ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর সঙ্গে ট্রাম্প প্রশাসনের এক দূতের সাক্ষাৎ হয়েছে। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের ৬ বন্দিকে মুক্ত করে দিয়েছে দেশটি।

শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তার বিশেষ দূত রিচার্ড গ্রেনেল সোশাল মিডিয়ায় তাদের মুক্তির খবর প্রকাশ করেছেন। বিশেষজ্ঞরা অপ্রত্যাশিত এ ঘটনাকে যুক্তরাষ্ট্র ও ভেনেজুয়েলার মধ্যে সম্পর্কের বরফ গলার ইঙ্গিত হিসেবে দেখছেন। 

আরো পড়ুন:

যুক্তরাষ্ট্রে জনবহুল এলাকায় বিমান বিধ্বস্ত, হতাহতের শঙ্কা

কুখ্যাত গুয়ানতানামো বন্দিশালা সম্প্রসারণে ট্রাম্পের নির্দেশ, টার্গেট অভিবাসী

গ্রেনেল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে তার অ্যাকাউন্টে বিমানের ভেতর থেকে একটি ছবি পোস্ট করেছেন। যেখানে তাকে কারামুক্ত ৬ জন মার্কিন নাগরিকের সঙ্গে দেখা যায়।

গ্রেনেল পোস্টে লেখেন, ‘আমরা এখন উড্ডয়ন করেছি এবং এই ৬ মার্কিন নাগরিককে নিয়ে দেশে ফিরছি। তারা প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন এবং বারবার তাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।’

ট্রাম্প নিজেও এ ঘটনাকে স্বাগত জানিয়ে এক্সে শেয়ার করা পোস্টে লিখেন, ‘গ্রেনেল ছয় জিম্মিকে ভেনেজুয়েলা থেকে মুক্ত করে দেশে ফিরিয়ে আনছেন।’

ভেনেজুয়েলার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের দূতের সঙ্গে সম্মানজনক আলোচনা হয়েছে।

বিবিসির প্রতিবেদন বলছে, এর আগে হোয়াইট হাউজের তরফে ‘মার্কিন জিম্মিদের’ মুক্তি দিতে ভেনেজুয়েলার প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছিল। সেই সঙ্গে ভেনেজুয়েলার যেসব অপরাধীকে ওয়াশিংটন বিতাড়িত করবে, তাদের গ্রহণ করতে দেশটির সম্মতি চাওয়া হয়।

ভেনেজুয়েলার সরকার জানুয়ারিতে মার্কিনিসহ একদল ‘ভাড়াটে সৈনিক’ আটকের ঘোষণা দেয়।

রয়টার্সের খবর বলছে, ভেনেজুয়েলায় ঠিক কতজন মার্কিন নাগরিক আটক ছিলেন, তা স্পষ্ট নয়। তবে দেশটির কর্মকর্তারা প্রকাশ্যে অন্তত ৯ জনের কথা বলেছেন। মাদুরোর প্রশাসন তাদের অধিকাংশের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদের অভিযোগ এনেছে এবং কয়েকজনকে ‘ভাড়াটে সেনা’ বলে আখ্যায়িত করেছে।

হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট বলেছেন, গ্রেনেলের সফরের মানে এই নয় যে- মাদুরোকে ভেনেজুয়েলার বৈধ নেতা হিসেবে স্বীকৃতি দেবে যুক্তরাষ্ট্র।

ভেনেজুয়েলার বিতর্কিত নির্বাচনের ছয় মাস পর গত মাসে তৃতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন মাদুরো। ওই নির্বাচনে মাদুরো পরাজিত হন বলে দাবি করেছে তার বিরোধীরা এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়।

২০২৪ সালের জুলাই নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক ফল যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ব্যাপকভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

‘কবর’ কবিতার শতবর্ষ পূর্তি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক

পল্লিকবি জসীমউদ্‌দীনের ‘কবর’ কবিতা বাংলা সাহিত্যের এক অবিস্মরণীয় সৃষ্টি। ১৯২৫ সালে লেখা অমর এ কবিতার শতবর্ষ এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। ‘কবর’ কবিতা তৎকালীন সময়ের সমাজের চিত্রকে তুলে ধরেছে।

‘কবর’ কবিতার শতবর্ষ উপলক্ষে প্রকাশিত ‘শতবর্ষে কবর’ গ্রন্থের প্রকাশনা উৎসবে এ কথা বলেন বক্তারা। শনিবার বিকেলে রাজধানীর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের মিলনায়তনে ফরিদপুর সাহিত্য পরিষদ এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

‘শতবর্ষে কবর’ গ্রন্থটি সম্পাদনা করেছেন মফিজ ইমাম মিলন। ৪৮ জন লেখকের লেখা নিয়ে প্রকাশিত এই গ্রন্থ প্রকাশ করেছে নয়নজুলি প্রকাশনাী।

অনুষ্ঠানে অতিথিদের বক্তব্যে উঠে আসে জসীমউদ্‌দীনের অবিস্মরণীয় সৃষ্টি ‘কবর’ কবিতার নানান প্রসঙ্গ। কবিতাটি ১৯২৫ সালে ‘গ্রাম্য কবিতা’ পরিচয়ে প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল কল্লোল পত্রিকার তৃতীয় বর্ষ তৃতীয় সংখ্যায়।

আলোচকেরা বলেন, ‘কবর’ প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই বিপুল সাড়া জাগিয়েছিল। কবিতাটি দীনেশচন্দ্র সেন, অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মনোযোগ আকর্ষণ করেছিল। এমনকি ‘কবর’ পড়ে দীনেশচন্দ্র সেন ‘অ্যান ইয়াং মোহামেডান পোয়েট’ শিরোনামে একটি আলোচনাও লিখেছিলেন ফরওয়ার্ড পত্রিকায়।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তৃতায় শিক্ষা উপদেষ্টা চৌধুরী রফিকুল (সি আর) আববার বলেন, ‘কবর’ কবিতার শত বছর পূর্তির ঘটনা একটা গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। কবিতাটির শতবর্ষ নিয়ে বই প্রকাশ ব্যতিক্রমী প্রয়াস।

এ সময় শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, প্রতিটি শহরে ফরিদপুর সাহিত্য পরিষদের মতো সংগঠন থাকা উচিত। একটা বৃহত্তর পরিবারের মতো কাজ করে তারা। তিনি বলেন, এ ধরনের নাগরিক সমাজ রাষ্ট্রের বাইরে থেকে দেশ ও সমাজ সম্পর্কে ভাবে। এটা বিশাল শক্তি।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ফরিদপুর ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি জালাল আহমেদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কথাসাহিত্যিক আন্দালিব রাশদী, পক্ষিবিশারদ ইনাম আল হক, কথাসাহিত্যিক ফারুক মঈন উদ্দীন। গবেষক, সাংবাদিক ও ফরিদপুর সাহিত্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মফিজ ইমাম মিলনের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন নয়নজুলি প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ আলী খান, অধ্যাপক এম এ সামাদ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের অধ্যক্ষ কাকলী মুখোপাধ্যায়, ডেইলি স্টারের সাহিত্য সম্পাদক ইমরান মাহফুজ প্রমুখ।

‘শতবর্ষে কবর’ গ্রন্থের প্রকাশনা অনুষ্ঠান শুরু হয় ‘কবর’ কবিতা আবৃত্তির মধ্য দিয়ে। স্বাগত বক্তব্য দেন ফরিদপুর সাহিত্য পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক আলতাফ হোসেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ