ভিক্ষা করে জমানো ‘৯৩ হাজার টাকা’ নিয়ে পালালেন প্রতারক
Published: 27th, January 2025 GMT
কুষ্টিয়ায় অগ্রণী ব্যাংকে টাকা জমা করতে গিয়ে নুরজাহান খাতুন (৬৫) নামের এক ভিক্ষুক নারীর সঞ্চয়ের ৯৩ হাজার টাকা নিয়ে পালিয়েছে এক প্রতারক। রবিবার দুপুর ১২টায় প্রকাশ্যে ব্যাংকের ভেতরে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী নুরজাহান খাতুন শহরের বিভিন্ন এলাকায় ভিক্ষাবৃত্তি করেন।
ব্যাংকের সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, রবিবার সকালের দিকে নুরজাহান খাতুন ও তার মেয়ে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শাবানা খাতুন ব্যাংকের ভেতরে গিয়ে টাকা জমা দিলে নতুন ব্যাংক হিসাব নম্বর খুলতে ব্যাংক কর্মকর্তারা কয়েকটি টিপসই নেন। একপর্যায়ে দুপুর ১২টার দিকে এক ব্যক্তি টাকা জমা দিয়ে দেওয়ার কথা বলে ওই বৃদ্ধার কাছ থেকে ৯৩ হাজার টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়। প্রতারকের পরনে ছিল কালো রঙের সোয়েটার, নীল প্যান্ট ও কালো রঙের জুতা।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নুরজাহান খাতুন বলেন, “স্বামীর মৃত্যুর পর থেকেই শহরের হরিশংকরপুর এলাকায় মা-মেয়ে একসঙ্গে থাকি। ভিক্ষাবৃত্তি করে টাকাগুলো গুছিয়ে ছিলাম। রবিবার নতুন ব্যাংক হিসাব খুলে টাকাগুলো রাখার জন্য সকালে ব্যাংকে যাই। এরপর ব্যাংক কর্মকর্তারা কয়েকটি টিপসই নেন। পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ওই প্রতারক জমা দেওয়ার কথা বলে আমার কাছ থেকে ৯৩ হাজার টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়।”
কান্নাজড়িত কণ্ঠে ভুক্তভোগী নারী আরও বলেন, “শেষ সম্বলও নিয়ে গেল প্রতারক। আমি পুলিশ প্রশাসনের কাছে দাবি জানাই, মানুষের কাছ থেকে নেওয়া ভিক্ষাবৃত্তি করে আমার এই গচ্ছিত টাকাগুলো উদ্ধারে কাজ করবেন। এই টাকাগুলো পেলে আমি আমার দৃষ্টি প্রতিবন্ধী মেয়েকে নিয়ে জীবন যাপন করতে পারবো। তাই ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ প্রশাসনের কাছে টাকাগুলো উদ্ধারে সহযোগিতা চাই।”
এ বিষয়ে অগ্রণী ব্যাংকের কুষ্টিয়ার জ্যেষ্ঠ প্রিন্সিপাল অফিসার মো.
এ বিষয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেহাবুর রহমান বলেন, “ভুক্তভোগী নুরজাহান খাতুন থানায় জিডি করেছেন। বিষয়টি তদন্তসহ চোরকে ধরতে পুলিশ কাজ করছে।”
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ইসির ভূমিকা তদন্তে কমিটি গঠন করার নির্দেশ
বিতর্কিত তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনে জড়িত নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশনার ও সচিবালয়ের সচিবদের ভূমিকা তদন্তে অবিলম্বে কমিটি গঠনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের এক বৈঠকে এ-সংক্রান্ত আলোচনা শেষে এমন নির্দেশ দেন প্রধান উপদেষ্টা। পরে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে ।
এই বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, ইফতেখারুজ্জামান, সফররাজ হোসেন ও মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব সিরাজ উদ্দিন মিয়া ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
বৈঠকে নির্বাচন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার বলেন, সব রাজনৈতিক দল একমত হয়েছে যে অতীতের তিনটি বিতর্কিত নির্বাচন আয়োজনে কর্মকর্তাদের ভূমিকা তদন্ত করা এবং তাঁদের জবাবদিহির আওতায় আনা প্রয়োজন।
জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই সনদবৈঠকে কমিশন সদস্যরা জুলাই সনদ তৈরির কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেন। কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, বেশ কিছু বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে। শিগগিরই সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে সনদ চূড়ান্ত করা সম্ভব হবে।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘সবাই জুলাই সনদের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। আশা করি, আগামী জুলাই মাসের মধ্যে আমরা এটি জাতির সামনে উপস্থাপন করতে পারব।’
‘প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে হবে’বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা তাঁর লন্ডন সফরের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন। অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, লন্ডনে বাংলাদেশি কমিউনিটির যাঁদের সঙ্গেই দেখা হয়েছে, তাঁরা সংস্কার নিয়ে জানতে চেয়েছেন। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা খুব আগ্রহী। তাঁরা বিস্তারিতভাবে ঐকমত্য কমিশনের কাজ নিয়ে তাঁর (প্রধান উপদেষ্টা) সঙ্গে আলোচনা করেছেন, মতামত দিয়েছেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘যেখানেই গিয়েছি, সেখানকার প্রবাসী বাংলাদেশিরা আমাকে জিজ্ঞেস করছেন, “আমরা আগামী নির্বাচনে ভোট দিতে পারব তো?” আমাদের প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে। পোস্টাল ব্যালট এবং আর কী কী অপশন আছে, সেগুলো নিয়ে ভাবতে হবে, সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে হবে।’