সরকারি চিনিকলে বিনিয়োগে আগ্রহী জাপান ও থাইল্যান্ড
Published: 7th, February 2025 GMT
ধারাবাহিকভাবে লোকসান দিয়ে আসা রাষ্ট্রায়ত্ত চিনিকলগুলো যৌথ ব্যবস্থাপনায় চালানোর বিষয়টি নিয়ে ফের আলোচনা শুরু হয়েছে। একসময় এ উদ্যোগ বাস্তবায়নে একটি কনসোর্টিয়াম গঠন করেও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের কারণে পিছিয়ে যায় জাপান, থাইল্যান্ড ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিনিয়োগকারীরা। তবে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর কনসোর্টিয়ামটি যৌথ ব্যবস্থাপনায় চিনিকলগুলো আধুনিকায়ন ও চালাতে ফের আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এ কথা জানিয়ে গত মাসে শিল্প ও অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে ব্যাংককে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস।
চিঠিতে বলা হয়, থাইল্যান্ডের বেসরকারি খাত বাংলাদেশের চিনি ও খাদ্যশিল্পে দীর্ঘদিন ধরে সম্পৃক্ত। এ খাতে তাদের চলমান বিনিয়োগের অংশ হিসেবে জাপান ব্যাংক ফর ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন (জেবিআইসি) ও থাইল্যান্ডের এক্সিম ব্যাংকের অফশোর অর্থায়নে বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের (বিএসএফআইসি) আওতাধীন চিনিকলগুলোর আধুনিকায়নে ২০১৯ সালে যৌথ বিনিয়োগের প্রস্তাব দেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রে থাইল্যান্ডের সুটেক ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি ও জাপানের মারুবেনির প্রযুক্তিগত ও ব্যবস্থাপনা সহায়তা নেওয়ার কথাও উল্লেখ করা হয়।
উদ্যোগটি বাস্তবায়নে বিএসএফআইসি এবং সুটেকের নেতৃত্বে গঠিত কনসোর্টিয়ামের মধ্যে ২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হয়। এরপর সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই)-ভিত্তিক সারাকারা ইন্টারন্যাশনাল, আওয়াদ আল আমরি ও বেদোয়ার যৌথ উদ্যোগে গঠিত কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে যৌথভাবে সেতাবগঞ্জ, রাজশাহী ও মোবারকগঞ্জ চিনিকল পরিচালনায় ২০২১ সালের ২৮ মার্চ একটি পূর্ণাঙ্গ সম্ভাব্যতা যাচাই প্রতিবেদন দেওয়া হয়। এরপর কনসোর্টিয়ামের মধ্যে একটি যৌথ কোম্পানি গঠনের নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়।
সেই অনুযায়ী ২০২১ সালের ৬ জুন উভয় পক্ষের মধ্যে অংশীদারিত্বের আনুপাতিক হারসহ সার্বিক বিষয়ে পর্যালোচনা ও নেগোসিয়েশনপূর্বক সুপারিশ প্রণয়নের জন্য শিল্প মন্ত্রণালয়ের তখনকার অতিরিক্ত সচিবকে (রাষ্ট্রায়ত্ত করপোরেশন) আহ্বায়ক করে ৯ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। এ ক্ষেত্রে সুটেকের প্রাথমিক প্রস্তাবে বিএসএফআইসির আওতায় শতভাগ সরকারি মালিকানাধীন একটি প্রতিষ্ঠান করার কথা বলা হলেও পরে সরকারের সিদ্ধান্তে সরকারি-বেসরকারি যৌথ মালিকাধীন যৌথ কোম্পানি স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: চ ন কল কনস র ট য় ম সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার
রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।
গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।
সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।
ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’