চট্টগ্রামকে উড়িয়ে বিপিএলের ফাইনালে বরিশাল
Published: 3rd, February 2025 GMT
এলিমিনেটর ম্যাচের মতো প্রথম কোয়ালিফায়ারে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়েছিল চট্টগ্রাম কিংস। ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে ফাইনালের যাওয়ার লড়াইয়ে সেখান থেকে শামীম পাটোয়ারির দুর্দান্ত ইনিংসে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৪৯ রানের লড়াই করার পুঁজি পায় চট্টগ্রাম। কিন্তু তাওহীদ হৃদয়, তামিম ইকবাল ও ডেভিড মালানের ব্যাটে সহজে ওই রান পাড়ি দিয়েছে বরিশাল। ৯ উইকেটে জিতে টানা দু’বার বিপিএলের ফাইনাল নিশ্চিত করেছে।
সোমবার মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে টস হেরে ব্যাট করতে নামে চট্টগ্রাম। ৪ রানে প্রথম, ১৪ রানে দ্বিতীয়, ২৪ রানে তৃতীয় ও ৩৪ রানে চতুর্থ উইকেট হারায় তারা। একে একে সাজঘরে ফিরে যান ওপেনার খাজা নাফি (৪), তিনে নামা গ্রাহাম ক্লার্ক (৬), চারে নামা মোহাম্মদ মিঠুন (১) ও মিডলের পাকিস্তানি ব্যাটার হায়দার আলী (৭)।
ওই বিপর্যয় থেকে জুটি গড়েন অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জয়ী দুই সতীর্থ পারভেজ ইমন ও শামীম হোসেন পাটোয়ারি। তারা পঞ্চম উইকেট জুটিতে ৭৭ রানের জুটি গড়েন। ওই জুটিতে চট্টগ্রাম ১৭০-১৮০ রান পাবে এমনই মনে হচ্ছিল। তবে ওপেনার পারভেজ ৩৬ বলে ৩৬ রান করে ফিরলে চট্টগ্রামের পরিকল্পনায় ছেদ পড়ে। বাঁ-হাতি এই ব্যাটার তিনটি চার ও দুটি ছক্কা মারেন।
শামীম পাটোয়ারি লোয়ারের খালেদ আহমেদকে এক প্রান্তে রেখে তবু লড়ছিলেন। তিনি ৪৭ বলে ৭৯ রানের ইনিংস খেলে ১৯তম ওভারে ফেরেন। তার ব্যাট থেকে নয়টি চারের সঙ্গে ছক্কা আসে চারটি। ১৯তম ওভারে ৪ উইকেট নিয়ে ৩২ বছর বয়সী পাকিস্তানি পেসার আলী খান চট্টগ্রামের রানের চাকা পুরোপুরি আটকে দেন। ৪ ওভারে ২৪ রান দিয়ে ৫ উইকেট নেন তিনি। কাইল মায়ার্স ৪ ওভারে ২৭ রান দিয়ে নেন ২ উইকেট।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
নড়াইলে সরকারি গাছ বিক্রির অভিযোগে চেয়ারম্যানসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা
নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ ইউনিয়নে সড়কের পাশে সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে মামলা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে শাহবাদ ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মশিউর রহমান বাদী হয়ে সদর থানায় মামলাটি করেন।
মামলায় ওই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমানসহ ১৩ জন আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিরা হলেন প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকা ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন ও প্রশিকার গঠিত সংগঠন প্রভাতী যুব সংঘের সভাপতি নড়াইল সদর উপজেলার তুজরডাঙ্গা এলাকার মুজিবুর রহমান, সদস্য একই এলাকার জরিনা বেগম, রজব আলী, মো. আজিবর, মো. ইলিয়াছ, ইমান আলী, মো. ওমর, মো. হায়দার, আবু সাঈদ, মো. এনামুল ও মো. শরিফুল।
এ বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার সকালে নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মামলার এজহারে বাদী অভিযোগ করেছেন, গত ২৯ এপ্রিল নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ বাজার থেকে হাজির বটতলা পর্যন্ত সরকারি রাস্তার জায়গা থেকে গাছ কাটা ও চুরি করে বিক্রির সংবাদ পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান। উপস্থিত হয়ে দেখেন, কাটা গাছবোঝাই একটি ট্রাক এবং নছিমন জব্দ করেছেন নড়াইল সদর উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার দেবাশীষ অধিকারী। তখন ঘটনাস্থলে শ্রমিকদের জিজ্ঞাসাবাদ ও খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, মামলার আসামিরা কোনো ধরনের অনুমতি ছাড়াই খাসজমি থেকে গাছ কেটে বিক্রি করেছেন। এর আগেও একবার তাঁরা ওই জমি থেকে গাছ বিক্রি করেছিলেন। জব্দ করা গাছের লগ, ডালপালা এবং আগে কাটা গাছের অবশিষ্ট ভূমিসংলগ্ন গুঁড়ি পর্যবেক্ষণ করে বোঝা গেছে, ওই স্থান থেকে আনুমানিক পাঁচ লাখ টাকার অধিক গাছ চুরি করে কাটা ও বিক্রি হয়েছে।
প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকার ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন বলেন, ২০০৯ সালে প্রশিকা, ইউনিয়ন পরিষদ ও প্রভাতী যুব সংঘের যৌথ উদ্যোগে একটি চুক্তির মাধ্যমে সড়কের পাশে গাছগুলো রোপণ করেছিল। সে সময় সড়কটি খাস খতিয়ানভুক্ত ছিল না। বর্তমানে তা সরকারের আওতায় পড়ায় গাছ কাটার অনুমতি চেয়ে ইউএনওর কাছে আবেদন করা হয়েছিল, তবে প্রশাসন কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। কিছুদিন আগে ইউপি সদস্য ইব্রাহিম তাঁকে ফোনে জানান, বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালা বিক্রি করতে চান চেয়ারম্যান। বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালাগুলো পড়ে থেকে নষ্ট হবে ভেবে তিনি বিক্রিতে সম্মতি দেন। পরে গাছ কীভাবে বা কারা কেটেছে, তা তিনি জানেন না।
মামলা করার আগে অবৈধভাবে গাছ কাটার অভিযোগের ব্যাপার জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান বলেছিলেন, প্রশিকার সঙ্গে চুক্তির একটি পক্ষ ছিল ইউনিয়ন পরিষদ। সেই হিসেবে গাছ কাটার অনুমতি নিতে ইউএনও বরাবর প্রশিকার আবেদন তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে সুপারিশ করেছিলেন। তবে গাছ কেটেছে প্রশিকা আর তাদের সংগঠন। এখানে চেয়ারম্যান-মেম্বরের কিছু নেই।
নড়াইল সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেবাশীষ অধিকারী বলেন, প্রশিকার চুক্তির সময় সড়কটি ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে ছিল, পরে ২০১৫ সালে এটি খাস খতিয়ানভুক্ত হয়। খাসজমি থেকে গাছ কাটা বেআইনি। এ কারণে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।