৩ সেকেন্ডের ভিডিওকাণ্ড, হেরে গেলেন নয়নতারা
Published: 1st, February 2025 GMT
ধানুশের কাছে আইনি লড়াইয়ে হেরে গেলেন নয়নতারা। গত বছর নভেম্বরে নয়নতারার বিরুদ্ধে কপিরাইট আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে মামলা করেছিলেন ধানুশ। যার পরিপ্রেক্ষিতে দক্ষিণ ভারতীয় এই দুই তারকা নেমে পড়েছিলেন আইনি লড়াইয়ে। মাদ্রাজ হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের মধ্য দিয়ে দুই মাসের সেই লড়াইয়ে ফলাফল চলে গেছে অভিনেতা ও প্রযোজক ধানুশের পক্ষে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম থেকে জানা গেছে, লেডি সুপারস্টার-খ্যাত অভিনেত্রী নয়নতারা তাঁর অভিনয় জীবনের সফর নিয়ে একটি ডকুমেন্টারি নির্মাণ করেছিলেন। ‘নয়নতারা: বিয়ন্ড দ্য ফেইরিটেল’ নামের সেই ডকুমেন্টারিতে ধানুশ প্রযোজিত ‘নাম রাউডি ধান’ সিনেমার ৩ সেকেন্ডের ভিডিও ফুটেজ ব্যবহার করা হয়েছিল। কিন্তু ধানুশের অভিযোগ তাঁর কাছে অনুমতি না নিয়েই ‘নাম রাউডি ধান’ সিনেমার ফুটেজ ব্যবহার করেছেন অভিনেত্রী। এতে করে কপিরাইট আইন লঙ্ঘন হয়েছে। তাই আইনজীবীর মাধ্যমে এ বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছিল নয়নতারাকে।
একই সঙ্গে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ডকুমেন্টারি থেকে ধানুশের সিনেমার ফুটেজ সরিয়ে ফেলার আলটিমেটাম দেওয়া হয়েছিল। নইলে ১০ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ দিতে হবে বলেও জানিয়েছিলেন। কিন্তু নয়নতারা সেই আলটিমেটামে কান দেননি।
উল্টো ইনস্টাগ্রামে এক খোলা চিঠিতে ধানুশের এ দাবিকে ‘অত্যন্ত নিচু মানসিকতা’ বলে উল্লেখ করেছিলেন। আর এ বিষয়টি কোনোভাবেই মেনে নিতে পারেননি ধানুশ। অভিনয় জগতের দুই সতীর্থ নয়নতারা ও তাঁর স্বামী ভিগনেশ শিবান এবং তাদের প্রোডাকশন হাউস রাউডি পিকচার্সকেও বিবাদী করে মামলা দায়ের করেছিলেন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: কর ছ ল ন
এছাড়াও পড়ুন:
রাজনীতিকেরা পেশাদার পুলিশ চাননি, এখনই সংস্কার জরুরি
জনগণ প্রভাবমুক্ত ও পেশাদার পুলিশ চাইলেও রাজনৈতিক নেতারা কখনো তা চাননি। ১৯৩০ সাল থেকে দমন করাই ছিল পুলিশের কাজ। এ সংস্কৃতি বদলাতে হবে, পুলিশকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করতে হবে। এ জন্য পুলিশ সংস্কারের এখনই উপযুক্ত সময়।
পুলিশ সপ্তাহ ২০২৫ উপলক্ষে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে পুলিশ অডিটরিয়ামে ‘নাগরিক ভাবনায় জনতার পুলিশ: নিরাপত্তা ও আস্থার বন্ধন’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বিশিষ্ট নাগরিকদের বক্তব্যে এমন মতামত উঠে এসেছে। এ সময় পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, সব মহানগর পুলিশের কমিশনার, রেঞ্জ ডিআইজি ও পুলিশ সুপাররা উপস্থিত ছিলেন।
বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নাগরিকদের সঙ্গে পুলিশ সপ্তাহে এ ধরনের মতবিনিময়ের ভাবনাটি নতুন। পুলিশ-নাগরিক সম্পর্ক কেমন হওয়া উচিত, কেমন পুলিশ তাঁরা চান—এই বিষয়গুলো আরও ভালোভাবে জানার জন্যই এ আয়োজনের উদ্দেশ্য বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়। মতবিনিময় সভায় শিক্ষক, সাংবাদিক, ধর্মীয় নেতা, লেখক, খেলোয়াড়, সংগীতশিল্পী, চলচ্চিত্র নির্মাতা, অর্থনীতিবিদ, সাহিত্যিক, শ্রমিকনেতাসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নাগরিকেরা উপস্থিত ছিলেন।
তিন দিনব্যাপী পুলিশ সপ্তাহের অনুষ্ঠানের শেষ দিনে নাগরিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের আগে সকালে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে আলোচনা অনুষ্ঠানে অংশ নেন পুলিশ কর্মকর্তারা। সর্বশেষ বিকেলে আইজিপির সঙ্গে মাঠপর্যায়ে কর্মরত পুলিশ সুপার থেকে তদূর্ধ্ব কর্মকর্তাদের মতবিনিময় সভা হয়।
নাগরিকদের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে পুলিশের সাবেক দুজন মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বক্তব্য দেন। তাঁদের মধ্যে মোহাম্মদ নুরুল হুদা বলেন, রাজনৈতিক নেতৃত্বের উচিত পুলিশকে স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ দেওয়া। পুলিশকে একটি দানবীয় বাহিনীতে পরিণত করা হয়েছে। পুলিশ সংস্কারের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক সদিচ্ছা সবচেয়ে বেশি দরকার।
নুরুল হুদা আরও বলেন, ১৯৪৭ সালে রাজনীতিবিদেরা সবকিছুর পরিবর্তন করলেন কিন্তু দণ্ডবিধি, ফৌজদারি কার্যবিধি, সাক্ষ্য আইন পরিবর্তন করলেন না। অথচ সেগুলো যুগের দাবি ছিল। এর মানে হলো তখনো রাজনৈতিক সদিচ্ছা ছিল না। তিনি বলেন, ‘এই রাজনৈতিক সদিচ্ছা আমরা একাত্তরেও দেখিনি। আমাদের যে সংবিধান আছে, সেটি অপারেশনাল করতে হলে যেসব রুলস-রেগুলেশনগুলো পরিবর্তন করা দরকার ছিল, সেগুলো আমরা করলাম না। এর মানে আমাদের কথায় বৈপরীত্য রয়ে গেছে। রাজনৈতিক নেতারা পুলিশকে যথাযথভাবে পেশাদার করতে চাননি।’
মতবিনিময় অনুষ্ঠানে মুখ্য আলোচক ছিলেন লেখক ও গবেষক অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান। তিনি বলেন, পুলিশ যে একরকম অদ্ভুত অবস্থায় আছে, তাদের জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েছে, এর কারণ অনুসন্ধানের মতো উদার চিন্তা থাকা উচিত। পুলিশ দলীয় পুলিশ হয়ে যায়, সেটা তো বাহ্যিক। কিন্তু ভেতরে সমস্যা আছে।
অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান আরও বলেন, যাকে রাষ্ট্র বলা হয়, তার একটি শাখা হলো বলপ্রয়োগ। পুলিশ যেহেতু এই বলপ্রয়োগের কাজটি করে, সুতরাং স্বাভাবিকভাবেই তাদের এ কাজটি জনপ্রিয় নয়। তবে পৃথিবীতে এখন পর্যন্ত যত রাষ্ট্র ছিল বা আছে, সব কটিতেই পুলিশ লাগে। পুলিশ কথার মধ্যেই রাষ্ট্র কথাটা লুকিয়ে আছে।
বিচারব্যবস্থার কিছু সমস্যার কথা তুলে ধরে সলিমুল্লাহ খান বলেন, ‘আমাদের যে ফৌজদারি বিচারব্যবস্থা, সেখানে কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করলে সেটা আদালতের হাতে চলে যায়। প্রায়ই আমরা পুলিশের থেকে শুনেছি, আমাদের দেশের ফৌজদারি ব্যবস্থার ওপর নির্ভর করা যায় না। আদালত জামিন দিয়ে দেন, অপরাধী মুক্ত হয়ে যায়। কোনো ক্ষেত্রে নিরপরাধ শাস্তি পায়, অপরাধীরা ছাড়া পেয়ে যায়।’ তিনি আরও বলেন, সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছেন, বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তার করা যাবে না। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্ত থাকা সত্ত্বেও এটা বাস্তবে প্রয়োগ হয় না।
মতবিনিময় সভায় মুখ্য আলোচক ছিলেন লেখক ও গবেষক সলিমুল্লাহ খান। ঢাকা, ১ মে