‘বড় মেয়ে শাম্মী খুব মেধাবী ছিল। ওর স্বপ্ন ছিল বিসিএস ক্যাডার হয়ে প্রশাসনিক কর্মকর্তা হওয়ার। কিন্তু সব স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে। চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে তাঁর বাড়ি আসার কথা ছিল। বাড়ি সে ফিরল, তবে লাশ হয়ে। সবসময় উচ্ছ্বাস-আনন্দে মেতে থাকা মেয়েটা কেন এমন করল’

কান্নাজড়িত কণ্ঠে কথাগুলো বলছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) নিহত ছাত্রী সাবরিনা রহমান শাম্মীর বাবা জাহিদুর রহমান। 

রোববার রাজধানীর পুরান ঢাকার কাঠেরপুলের তনুগঞ্জ লেনের একটি মেস থেকে শাম্মীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে শাম্মীর গ্রাম যশোরের চৌগাছার নারায়ণপুরে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। 

জাহিদুর রহমান যশোরের কেশবপুর উপজেলার একটি ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা। তিনি বলেন, ‘ছোট বেলা থেকেই মেধাবী ছিল শাম্মী। ওর স্বপ্ন ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার। নিজে পড়তে না পারলেও সেই স্বপ্নটা দেখতে থাকে ছোট বোনকে ঘিরে। কয়েক মাস আগে ছোট বোনকে ঢাকার ফার্মগেট এলাকার একটি কোচিং সেন্টারে ভর্তি করে এবং পাশের একটি মেসে থাকার ব্যবস্থা করে। শনিবার ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা। সেখানে অংশ নেয় ওর ছোট বোন। এর পর তারা দুই বোন ঘোরাঘুরি করে ছোট বোনকে মেসে রেখে আসে। সন্ধ্যায় শাম্মী মেসে ফেরে। তখন ওর সঙ্গে শেষ কথা হয়। ও আমাকে কিছু টাকা দিতে বলে; আমি টাকা পাঠাই। শেষ কথা বলার সময়ও ওর কথাবার্তায় কোনো পরিবর্তন লক্ষ্য করিনি।’
 
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক বলেন, ভোরে ঘটনা শুনে সূত্রাপুর থানায় গিয়েছিলাম। আত্মহত্যার প্রকৃত কারণ জানা যায়নি।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র একট

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ