনসাধারণের আসা বন্ধের দাবি জানানো হয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব এসএফ আহত ব এসএফ র সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
কড়া নজরদারি সুন্দরবন সীমান্তে
দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুন্দরবন জলসীমানা প্রায় দেড়শো কিলোমিটার। ভারতীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, এ সীমানা দিয়ে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বাড়তি তৎপরতা নেওয়া হচ্ছে। খবর আনন্দবাজারের।
খবরে বলা হয়েছে, নদী ও বনভূমি এলাকায় সীমান্ত বরাবর বিএসএফ মোতায়েন আছে। ভাসমান বর্ডার আউটপোস্ট, বঙ্গোপসাগর অংশে কোস্ট গার্ডের নজরদারি চলছে। ড্রোন, সেন্সর ও ক্যামেরা, কিছু জায়গায় নাইট ভিশন ক্যামেরা ব্যবহার করা হচ্ছে। পাশাপাশি, পুলিশের তরফেও উপকূল এলাকায় দিনরাত নজরদারি চলছে।
উপকূল থানাগুলোর পক্ষ থেকে নদীপথে নিয়মিত টহল দেওয়া হচ্ছে। রাতেও উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে নজর রাখা হচ্ছে। নদীপথে কোনো জলযান দেখলেই তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। মৎস্যজীবীদের পরিচয়পত্রও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। নদী বা সমুদ্রে এখন মাছ ধরার উপরে নিষেধাজ্ঞা চলছে। মৎস্যজীবীদের জলযান চলাচল করার কথা নয়। তাই জলযান দেখলেই তল্লাশি চলছে। বাংলাদেশি জাহাজগুলোতেও পুলিশ তল্লাশি চালাচ্ছে।
সুন্দরবন পুলিশ জেলার সুপার কোটেশ্বর রাও নালাভাট বলেন, আগেও উপকূলবর্তী এলাকায় পুলিশের নজরদারি চলত। এখন বাড়তি জোর দেওয়া হচ্ছে। দু’বেলা নদী ও স্থলপথে পুলিশের টহল বৃদ্ধি পেয়েছে। নাকা চেকিং হচ্ছে। চলছে তল্লাশিও।
উত্তর ২৪ পরগনাতেও উপকূল এলাকায় নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। নিরাপত্তা বেড়েছে জল ও স্থলসীমান্তে। জল, ভূমি ও আকাশে অত্যাধুনিক ইজ়রাইল রাডারের মাধ্যমে নজরদারি চালাচ্ছে সীমান্তরক্ষী বাহিনী।
ইতোমধ্যে ভারতীয় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা দফতর জানিয়েছে, বাংলাদেশের আকাশ ব্যবহার করে ভারতকে আক্রমণ করতে পারে সশস্ত্র সংগঠনগুলো। ফলে সুরক্ষা বাড়াতে বিএসএফের তৎপরতা শুরু হয়েছে। বসিরহাট মহকুমার স্বরূপনগর থেকে হিঙ্গলগঞ্জের হেমনগর কোস্টাল থানা পর্যন্ত ৯৪ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে। তার মধ্যে ৫০ কিলোমিটার জলসীমান্ত। স্থলসীমান্ত ৪৪ কিলোমিটার। সীমান্ত সুরক্ষায় অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রের খবর।