‘জুলাই সনদ’ বাস্তবায়নের ওপর নির্ভর করবে নির্বাচন কখন হবে: প্রেস সচিব
Published: 5th, February 2025 GMT
ছয় সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন নিয়ে রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের আলোচনায় ঐকমত্যের ভিত্তিতে যে ‘জুলাই সনদ’ হবে, সেটা বাস্তবায়নের ওপর আগামী জাতীয় নির্বাচনের সময় নির্ভর করবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন ও জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন আজ বুধবার তাদের প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দেওয়ার পর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনার সামনে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন শফিকুল আলম।
সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, রাজনৈতিক দল আগে নির্বাচনের কথা বলছে। সরকারের পক্ষ থেকে কি এমন কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হবে যে এই সংস্কারগুলো করতেই হবে, তারপর নির্বাচন। নাকি পুরোটাই রাজনৈতিক দল বা অন্যদের ওপর ছেড়ে দেওয়া হবে।
জবাবে প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ছয়টি প্রধান সংস্কার কমিশন সংস্কারের যেসব সুপারিশ করেছে, সেগুলো নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য তৈরিতে অন্তর্বর্তী সরকার জাতীয় ঐকমত্য কমিশন করেছে। এই কমিশনের প্রধান হচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা নিজেই। ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক আলী রীয়াজ। বাকি পাঁচটি কমিশনের প্রধানেরা এটার সদস্য। এই ঐকমত্য কমিশন ছয় কমিশনের প্রতিবেদনগুলো নিয়ে দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কথা বলবে, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলবে।
প্রেস সচিব বলেন, ‘এই ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত হবে কতটুকু সংস্কার খুব দ্রুত করতে হবে, কতটুকু পরে করা যাবে, কোনটা করার জন্য কনস্টিটিউশনাল অ্যামেন্ডমেন্ড (সংবিধান সংশোধন) দরকার, আবার কিছু কিছু সংস্কার আছে এটা ইমিডিয়েটলি (তাৎক্ষণিকভাবে) মন্ত্রণালয় করে দিতে পারে, সেটার জন্য আসলে কনস্টিটিউশনাল রিফর্মের প্রয়োজন হয় না, এমনকি রাজনৈতিক দলের সঙ্গেও সেভাবে কথাবার্তা বলার প্রয়োজন না–ও হতে পারে। তবে ওনারা সবার সঙ্গে কথা বলবেন।’
আলোচনার ভিত্তিতে যেসব বিষয়ে মতৈক্য হবে, তাতে রাজনৈতিক দলগুলোসহ সবাই স্বাক্ষর করবে জানিয়ে শফিকুল আলম বলেন, ‘সাইন করার পর যেটা দাঁড়াবে, সেটাই হবে জুলাই চার্টার (জুলাই সনদ)। এই জুলাই চার্টারের বাস্তবায়ন এই সরকার কিছু করবে, পরবর্তী সরকারগুলো এসে করবে, এই বাস্তবায়নের আলোকে নির্ভর করবে নির্বাচনটা কি এ বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে হবে নাকি আগামী বছর জুনের মধ্যে হবে।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে ঐকমত্য না হলে গণভোট ছাড়া উপায় নেই: এবি পার্টি
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে অংশ নিয়ে আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেছেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্যে পৌঁছাতে না পারলে গণভোট ছাড়া উপায় নেই।
জুলাই সনদ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া নিয়ে আজ বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক হয়। বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এবি পার্টির চেয়ারম্যান এ কথা বলেন।
ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে মজিবুর রহমান বলেছেন, ‘সংবিধান পরিবর্তন, সংস্কার, সংশোধন, নতুন করে লেখা বা বাতিলের চূড়ান্ত ক্ষমতা জনগণের। আমরা ঐক্যবদ্ধ মতামতের ভিত্তিতে জুলাই সনদ তৈরি করেছি, হয়তো কয়েকটি বিষয়ে কারও কারও “নোট অব ডিসেন্ট” (দ্বিমত) আছে। কিন্তু চূড়ান্ত কোনটা হবে, তা নির্ধারণের মূল ক্ষমতা জনগণের।’
কমিশনের আজকের প্রস্তাবে জুলাই ঘোষণাপত্রের ২২ নম্বর অনুচ্ছেদকে রেফারেন্স আকারে উল্লেখ করায় কোনো কোনো রাজনৈতিক দল ও নেতা জুলাই ঘোষণাপত্রের বৈধতা নিয়ে মন্তব্য করেন। এ বিষয়ে এবি পার্টির চেয়ারম্যান সাংবাদিকদের বলেন, জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে যাঁরা আজ প্রশ্ন তুলছেন, কাল তাঁরা সংসদে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করবেন এবং এই সনদকে প্রশ্নবিদ্ধ করবেন না, তার নিশ্চয়তা কী?
এবি পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সানী আবদুল হক বলেন, সংবিধানে এটা নেই, ওটা নেই বলে সংবিধান সংস্কার করা যাবে না—এই ধারণা অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষাপরিপন্থী। রাজনৈতিক দলগুলো যদি জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতির প্রশ্নে নিজেদের অবস্থান থেকে নমনীয় না হয়, তবে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পুরো প্রচেষ্টা মুখ থুবড়ে পড়বে।
আশঙ্কা প্রকাশ করে এবি পার্টির এই নেতা বলেন, এমন পরিস্থিতি জাতিকে এক গভীর সংকটের দিকে ঠেলে দেবে। সুতরাং জাতীয় স্বার্থে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা জরুরি; অন্যথায় গণভোট ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।
আরও পড়ুনবর্ধিত মেয়াদের আগেই জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি চূড়ান্ত করতে চায় কমিশন: আলী রীয়াজ৪ ঘণ্টা আগে