রেকর্ড ভেঙে ৩৭ বলে ঢাকাকে উড়িয়ে দিলো বরিশাল
Published: 29th, January 2025 GMT
‘বরিশাল-বরিশাল’—’ঢাকা-ঢাকা’, সন্ধ্যায় এমন স্লোগানের গর্জনে কেঁপেছিল মিরপুর শের-ই-বাংলা। ম্যাচ শুরুর পর লিটন দাসের দুই চারে কেঁপে ওঠে গ্যালারি। এটুকুই! এরপর ঢাকা ক্যাপিটালসের ব্যাটারদের আসা-যাওয়ার মিছিলে আসন ছাড়তে থাকেন দর্শকরা। যার শেষটা হয়তো দেখতেই চাননি তারা!
দেখবেনই বা কীভাবে? গাটের পয়সা খরচ করে কি এমন ম্যাচ দেখা যায়? আদৌ এমন টি-টোয়েন্টি দেখা সম্ভব? ব্যাটিং করতে নেমে চলতি আসরের সর্বনিম্ন ৭৩ রানে অলআউট ঢাকা। তাড়া করতে নেমে মাত্র ৩৭ বলে ৯ উইকেটের বিশাল জয় পায় বরিশাল। হাতে ছিল ৮১ বল!
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) এর আগে সর্বোচ্চ ৭৩ বল হাতে রেখে জিতেছিল ঢাকা ডায়নামাইটস। ২০১৭ সালে সিলেট সিক্সার্সের বিপক্ষে ডায়নামাইটসের জয় ছিল ৮ উইকেটে। এবার সেই ঢাকাকেই হারালো মাত্র ৯ উইকেটে।
আরো পড়ুন:
ব্যাটিং বিভীষিকায় সর্বনিম্ন রানে অলআউট ঢাকা
রাসেল-ওয়ার্নার-নারিনসহ পাঁচ বিদেশির সঙ্গে রংপুরের চুক্তি
তাড়া করতে নেমে ঝড়ো শুরু এনে দেন তামিম ইকবাল-তাওহীদ হৃদয়। ১৫ রানে হৃদয় আউট হলে ভাঙে জুটি। এরপর ডেভিড মালান সঙ্গী হন তামিমের। দুজনে মাঠ ছাড়েন ম্যাচ জিতিয়ে। মাত্র ১৬ বলে ৩৭ রান করেন মালান। ১৪ বলে ২১ রানে অপরাজিত ছিলেন তামিম। ঢাকার হয়ে ১টি উইকেট নেন মোস্তাফিজুর রহমান।
বিপিএলের চলতি আসরে নানা বিতর্কের মাঝেও বাইশ গজে ছুটেছে রানের ফোয়ারা। সেই রান উৎসবের উইকেটেও বিভীষিকাময় ব্যাটিংয়ে চলমান আসরে সর্বনিম্ন রানে অলআউট হয় ঢাকা ক্যাপিটালস।
টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে বুধবার (২৯ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় ১৫.
অধিনায়ক থিসারা পেরেরা সর্বোচ্চ ১৫ রান করেন ১১ বলে। ১০ রান করে আসে লিটন দাস-রনসফ বেটনের ব্যাট থেকে। এ ছাড়া আর কোনো ব্যাটার দুই অঙ্কের মুখ দেখেননি।
তানভীর ইসলামের ঘূর্ণিতে লিটন দাসের বোল্ড আউটে পতনের শুরু। অথচ দুই চারে এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার দেখিয়েছিলেন সম্ভাবনা। আশার আলো ফোঁটার আগেই যেন সাজঘরে ফেরেন এই ব্যাটার। এরপর উইকেটের মিছিলে শেষ ব্যাটার হিসেবে আউট হন মেহেদী হাসান রানা। তাও ৪.৪ ওভার বাকি থাকতেই!
বরিশালের হয়ে সর্বোচ্চ ৩টি করে উইকেট নিয়েছেন তানভীর ইসলাম, মোহাম্মদ নবী ও ফাহিম আশরাফ। অপর উইকেটটি নেন জেমস ফুলার।
আগের ম্যাচে চিটাগং কিংসের বিপক্ষে রংপুর রাইডার্সের পরাজয় টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে দেয় ঢাকাকে। নির্ভার হয়ে যেখানে খেলার কথা সেখানে যেন উল্টো চাপে থেকে দিশেহারা ছিল ফ্র্যাঞ্চাইজিটি। এদিকে সর্বোচ্চ ১৮ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে অবস্থান করছে বরিশাল।
ঢাকা/রিয়াদ/আমিনুল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব প এল ব প এল র ন কর উইক ট
এছাড়াও পড়ুন:
সেঞ্চুরির পর ৫ উইকেট, মিরাজ ধন্যবাদ দিলেন ৬ জনকে
এক দিনেই কত কীর্তি গড়লেন মেহেদী হাসান মিরাজ। এরপর তাঁকে ছেড়ে একা আর সংবাদ সম্মেলনে আসতে চাইলেন না অধিনায়ক নাজমুল হোসেন।
মিরাজ পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের পর ফটোগ্রাফারদের আবদার মেটাতে ব্যস্ত বলে কিছুটা অপেক্ষাও করলেন। এরপর মিরাজের তাড়া ছিল নামাজে যাওয়ারও, সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দেওয়া শেষে তাই একরকম দৌড়ে যান ড্রেসিংরুমে।
এর আগে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে গেছেন ছয়জনকে। মিরাজ দিনের শুরুটা করেছিলেন ব্যাটিংয়ে, শেষটা করেছেন বোলিংয়ে। ব্যাটিং, বোলিং মিলিয়ে চট্টগ্রাম টেস্টের তৃতীয় দিনে একটার পর একটা রেকর্ড গড়েছেন মিরাজ।
ব্যাট হাতে সেঞ্চুরি করেছেন, সেঞ্চুরির পথে দুই হাজার রানের মাইলফলক ছুয়েছেন; দুই শ উইকেট আর দুই হাজার রানের কীর্তিতে নাম লিখিয়েছেন সাকিবের পাশে, যদিও ম্যাচ একটি কমও খেলেছেন।
আবার বল হাতে জিম্বাবুয়ের দ্বিতীয় ইনিংসে নিয়েছেন ৫ উইকেট। একই ম্যাচে সেঞ্চুরির সঙ্গে ৫ উইকেটের কীর্তিতে সাকিব আর সোহাগ গাজীর সঙ্গে এখন তাঁর নামও। এত সব কীর্তি গড়ার পর সংবাদ সম্মেলনে এসে মিরাজ বললেন, ‘শুরুতে আমি দুইটা মানুষকে ধন্যবাদ দিতে চাই।’ ওই দুটি ধন্যবাদই ছিল ব্যাটিংয়ের জন্য।
বিসিবির কোচ মিজানুর রহমানকে ধন্যবাদ দিয়েছেন ‘অনেক দিন ধরে কাজ করা’ ব্যাটিংয়ে উন্নতিতে অবদানের জন্য। মিরাজের পরের কৃতজ্ঞতাটা শুনুন তাঁর মুখেই, ‘আমাদের দলের যে ম্যানেজার আছেন, নাফিস ইকবাল ভাই আমাকে সব সময় বুস্টআপ করে। আজকেও যখন ব্যাটিংয়ে যাচ্ছিলাম, বারবার একটা কথা বলছিল, মিরাজ, তুই কিন্তু প্রপার ব্যাটসম্যান, তোর কিন্তু এক শ আছে। দুইটা মানুষকে (মিজান ও নাফিস) অবশ্যই মনের ভেতর থেকে ধন্যবাদ দিতে চাই।’
কিন্তু মিরাজের সব কীর্তি তো আর ব্যাটিংয়ে নয়। বোলিংয়েও ৫ উইকেট পেয়েছেন। সিলেটে আগের ম্যাচে উইকেট পেয়েছিলেন ১০টি। এ কৃতজ্ঞতাও একজনের জন্য রাখলেন মিরাজ, ‘বোলিংটা খুব ভালো হয়েছে। বোলিং তো আমার দলের সঙ্গেই আছে, আমার গুরু যে সোহেল ইসলাম (জাতীয় দলের স্পিন বোলিং কোচ)। অবশ্যই এই তিনটা মানুষকে ধন্যবাদ দিতে চাই।’
ধন্যবাদ দেওয়ার সংখ্যাটা তিনে গিয়েই থামেনি মিরাজের। আজকে যে তিনি সেঞ্চুরিটা পেলেন, তাতে তো অবদান আছে তাঁর সঙ্গীদেরও। তাইজুল ইসলাম ৪৫ বলে ২০, তানজিম হাসান ৮০ বলে ৪১ আর রান না করতে পারলেও হাসান মাহমুদ ১৬ বল খেলেছেন বলেই না সেঞ্চুরি করার সময়টা পেলেন মিরাজ।
একসময় সেঞ্চুরিটাকে ‘কপালের ওপর’ ছেড়ে দেওয়া মিরাজ ধন্যবাদ জানিয়েছেন তাঁদেরও, ‘হাসান অনেক ভালো সমর্থন দিয়েছে, তানজিমও অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে, তাইজুল ভাইও। আমি অবশ্যই এই তিনজনকে ধন্যবাদ দিতে চাই। ওরা যেভাবে আমাকে সমর্থন দিয়েছে, ওদের জন্যই আমি এক শ করতে পেরেছি।’